মৃত্যুর আগে নোটবুকে যা লিখে গেলেন ঢাবির সেই ফার্স্টবয়!

তাওশিক আহমেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগে মাস্টার্সে সিজিপিএ-৪ এর মধ্যে ৪ পেয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন। তাওশিকের বাড়ি বগুড়া জেলার কাহালু-নন্দীগ্রাম।

তার বাবা একটি বেসরকারি কলেজের শিক্ষক এবং মা গৃহিণী। মেধাবী ওই ছাত্রটি ছোটবেলা থেকেই সেরা ছাত্রদের তালিকায় ছিলেন।

তবে এখন তার সবকিছুই ইতিহাস। গত ২৯ এপ্রিল ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে না ফেরার দেশে চলে গেছেন তিনি। তবে মৃত্যুর আগে নিজের কিছু কথা তার নোটবুকে লিখে গেছেন তিনি। তার সেই কথাগুলো ফেসবুকে শেয়ার করেছেন তার সাবেক সহকর্মী শেখ ফরিদ।

পাঠকদের জন্য তার সেই অনুভুতি তুলে ধরা হল- ‘আমার বয়স এখন সাতাশ, যদিও সার্টিফিকেট অনুযায়ী তা এখনো ২৫ পেরোয়নি। আমি আমার জীবনকে ভালোবাসি। আমি সুখী, আমার কাছের প্রিয়জনদের নিয়ে। কিন্তু সব ভালবাসা, আপনজনদের ছেড়ে খুবই দ্রুত আমাকে অন্য কোথাও চলে যেতে হবে।

যদিও আমি যেতে চাইনা, কিন্তু সবকিছুর নিয়ন্ত্রণ মানুষের হাতে নেই। আমরা হয়তো একভাবে আমাদের জীবনকে সাজাতে ব্যস্ত, কিন্তু ভাগ্য নিয়ন্ত্রা হয়ত অন্য কিছু আমাদের জন্য সাব্যস্ত করে রেখেছেন। চাইলেই সবকিছু আমাদের ইচ্ছাধীন নয়।

আমি কখনোই তেমন কিছু লিখতাম না। কিন্তু আজ মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আমি সবাইকে কিছু কথা বলতে চাই : মানুষ মৃত্যুকে এমনভাবে যে কখনোই তা কাউকে স্পর্শ করবেনা। কিন্তু বাস্তবিক অর্থে সবার জন্যই তা প্রযোজ্য, হয়তো কিছুটা সময়ের ব্যবধানে। আমি সবাইকে বলতে চাই, দয়া করে জীবনের ছোট ছোট, অর্থহীন অপ্রাপ্তি, কষ্টগুলোকে নিয়ে চিন্তা করা বাদ দিন।

বরং ভাবুন একটি সময়ে সবাইকে একই পরিণতির দিকে যেতে হবে। সূতরাং আমরা যা সময় পাচ্ছি তাকে অর্থপূর্ণ, আনন্দময় করাটাই মূখ্য হওয়া উচিৎ। জীবনকে জীবনের ছন্দে চলতে দেয়াটাই জীবনের আনন্দ।

যখন জীবনের সামনে বড় কোন সমস্যা এসে উপস্থিত হয়, তখন একটু চিন্তা করুন, আপনার আশেপাশে তাকান, দেখবেন অন্য অনেকে আরো অনেক বড় সমস্যায় জর্জরিত। তখন দেখবেন, আপনার সমস্যাকে……।’