মার্কিনীদের কানাডার নাগরিক হওয়ার প্রবণতা বেড়েছে

সারা বিশ্বে রয়েছে কানাডার জনপ্রিয়তা। সাম্প্রতিককালে মার্কিনীদের মধ্য যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব ছেড়ে কানাডার নাগরিক

হওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। বিশেষ করে ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর মার্কিন নাগরিকত্ব ছেড়ে কানাডায় স্থায়ীভাবে বসবাসে আবেদনের সংখ্যা বাড়তে শুরু করে।

কানাডার ২০১৫ সালের তুলনায় ২০২০ সালের প্রথম আট মাসে আবেদনের সংখ্যা বেড়ে যায় দুই হাজার। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে কানাডায় স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য আবেদন করেছিলেন ৬ হাজার ৮০০ জন।

২০১৬ সালে সেটি হলো ৭ হাজার ৭০০ এর বেশি। ২০১৭ সালে আর একটু বেড়ে হয়েছে ৯ হাজারে। আর ২০২০ সালের আগস্ট পর্যন্ত মার্কিন নাগরিকত্ব ছেড়ে কানাডায় আসার জন্য আবেদন করেছেন ৮ হাজার ৭০০ জন।

আয়তনের দিক থেকে কানাডা ৯ হাজার ৯৮৫ মিলিয়ন বর্গকিলোমিটার হলেও জনসংখ্যা মাত্র ৩৬ মিলিয়ন। যার রয়েছে ১০টি প্রভিন্স এবং ৩টি টেরিটরি।

১৯৭১ সালে কানাডাই বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে ঘোষণা দেয় মাল্টি কালচারিজমের, যার মূলমন্ত্র হলো সব নাগরিকের থাকবে সমান অধিকার ও দায়িত্ব। যার ফলে এ পর্যন্ত ১৭ মিলিয়নের বেশি লোক অভিবাসী হয়ে দেশটিতে এসে স্থায়ীভাবে বসবাস করছে। কানাডা শান্তি রক্ষায় সব সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।

ইমিগ্রেশন সংস্থার হিসাব অনুযায়ী প্রতিবছর প্রায় আড়াই লাখ অভিবাসনপ্রত্যাশী পাড়ি দেয় কানাডায়। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, কানাডার বিচার ব্যবস্থা, নির্বাচনী প্রক্রিয়া, শিক্ষা ব্যবস্থা, চিকিৎসা যোগাযোগ ব্যবস্থা, জীবনের নিরাপত্তা, স্থিতিশীল অর্থনীতি, শক্তিশালী ব্যাংকিং ব্যবস্থার কারণে দেশ হিসেবে বিশ্বের সবার কাছে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে।

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে কানাডায় ইমিগ্রেশন নেয়ার অনেকগুলো কারণ রয়েছে। যেমন পরিবারের জন্য আরও ভাল

ভবিষ্যত তৈরি করা, একটি ভালো কাজের-জীবন ভারসাম্য তৈরি করা, পড়াশোনা আরও বাড়ানো বা কেবল শহর জীবনের ঝামেলা থেকে বাঁচার জন্য। বিশ্বের অন্যান্য দেশ থেকে পাড়ি জমানোর চেয়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে কানাডা যাওয়া অনেক সহজ।

কানাডার ক্যালগেরির বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আব্দুল্লা রফিক বলেন, বসবাসের জন্য কানাডা একটি চমৎকার জায়গা যা সারা পৃথিবীতে স্বীকৃতl পৃথিবী নামক গ্রহের এমন কোনো দেশ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর যেখান থেকে মানুষ কানাডাতে এসে আবাস

গড়েনিl সর্বত্র মাল্টিকালচারের প্রভাব দৃশ্যমানl মার্কিন নাগরিকদের স্থায়ীভাবে বসবাসের কানাডায় আসার অনেকগুলো কারণের মধ্যে সরকারের ব্যবসাবান্ধব নীতি, সহজ ওয়ান স্টপ সার্ভিস উল্লেখযোগ্যl

উন্নয়ন গবেষক ও সমাজতাত্ত্বিক বিশ্লেষক মাহমুদ হাসান অভিমত প্রকাশ করে বলেন, ট্রাম্প সরকারের শুরু থেকেই বহুজাতিক সংস্কৃতির প্রতি তার বিরূপ সমালোচনা এবং ধর্মনিরপেক্ষতা ও বিভিন্ন ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রতি তার আক্রমণাত্মক মনোভাব মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী অনেক শান্তিপ্রিয় মানুষের মনে হতাশা তৈরি করে।

সেই সঙ্গে ইমিগ্র্যান্টদের প্রতি তার বৈষম্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গি, মেডিকেলসহ চিকিৎসা বীমায় সরকারি সহায়তার ক্ষেত্রে নানাবিধ শর্তারোপ, বর্ণবাদী ধারার উত্থান বিরাট সংখ্যক জনগোষ্ঠীর মনে বিকল্প অনুসন্ধানের সুযোগ তৈরি করে।