খাওয়ানোর উপলক্ষ নিয়ে ‘টালবাহানা’, সমালোচিত ইউপি চেয়ারম্যান

আয়োজন ছিলো রাজনৈতিক মতবিনিময় সভার। তবে সেটাকে মিলাদের দোয়া বলে গ্রামবাসীকে দাওয়াত করেছিলেন ঢাকার ধাম’রাইয়ের গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের মোল্লা। মিলাদের দাওয়াত খেতে এসে রাজনৈতিক সভার কথা শুনে চেয়ারম্যানের দাওয়াতকে ‘বাহানা’ বলে মন্তব্য করে সমালোচনা করেছেন স্থানীয়রা।

আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের নিয়ে শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) ঢাকার ধাম’রাইয়ের গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন ধাম’রাইয়ের সংসদ সদস্য ও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজির আহমেদ।

সভায় নিজের পক্ষে জনসমাগম দেখাতে চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের মোল্লা অবলম্বন করেছেন অভিনব এক পন্থা। তবে এনিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ইউনিয়ন পরিষদের মাঠে সামিয়ানা টাঙ্গিয়ে সারি সারি চুলা বানিয়ে সেখানে খিচুড়ি রান্না করছেন বাবুর্চিরা। রান্না শেষে সেসব ড্যাগ রাখা হচ্ছে পাশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে। সেখানেই পেতে রাখা চেয়ারে বসে খাবার খাচ্ছেন মিলাদে আগতরা। তবে খাওয়া শেষ করে ফিরে যেতে চাইলেই লোকজনকে জানানো হয় সভাস্থলে যেতে হবে আগে। এনিয়ে বিরক্তি জানিয়েছেন কয়েকজন এলাকাবাসী।

ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন বারবাড়িয়া মসজিদ থেকে নামাজ পড়ে বেরিয়েছিলেন সাকিব হোসেন নামে এক ব্যক্তি। পরে তাকে মিলাদের খাবার খেতে ডাকেন খাবারের তদারকিতে থাকা সাবেক ইউপি মেম্বার আলমগীর মেম্বার।

এরকম করে মিলাদের খাবারের ডাক পান ওই মসজিদের মুসল্লি আলমগীর, রুবেল, নজরুলসহ অনেকেই। তবে খাওয়া শেষে বাড়ি ফিরতে গেলেই সেখানে তদারকিতে থাকা ব্যক্তিরা তাদেরকে সভাস্থলে যাওয়ার জন্য বলেন। এনিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে সভায় যেতে অস্বীকৃতি জানান তারা।

সাকিব হোসেন বলেন, মসজিদ থেকে বের হওয়ার পর মিলাদের খাবার খেতে ডাকেন একজন। সেখানে চেয়ারে বসে খেয়েছি। পরে যখন চলে যাচ্ছি তখন বলা হয় আগে সভায় যেতে হবে। কিন্তু আমিতো কোন দলীয় সভায় যাবার জন্য খাইনি। একই ধরণের কথা জানিয়েছেন বাকীরাও।

নজরুল ইসলাম নামে আরেক ব্যক্তি বলেন, ‘মিলাদের কথা কইছে দেইখা খাইছি। নাইলে খাইতাম না। মিটিংয়ে যামু কেন আমি। এরকম বাহানা হ্যায় করলো কেন।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল কাদের মোল্লা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে এই আয়োজন করা হয়েছিলো। সেখানে আমার অর্থায়নে ৬৫ ড্যাগ খিচুড়ি রান্না করা হয়েছে। প্রায় সাড়ে ৭ হাজার মানুষকে খাইয়েছি আমি।’

মিলাদের কথা বলে সভায় নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কাউরে জুর করি নাই। সবাইরেই খাওয়াইছি। যে যাইব্যার গেছে। নাইলে নাই।’