সিঙ্গাপুরে এক প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিকের ক’ষ্টের গল্প ভা’ইরাল

এশিয়া মহাদেশের অন্যতম ছোট দ্বীপ রাষ্ট্র সিঙ্গাপুরে এক প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিকের ক’ষ্টের জীবনের গল্প ভা;ইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। সিঙ্গাপুরি এক নাগরিক ফ্যাবিয়ান তার নিজের ফেসবুক পোস্টে বাংলাদেশি শ্রমিকের জীবনের কষ্টের কথা তুলে ধরেছেন। পাশাপাশি সম্মান জানিয়েছেন সিঙ্গাপুরে কর্মরত সকল বাংলাদেশি প্রবাসী শ্রমিকদের।

ফ্যাবিয়ানের পোস্ট থেকে জানা যায়, আনোয়ার নিজের যন্ত্রপাতির বাক্স এবং একটি রোলার নিয়ে ফ্যাবিয়ানের বাসার সামনে হাজির হন। ফ্যা;বিয়ান অবাক হয়ে শোনেন, বাংলাদেশি এই প্রবাসী ভারী য;ন্ত্রপা;তি নিয়ে গণপরিবহনে তার বাসায় এসেছেন। বাসাটি এমন জায়গায় যেখানে আসতে কিছুটা হাঁটতেও হয়!

আনোয়ার দরজার সামনে এসে বুঝতে পারেন, যে রোলার তিনি এনেছেন তা ভেতরে ঢুকবে না; অনেক বড়। দুঃখ প্রকাশ করে তিনি ফ্যাবিয়ানকে কথা দেন, দ্রুত উপযুক্ত রোলার নিয়ে হাজির হবেন।

ফ্যাবিয়ান ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আমি প্রায় চার ঘণ্টা অপেক্ষা করি। ডিনারের পরিকল্পনা ছিল, সেটি বাতিল করি। বসে বসে ভাবছিলাম, লোকটা কত কষ্টই-না করছেন।’

এরপর আনোয়ার ফিরে আসেন, তবে খালি হাতে! সারাদিন খুঁজেও উপযুক্ত সাইজের রোলার তিনি পাননি। ফ্যাবিয়ান সব শুনে ৫০ ডলার দিয়ে বলেন, আরও খুঁজতে থাকুন। পেলে কাল আবার আসবেন।

আনোয়ার শুক্রবার ঠিকই রোলার পেয়ে যান। সেটি দিয়ে মাত্র ২০ মিনিটে জানালা ঠিক করে দেন।

কাজ করার সময় আনোয়ারের সঙ্গে কথা হয় ফ্যাবিয়ানের। তিনি জানতে পারেন, বাংলাদেশি এই শ্রমিকের দুই ছেলের পাশাপাশি ১৪ বছরের এক মেয়ে আছে দেশে। গাড়ি দু’র্ঘ’ট’নায় মেয়েটির ডানপাশ অবশ।

ফ্যাবিয়ান বলেন, ‘আনোয়ার তার সমস্যার কথা আমাকে বলেছেন। শুনলাম একটি পাবের পারিশ্রমিক পাওনা আছে, তারা দিচ্ছে না। আমাদের বাংলাদেশি ভাইদের জন্য সিঙ্গাপুরে কাজ করা দিন দিন কঠিন হয়ে যাচ্ছে। আমি কখনোই তার জায়গায় নিজেকে কল্পনা করতে পারছি না। তাদের জন্য সম্মান ছাড়া আমার আর কিছুই নেই।’

আনোয়ার ফেরার আগে ফ্যাবিয়ান কফি তৈরি করে খাওয়ান। চুক্তির চেয়ে দ্বিগুণ পারিশ্রমিক দেন। ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া পোস্টে ফ্যাবিয়ান লিখেছেন, ‘দ্বিগুণ অর্থ পেয়ে তিনি প্রায় কেঁ’দেই ফেলেন। চোখ ফে’টে’ছে আমারও।’

ফ্যাবিয়ান আনোয়ারের সঙ্গে একটি ছবি ফেসবুকে শেয়ার করেন। সেটি ভাইরাল হওয়ার পর ডিলিট করে আনোয়ারের মুখ ঢেকে আরেকটি ছবি পোস্ট করেন। এ ফ্যাবিয়ান শুধু আনোয়ারকে ধন্যবাদ দিয়েই থামেননি।

তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সকল বাংলাদেশি শ্রমিকের প্রতি জানান, ‘ধন্যবাদ আনোয়ার। ধন্যবাদ আমাদের বাংলাদেশি ভাইদের আমাদের বাড়ি তৈরি করার জন্য, শহর দেখভালের জন্য।’