সিঙ্গাপুরে ১৮৯ বাংলাদেশি করোনায় আক্রান্ত

সিঙ্গাপুরে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার প্রবাসী চিন্তিত। সর্বশেষ মঙ্গলবার (৭ এপ্রিল) দেশটিতে ৪৭ বাংলাদেশি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া গত ৪ এপ্রিল ২৬, ৫ এপ্রিল ৪৩, ৬ এপ্রিল ২৫ প্রবাসী বাংলাদেশি করোনায় আক্রান্ত হন৷ সব মিলিয়ে সিঙ্গাপুরে করোনায় আক্রান্ত প্রবাসী বাংলাদেশির সংখ্যা ১৮৯।

করোনায় আক্রান্ত এমন ১০ জনের সঙ্গে কথা বললে একজন জানান, ‘২৫ মার্চ কয়েকজনের সঙ্গে কাজ করেছিলাম৷ বাসায় ফেরার পর জ্বর অনুভব করি। ২৬ মার্চ শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়। তাই অফিসে রেস্ট নেয়ার কথা জানাই। অফিস থেকে বলা হয় বিশ্রাম নেয়ার জন্য। আমি ডাক্তারের কাছে না গিয়ে জ্বরের ট্যাবলেট খেয়ে বাসায় ঘুমিয়ে থাকি৷ বিকেলে সুস্থবোধ করি৷

কিন্তু ২৭ তারিখ সকালে আবারও জ্বর আসে৷ বসকে বলে ছুটি বাড়িয়ে বাসায় বিশ্রাম নেই। বিকেলের দিকে ডাক্তারের কাছে গেলে ডাক্তার ওষুধ দেয়। ওষুধ খেয়ে সুস্থবোধ করি। তার দুইদিন পর আমার রুমের একজন সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত হয়। সে ডাক্তার দেখালে ডাক্তার তার করোনা ভাইরাস পরীক্ষা করে পজিটিভ পায়।

সে করোনায় পজিটিভ শুনে আমরা সবাই ভয় পেয়ে যাই। ২ এপ্রিল রুমের সবার টেস্ট করা হয় এবং সবাই করোনায় পজিটিভ হয়৷’

‘এখন খুব আফসোস হচ্ছে আমার জন্যই রুমের সবার মাঝে করোনা ছড়িয়েছে। আমি যদি প্রথম দিন ডাক্তারকে বলতাম করোনা ভাইরাস টেস্ট করার জন্য তাহলে হয়ত রুমের অন্যরা নিরাপদ থাকত।’

হঠাৎ অভিবাসীদের করোনায় আক্রান্তের কারণ জানতে ২২টি ডরমিটরিতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেশিরভাগ ডরমিটরির অবস্থা অস্বাস্থ্যকর। কর্তৃপক্ষ সেগুলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্নের কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। কিছু কিছু ডরমিটরিতে যৌথ ওয়াশরুম, কিচেন এমনকি যৌথ ডাইনিং টেবিল ব্যবহার করতে হয়। এসব জায়গায় কোনো কারণে একজন আক্রান্ত হলে খুব সহজেই অন্যদের মাঝে তা ছড়িয়ে পড়ছে।

বিশেষ করে স্বাস্থ্য সম্মত থাকার জায়গা নিশ্চিতকরণ, থাকার জায়গা থেকে কাজের জায়গায় নিরাপদে যাতায়াত ব্যবস্থা এবং শ্রমিকদের সময়ের মূল্যায়ন নিশ্চিতকরণ। এ তিন ব্যাপারে সরকার যতদিন পর্যন্ত সঠিক সিদ্ধান্ত না নিতে পারবে ততদিন পর্যন্ত প্রবাসীদের সমস্যার সমাধান হবে না।