‘গণফোরাম সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষনেতা ড. কামাল হোসেন আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করেছে অর্থাৎ আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনার জন্য নির্বাচনে তিনি কাজ করেছেন’; গতকাল সংসদে দেয়া সাবেক স্বাস্থ্য মন্ত্রী মোহাম্মাদ নাসিমের এমন বক্তব্য উল্লেখ করে বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান ও কৃষকদলের আহ্বায়ক শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, ‘নাসিম সাহেব আসলে কি বলতে চেয়েছে? যারা আওয়ামী লীগ করেছে বা মুজিব কোট পরেছে তারা সারা জীবন আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকবে? নাকি এটা বোঝাতে চেয়েছেন যে, আওয়ামী লীগ যেখানেই যাক না কেন তাকে বিশ্বাস ও আস্থা রাখা যায় না।’
তিনি বলেন, ‘মোহাম্মদ নাসিম সাহেব আপনি কোনটা বোঝাতে চেয়েছেন? ড. কামাল আওয়ামী লীগ করার কারণে যদি অবিশ্বস্ত হয়ে থাকে, তাহলে আপনিতো প্রথম শ্রেণীর গাদ্দার। গাদ্দারদের ফ্যাক্টরিতো আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের সঙ্গে সব সময় গাদ্দারি করেছে। স্বাধীনতা যুদ্ধের যে সংগ্রাম তার সঙ্গে গাদ্দারি করেছে। এটা কি আপনি বুঝতে পেরেছেন কি কথা বলেছেন জাতির সামনে।’
বুধবার (২৬ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবে জিয়া আদর্শ একাডেমী নামক একটি সংগঠন আয়োজিত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া এবং দলটির যুগ্ম মহাসচিব হাবিবুন নবী খান সোহেলের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় প্রধান বক্তার আলোচনায় এসব কথা বলেন তিনি।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘ড. কামাল না, বিএনপি না, ২০ দল না, দেশবাসী প্রধানমন্ত্রীর কথা বিশ্বাস করেছিলেন একটি ভালো নির্বাচন হবে। প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন যিনি তিনি বলেছিলেন নির্বাচনের মধ্যে আর কাউকে গ্রেফতার করা হবে না। সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন হবে। কিন্তু তিনি তার কথা রাখে নাই। আওয়ামী লীগ কখনোই কথা রাখে না। কথা দিলে ঠিক তার উল্টো কাজটা করে। আওয়ামী লীগের ৭০ বছর যদি বিশ্লেষণ করেন তাহলে দেখবেন কথা রাখার দল আওয়ামী লীগ না।’
শেখ পরিবার ছাড়া বাংলাদেশে কেউ নিরাপদে নেই মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘শেখ পরিবার, জিয়া পরিবার, তাজউদ্দীন পরিবার এভাবে তো আমরা ভাবি। জিয়া পরিবারের দেশের সবচাইতে লাঞ্ছনার শিকার হচ্ছে। আর তাজউদ্দীন পরিবারের সোহেল তাজ তিনি তো প্রতিদিনই ফেসবুকে এসে বলতেন বাঁচান বাঁচান আমার ভাগ্নেকে বাঁচান। শুধু তাজউদ্দিন ছেলের ভাগ্নে বলে সে ফেরত এসেছে। এছাড়া শেখ পরিবার ছাড়া আর তাজউদ্দীন পরিবারের কিঞ্চিৎ ছাড়া আর কেউ নিরাপদ নয়।’
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ‘সময় ঘনিয়ে আসছে স্বৈরাচারকে পতন করতে হবে। রাজনীতিটা শেষ হয়ে যাচ্ছে চারদিকে, অবৈধদের উত্থান হচ্ছে জয় গান হচ্ছে। এখন আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’
দুদু ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমাদের অক্ষমতার কারণে, রাজনীতির ভুল সিদ্ধান্তের কারণে অথবা দৃঢ়তার অভাবে আমাদের নেত্রীকে আমরা এখনো বের করতে পারি নাই। নেত্রীকে মুক্ত করা, গণতন্ত্রকে মুক্ত করা, স্বাধীনতাকে মুক্ত করা বাংলাদেশের রাজনীতিকে পুন:সংস্কারণ করা। সেই জন্য প্রধান কাজ হচ্ছে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা আর আমাদের নেতা তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনা। এ দুটি কাজ যদি আমরা করতে পারি দেশে পরিপূর্ণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। মানুষ নিরাপদে বসবাস করতে পারবে।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি আজম খানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। এছাড়া আরও বক্তব্য দেন দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, তথ্য বিষয়ক সহ সম্পাদক কাদের গনি চৌধুরী, কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সদস্য কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন, এম জাহাঙ্গীর আলম, জাতীয়তাবাদী চালক দলের সভাপতি জসিম উদ্দিন কবির প্রমুখ বক্তব্য দেন।
ব্রেকিংনিউজ