মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানিতে সব বৈধ এজেন্সির সুযোগ চায় বায়রা

মালয়েশিয়ায় শ্রমবাজার খুললে পুরনো ও নতুন সিন্ডিকেট রুখতে জনশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে শুধু কিছু রিক্রুটিং এজেন্সিকে নয়, বরং বৈধ সব এজেন্সিকে সুযোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে বায়রা সিন্ডেকেট নির্মূল ঐক্যজোট (বিএসএনওজে)। রাজধানীর ইস্কাটন রোডে প্রবাসী কল্যাণ ভনের সামনে আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে এক মানববন্ধনে এই দাবি জানায় বিএসএনওজে।

মানবন্ধনে অংশ নিয়ে বায়রা সিন্ডেকেট নির্মূল ঐক্যজোট (বিএসএনওজে) সদস্যরা বলেন, দুই হাজার প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাত্র ২৫-৩০টি প্রতিষ্ঠানকে কর্মী পাঠানোর অনুমোদনের নামে সিন্ডিকেট তৈরির নীলনকশা করা হচ্ছে। এতে আবার দুর্নীতি হবে। আবার বিদেশে কর্মী পাঠানো বন্ধ হবে। সরকার স্বল্প খরচে কর্মী পাঠানোর কথা বললেও এই সিন্ডিকেট সাড়ে তিন লাখ থেকে ৪ লাখ টাকা করে নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন বক্তারা। তাই সব বৈধ এজেন্সিকে জনশক্তি রপ্তানির সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানান তারা।

বায়রা সিন্ডেকেট নির্মূল ঐক্যজোটের প্রধান সমন্বয়ক শাহাদাৎ হোসেন ভূইয়া বলেন, ‘যদি গুটিকয়েক প্রতিষ্ঠান কর্মী পাঠানোর সুযোগ পায় তাহলে বৈধ লাইসেন্সধারী অন্য এজেন্সিগুলোর প্রতি অবিবেচনা করা হবে। আমরা মনে করি বৈধ লাইসেন্সধারী সবাইকে বৈধভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে।’

আগামীকাল (মঙ্গলবার) মালয়েশিয়ার সঙ্গে জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটির নির্ধারিত বৈঠকের কথা উল্লেখ করে শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ‘সেই জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটির এজেন্ডায় আছে (এফডাব্লিউসিএমএস) পরিত্যক্ত সিস্টেমটা আবার চালু করা। কিন্তু এফডাব্লিউসিএমএস-এর সঙ্গে এসপিবিএ জড়িত। এসপিবিএ মানেই হচ্ছে সেই ১০ প্রতিষ্ঠানের সিন্ডিকেট, যারা কর্মী পাঠানোর জন্য এই সিন্ডিকেট তৈরি করে পুরো বিষয়টা নিয়ন্ত্রণ করছে। আবার ১০ প্রতিষ্ঠানের সিন্ডিকেটে এখন যুক্ত হচ্ছে ২৫ জন। এই ২৫ জন মিলে সিন্ডিকেট করতে চাচ্ছেন। এই সিন্ডিকেট আমরা বায়রার সদস্যরা মেনে নিতে পারি না। আমরা মানব না।’ এর বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন হবে বলে হুঁশিয়ার করেন তিনি।

বৈধ যেসব রিক্রুটিং এজেন্সি আছে তাদের মালয়েশিয়াসহ সব দেশের ব্যবসা করার জন্য সুযোগ দেওয়ার দাবি জানিয়ে বায়রা সিন্ডেকেট নির্মূল ঐক্যজোটের প্রধান সমন্বয়ক বলেন, ‘আমাদের ২০১৩ মাইগ্রেশন অ্যাক্ট অনুযায়ী বলা আছে সব মুক্ত দেশে লাইসেন্সপ্রাপ্ত সব রিক্রুটিং এজেন্সি ব্যবসা করতে পারবে।’

আগামীকাল প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী ও জয়েন্ট ওয়ার্কিং কমিটির সঙ্গে মালয়েশিয়ার যে ভার্চুয়াল মিটিং রয়েছে সেখানের ১ নম্বর এজেন্ডা নিয়ে শঙ্কার কথা জানান শাহাদাৎ হোসেন। বলেন, ‘এক নম্বার এজেন্ডায় আছে যে, কতজন রিক্রুটিং প্রতিষ্ঠান কর্মী পাঠানোর জন্য কাজ করবে। আমরা চাই সবাই কর্মী পাঠানোর সুযোগ পাক। সাংবাদিকদের মাধ্যমে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে এই এজেন্ডা বাদ দেওয়ার জন্য আহবান জানাই।’ তিনি বলেন, ‘এমইউতে আমাদের আপত্তি নাই। কিন্তু আমাদের আপত্তি কিছুসংখ্যক এজন্সিকে অনুমতি দেওয়ার পরিকল্পনায়। দেশে প্রায় ১৮০০ বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সি আছে, তারা সবাই যেন কাজ করার সুযোগ পায়।’

মানববন্ধন শেষে জোটের পক্ষ থেকে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রীকে তাদের দাবিনামা সম্বলিত স্মারকলিপি দেওয়া হয়। দাবি মানা না হলে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রীর কার্যালয় ও মন্ত্রণালয় ঘেরা এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উদ্দেশে পথযাত্রার করার ঘোষণা দেওয়া হয়।