রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেওয়া ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী তরিকুলের ওপর ছাত্রলীগের সশস্ত্র (হাতুড়ি) হামলার এক বছর অতিক্রম হয়েছে। ওই দিনের হামলায় হাতুড়ির আঘাতে ভেঙ্গে যায় তার পা ও কোমড়ের হাড়।
এরপর তিনবার অস্ত্রপচার করা হয়েছে। তবে এখনও স্বাভাবিকভাবে হাটতে পারছেনা তরিকুল। এদিকে ঘটনার এক বছর পার হলেও ধরা ছোঁয়ার বাইরে হামলাকারীরা। নেওয়া হয়নি বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও কোন ব্যবস্থা।তরিকুল ইসলাম বলছিলেন, তিনবার অস্ত্রপচার করা হয়েছে তবে এখনও ক্রেচে ভর দিয়ে দাঁড়াতে হয়, বেশিক্ষণ বসে থাকতে পারি না, পায়ের অবস্থা ভালোও নয়।
ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, প্রকাশ্যে হামলার ঘটনার এক বছর পূর্ণ হয়েছে আজ। প্রশাসনকে অভিযোগ দেওয়া হলেও তারা ব্যবস্থা নিতে পারেনি। মারধরের ভিডিও ফুটেজে জড়িত পরিচয় স্পষ্ট হওয়া সত্বেও একবছরেও কোন ধরনের ব্যবস্থা নিতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুতই আইনগত ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান তিনি।
এদিকে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দেয়া হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমান বলেন, এক বছর আগের কথা। অভিযোগটি কার কাছে দিয়েছে তা আমার জানা নেই। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অভিযোগটা খুঁজে দেখতে হবে।
এদিকে ঘটনার এক বছর পার হলেও ঘটনার সাথে জড়িতদের শাস্তির আওতায় না আনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ রাবি শাখা। এছাড়া অতিদ্রুত হামলাকারীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।মঙ্গলবার দুপুরে সংগঠনটির আহ্বায়ক মাসুদ মোন্নাফ ও যুগ্ম-আহ্বায়ক মুরশিদুল স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।
সেখানে উল্লেখ করা হয়, কোটা বৈষম্য কমিয়ে আনার লক্ষ্যে ২০১৮ সালে ফেব্রুয়ারিতে সারা দেশে কোটা আন্দোলন শুরু হয়। সারাদেশের ন্যায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও আন্দোলনে অংশ নেয়। গতবছরের ২ জুলাই পূর্বঘোষিত কর্মসূচি পতাকা মিছিল সফল করতে গেলে রাবি প্রধান ফটকের সামনে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে প্রকাশ্যে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রলীগ। হাতুড়ি দিয়ে মেরুদন্ড ভেঙ্গে দেয় রাবি শিক্ষার্থী তরিকুলের। গুরুতর আহত তরিকুল এক বছর যাবৎ চিকিৎসা নিলেও পুরোপুরি সুস্থ হতে পারেনি