‘মা কই, আমি ছাত্রলীগ করব না’: হাওমাও করে কাঁদলেন শেখ আব্দুল্লাহ

ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত ও প্রত্যাশিত পদ না পাওয়া নেতাকর্মীরা দ্বিতীয় দফায় মারধরের শিকার হয়েছে। শনিবার দিবাগত রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি অভ্যন্তরে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে দ্বিতীয় দফায় মারধরের বিচার ও কমিটি থেকে বিতর্কিতদের বাদ না দেয়া পর্যন্ত রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনশনের ঘোষণা দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ নেতারা।

এর আগে অনশনকারী নেতারা অভিযোগ করেন, রাত তিনটার দিকে তাদের সাথে দুর্ব্যবহার করা হয় ও তাদেরসহ নারী নেত্রীদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক উপ-প্রচার সম্পাদক শেখ আব্দুল্লাহসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।

অভিযোগ উঠেছে, এবার সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী নিজে ছাত্রলীগ নেত্রী বিএম লিপি আক্তারের গায়ে হাত তুলেছেন। এছাড়া গোলাম রাব্বানীর সমর্থকদের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক নারী নেতারা।

শেখ আব্দুল্লাহ ছাড়াও আহতরা হলেন, নতুন কমিটির সংস্কৃতিবিষয়ক উপসম্পাদক নিপু ইসলাম তন্বী, তিলোত্তমা শিকদার, বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফরিদা পারভীন ও সাধারণ সম্পাদক শ্রাবণী শায়লা, শামসুন নাহার হল শাখার সাধারণ সম্পাদক জিয়াসমিন শান্তা, রোকেয়া হল ছাত্রলীগের সভাপতি বিএম লিপি আক্তার, সাবেক কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপসম্পাদক এমদাদ হোসেন সোহাগ, সাবেক কেন্দ্রীয় সহসম্পাদক আজমীর শেখ।

ছাত্রলীগের নেতারা জানিয়েছেন, পদবঞ্চিতদের সঙ্গে কথা বলতে রাত পৌনে ২টার দিকে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে আসেন ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক শোভন এবং সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। পদবঞ্চিতদের সঙ্গে আলোচনার এক পর্যায়ে ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক রোকেয়া হল ছাত্রলীগের সভাপতি বিএম লিপি আক্তারকে প্রশ্ন করেন ‘তুই আমার বিরুদ্ধে মাদক নেওয়ার বিষয়ে চ্যানেলগুলোতে কথা বলেছিস কেন?’

লিপি আক্তার পাল্টা বলেন, ‘আপনারাও তো সাবেক সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক বিষয়ে খারাপ কথা বলেছেন। এটা আপনাদের কাছ থেকে শিখেছি।’

পরে গোলাম রাব্বানী লিপিকে ‘বেয়াদব’ বলে গালি দেন। লিপি আক্তার গালির প্রতিবাদ করেন এবং সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন। এসময় গোলাম রাব্বানীর অনুসারীরা লিপি আক্তার ও বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলের সভাপতি শ্রাবণী শায়লা ও সাধারণ সম্পাদক ফরিদা পারভীন, ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের গত কমিটির সহ-সম্পাদক শেখ আব্দুল্লাহসহ অন্যদের ওপর হামলা চালায়। এসময় শেখ আব্দুল্লাহসহ কয়েকজনকে আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।

এদিকে নিজ দলের নেতাকর্মীদের মারধরে আহত হয়ে হাওমাও করে কেঁদেছেন পদবঞ্চিত ছাত্রলীগ নেতা শেখ আব্দুল্লাহ। সেই ভিডিও এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে।

ভিডিওতে দেখা গেছে আহাজারি করতে করতে শেখ আব্দুল্লাহ বলছেন, “সারা শরীরে কোথাও মারার বাদ রাখেনাই, আমারে যে যেমনে পারছে সে সেমনেই মারছে, আমার অপরাধ কি? আমার মা কই? আমি ছাত্রলীগ করব না! আমি শোভন-রাব্বানী ভাইয়ের মাঝখানে বসে ছিলাম, আমি কিচ্ছু করি নাই, আমারে সবাই মারছে।”

তবে মারধরের বিষয় অস্বীকার করে গোলাম রাব্বানী সাংবাদিকদের বলেন, ‘কাউকে মারধর করা হয়নি। কথা বলতে গিয়ে সেখানে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়েছিল। কিছু কর্মী উত্তেজিত হয়ে গিয়েছিল। আমরা তাদের নিবৃত্ত করেছি।’

এছাড়াও বিশেষ সিন্ডিকেটের নির্দেশনা অনুযায়ী পদবঞ্চিতরা এসব করছেন বলেও দাবি করেন রাব্বানী।

এখানে ক্লিক করে দেখুন সেই ভিডিও-

ছাত্রলীগের পদবঞ্চিতদের ওপর ফের হামলার অভিযোগ

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে এর পুনগর্ঠনের দাবি করা ছাত্রলীগের পদবঞ্চিতরা মারধরের শিকার হয়েছেন। শনিবার গভীর রাতে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের উপস্থিতিতে এই মারধর করা হয় বলে অভিযোগ পদবঞ্চিতদের। এতে নারীসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।

শনিবার আনুমানিক রাত তিনটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) এলাকায় এই হামলার পরপরই বৃষ্টি উপেক্ষা করে এর বিচারের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনশনে বসেছেন পদবঞ্চিতরা। রবিবার সকাল সাড়ে সাতটায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তাদের অনশন অব্যাহত ছিল।

অভিযোগ উঠেছে, সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী নিজে ছাত্রলীগ নেত্রী বিএম লিপি আক্তারের গায়ে হাত তুলেছেন। এছাড়া গোলাম রাব্বানীর সমর্থকদের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক নারী নেতারা।

আহতরা হলেন, নতুন কমিটির সংস্কৃতিবিষয়ক উপসম্পাদক নিপু ইসলাম তন্বী, তিলোত্তমা শিকদার, বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফরিদা পারভীন ও সাধারণ সম্পাদক শ্রাবণী শায়লা, শামসুন নাহার হল শাখার সাধারণ সম্পাদক জিয়াসমিন শান্তা, রোকেয়া হল ছাত্রলীগের সভাপতি বিএম লিপি আক্তার, সাবেক কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিকবিষয়ক উপসম্পাদক এমদাদ হোসেন সোহাগ, সাবেক কেন্দ্রীয় সহসম্পাদক আজমীর শেখ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক উপ-প্রচার সম্পাদক শেখ আব্দুল্লাহ।

ছাত্রলীগের নেতারা জানিয়েছেন, পদবঞ্চিতদের সঙ্গে কথা বলতে রাত পৌনে ২টার দিকে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে আসেন ছাত্রলীগ সভাপতি রেজওয়ানুল হক শোভন এবং সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। পদবঞ্চিতদের সঙ্গে আলোচনার এক পর্যায়ে ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক রোকেয়া হল ছাত্রলীগের সভাপতি বিএম লিপি আক্তারকে প্রশ্ন করেন ‘তুই আমার বিরুদ্ধে মাদক নেওয়ার বিষয়ে চ্যানেলগুলোতে কথা বলেছিস কেন?’

লিপি আক্তার পাল্টা বলেন, ‘আপনারাও তো সাবেক সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক বিষয়ে খারাপ কথা বলেছেন। এটা আপনাদের কাছ থেকে শিখেছি।’

পরে গোলাম রাব্বানী লিপিকে ‘বেয়াদব’ বলে গালি দেন। লিপি আক্তার গালির প্রতিবাদ করেন এবং সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন। এসময় গোলাম রাব্বানীর অনুসারীরা লিপি আক্তার ও বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলের সভাপতি শ্রাবণী শায়লা ও সাধারণ সম্পাদক ফরিদা পারভীন, ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের গত কমিটির সহ-সম্পাদক শেখ আব্দুল্লাহসহ অন্যদের ওপর হামলা চালায়।

গত ১৩ মে ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণার পর থেকে অভিযোগ, আপত্তি, বিক্ষোভ জানিয়ে আসছিল পদবঞ্চিত ও প্রত্যাশিত পদ না পাওয়া একদল নেতাকর্মী। ওই দিনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে পদপ্রাপ্ত কিছু নেতার হাতে নারীনেত্রীরাসহ বঞ্চিতরা মারধরের শিকার হন।

তবে সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর দাবি, ’তিনি কাউকে মারধর করেননি। আলোচনাকালে দুই পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়েছে মাত্র। তিনি এবং কেন্দ্রীয় সভাপতি উভয়পক্ষের এই উত্তেজনা প্রশমনের চেষ্টা করেছেন।’

জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তারা (পদবঞ্চিতরা) এই বিষয়টি নিয়ে নতুন করে ইস্যু তৈরি করতে চাইছে’।

পদবঞ্চিতদের অংশে নেতৃত্ব দেয়া তানবীর হাসান সৈকত বলেন, ‘আমাদের সাথে কথা বলার জন্য কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক টিএসসিতে ডেকেছিল। আমরা সেখানে গেলে তারা বের হয়ে চলে যায়। তারপর তারা পরে দলবল নিয়ে আসে। আমরা বলেছি আপনারা আমাদের সাথে কথা বলেন। দলবল কেন নিয়ে এসেছেন। কথা চলার একপর্যায়ে রাব্বানী লিপিকে বেয়াদব বলেন। তখন আমরা এর প্রতিবাদ করি। তখনই তার কর্মীরা এসে মারামারি শুরু করে। মেয়েদের গায়েও হাত তুলেছে।’

বিক্ষুব্ধ অংশের নেত্রী শ্রাবণী শায়লা বলেন, ‘আমাদের ওপর হামলার বিচার চাই। নেত্রী (আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) ছাড়া কাউকে বিশ্বাস করি না। কমিটিতে যারা অভিযুক্ত তাদের বিষয়ে কথা বলতে আমরা এসেছিলাম। কিন্তু তারা তাদের দলবল নিয়ে এলেন। কথাবার্তার এক পর্যায়ে তারা আমাদের ওপর মারধর শুরু করেন। আমাদের নারী নেত্রীদের রাব্বানী নিজের হাতে মারধর করেছেন। এর বিচার চাই।’

তবে, মারামারির বিষয়ে সাংবাদিকদের সাথে কোনো কথা বলতে রাজি হননি ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন।

সূত্র: সময়ের কণ্ঠস্বর, ঢাকা টাইমস