মালয়েশিয়ায় কমছে প্রবাসী শ্রমিকদের নিয়োগ ফি

মালয়েশিয়ায় কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিকসহ অন্যান্য অভিবাসী শ্রমিকদের নিয়োগ ফি কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে শ্রমিকদের স্বাক্ষরিত চুক্তি পুনঃমূল্যায়নের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

সোমবার (৫ জুলাই) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী দাতুক সেরি এম সারাভানান।

গত সপ্তাহে বৈশ্বিক মানবপাচার বিষয়ে বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ‘ট্রাফিকিং ইন পারসনস (টিআইপি)’ শিরোনামে করা সেই প্রতিবেদনে মালয়েশিয়াকে ‘টায়ার থ্রি’ বা গুরুতর অবস্থানে রাখা হয়েছে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মালয়েশিয়ায় প্রবাসী শ্রমিকদের ওপর নির্যাতনের হার আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। প্রবাসী শ্রমিকদের কাছ থেকে নিয়োগ ফি নেয়ার ক্ষেত্রে কোনো নিয়মনীতি মানছে না কর্মক্ষেত্রের কর্তৃপক্ষ।

তাদের যথাযথ পারিশ্রমিক দেয়া ছাড়াই বাধ্যতামূলকভাবে কাজ করানো হচ্ছে এবং কর্মক্ষেত্রে নিয়োগ দেয়ার সময় শ্রমিকদের সঙ্গে যে চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছিল তার শর্তসমূহও মানছেন না অনেক মালিক।

এরপরই সোমবার মালয়েশিয়ার মন্ত্রী সারভানান বলেন, ‘শ্রমিকদের, বিশেষ করে অভিবাসী শ্রমিকদের জোরপূর্বক শ্রমদানে বাধ্য করার অভিযোগ সরকার গুরুত্ব সহকারে দেখছে। শ্রমিক নির্যাতন বন্ধ ও পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটাতে সরকারের ধারাবাহিক তৎপরতা অব্যাহত আছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘অনেক সময় মালিকপক্ষ অভিবাসী শ্রমিকদের কাছ থেকে নিয়োগ ফি নেয়ার ক্ষেত্রে আইন মানছেন না। তারা চাকরি বিষয়ক চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করছেন-এমন অভিযোগও পাওয়া গেছে। বিষয়টি তদন্ত করে অভিবাসী শ্রমিকদের নিয়োগ ফি এবং চাকরির চুক্তি সংক্রান্ত তথ্য খতিয়ে দেখবে সরকার।’

বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, ‘গত মে মাসে অভিবাসী শ্রমিকদের অবস্থা জানতে একটি নতুন মোবাইল অ্যাপ চালু করেছে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়। চালু করার পর মে মাস থেকে জুলাই পর্যন্ত অভিবাসী শ্রমিকদের কাছ থেকে মোট চার হাজার ৬৩৬টি অভিযোগ এসেছে সেই অ্যাপে।

এই অভিযোগসমূহের মধ্যে ইতোমধ্যে মোট তিন হাজার ৫০২টির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার। বাকিগুলোর বিরুদ্ধেও দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

মালয়েশিয়ায় কৃষি খামার ও শিল্প-কারখানাগুলোতে বর্তমানে কাজ করছেন প্রায় ২০ লাখ অভিবাসী শ্রমিক। এদের প্রায় সবাই বাংলাদেশ, ভারত ও নেপাল থেকে এসেছেন।

অভিবাসী এই শ্রমিকরা বর্তমানে মালয়েশিয়ার শ্রমবজারের প্রধান চালিকাশক্তি। পাম তেল থেকে রাবার গ্লাভ প্রস্তুত সব ক্ষেত্রেই শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন তারা।