অবিলম্বে মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবি বিএনপির

৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যে পার্লামেন্ট গঠন করা হয়েছে সেই পার্লামেন্ট জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে না। রাতের অন্ধকারে ভোট ডাকাতির মধ্য দিয়ে যে সরকার গঠন হয়েছে, সেই সরকার জনগণের সরকার বলে কিছুতেই প্রমাণিত হয় না। তাই নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় সরকারের মাধ্যমে অবিলম্বে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিতে হবে।

জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে ও ডিইউজে আয়োজিত ইফতার ও দোয়া মাহফিলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ দাবি জানিয়েছেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে সর্বমহলে যে দাবিটা উঠেছে, ৩০ ডিসেম্বর কোনও নির্বাচনই হয়নি। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে মানুষের ভোট দখল করে নেয়া হয়েছে। ভোটকে জিম্মি করা হয়েছে। ভোটের আগের রাতেই নির্বাচন শেষ করে ফেলা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন কোনও স্বাধীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নয়। সম্পূর্ণভাবে পরনির্ভরশীল স্বৈরাচারি ফ্যাসিস্ট সরকারের কবলে পড়ে একটা একনায়কতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। এটা শুধু আমাদের কথা নয়, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হয়েছে। বাংলাদেশ বিশ্বে একনায়কতান্ত্রিক দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা যে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ অর্জন করেছিলাম তা একে একে দলীয়করণ করতে শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা দলীয়করণ করা হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীদের নিজেদের মতো করে ব্যবহার করছে। দেশের অর্থনীতির ওপরে তারা সম্পূর্ণ লুটের রাজত্ব কায়েম করেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সন্দেহ হয়, এদেশের সরকার বলে কিছু আছে কিনা। কারণ এখন আর কোনও জবাবদিহিতা নেই। জবাবদিহিতা নেই বলেই যে যার মতো এই দেশকে লুট করছে। আজকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের দায়িত্ব পালন করছে না। বিচার বিভাগ তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারছে না। শিক্ষক তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারছে না। চিকিৎসক তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারছে না। সবখানে একটা অস্বস্তিকর ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই অবস্থায় আমাদের সব থেকে বেশি প্রয়োজন আমাদের ঐক্য। বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে রক্ষা করার জন্য বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করার জন্য দল-মত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘জনগণের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের যে সংগ্রাম সেই আন্দোলনের কাছে কখনোই স্বৈরাচার সরকার টিকে থাকতে পারে না। তার পতন অবশ্যই হবে। আমরা বিশ্বাস করি জনগণের ঐক্যবদ্ধ যে উত্তাল আন্দোলন সৃষ্টি হবে সেই উত্তালে সমস্ত স্বৈরাচার, একনায়ক, একদলীয় শাসন ব্যবস্থা গুড়িয়ে যাবে। জনগণ তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে সফল হবে। তারা তাদের পছন্দ মত মানুষকে নির্বাচিত করে একটা পছন্দের পার্লামেন্ট দেখতে পারবে।’

ইফতার মাহফিলে আরও উপস্থিত ছিলেন- জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ডা.শফিকুর রহমান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, বিএফইউজের মহাসচিব ও সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম প্রমুখ।