যে কারনে পার্থকে ঘিরে সরগরম বাংলাদেশের সোশ্যাল মিডিয়া

আন্দালিব রহমান পার্থর দল বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি) গতকাল সোমবার বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এর কারণ হিসেবে বিএনপির অতিমাত্রায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্টমুখী হয়ে যাওয়া, ২০ দলীয় জোটের কর্মকাণ্ড শুধু সহমত, সংহতি ছাড়া তেমন কিছুই নেই এবং ‘প্রহসন ও ভোট ডাকাতির নির্বাচন’ এর পর সংসদে যাওয়াটা নৈতিকভাবে ঠিক না হওয়া এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিজেপি চেয়ারম্যান।

পাশাপাশি তিনি এও বলেন, সংসদে বিএনপি যে যাবে, এটা শুধু আমার দল নয়, জোটের কেউ জানে না। এসব কারণেই আমি জোট ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। মঙ্গলবার গণমাধ্যমের সাথে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে সোমবার রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো বিজেপির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে বলা হয়, ‘২০ দলীয় জোটের বিদ্যমান পরিস্থিতি বিবেচনা করে বিজেপি ২০ দলীয় জোটের সব রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে বেরিয়ে আসছে।’

এদিকে ইতোমধ্যে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বর্তমান সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের দল জাতীয় পার্টির মত পল্টিবাজ দল হিসেবে পরিচিতি পেয়ে গেছে বিএনপি। কারণ, তারা এরশাদের মতই সকালে এক কথা আর বিকেলে অন্য কথা বলা শুরু করেছে। বিএনপি বলেছিল, একাদশ সংসদ নির্বাচনে তাদের দল থেকে নির্বাচিত ৬ প্রতিনিধি শপথ নেবে না। পরে শপথ গ্রহণের শেষ দিন ৩০ এপ্রিল ঠিকই শপথ নেয় তারা। আবার, এটাকে দলের কৌশল হিসেবে ব্যাখ্যাও করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল।

একেমুখে দুই কথা বলায় বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনের মেধাবী মুখ আন্দালিব রহমান পার্থ বিএনপি ত্যাগ করা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় চলছে পক্ষে-বিপক্ষে আলোচনা সমালোচনার ঝড়। বিজেপির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে অনিক নামের একজন ফেসবুকে লিখেছেন, ‘পার্থ সাহেব সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।তার উচিত হয়েছে, ওইরকম একটি আদর্শহীন দলের সঙ্গ ত্যাগ করা।এখন তার উচিত হবে আওয়ামী জোটে না যোগ দিয়ে, নিজের দলকে শক্তিশালী করে বিএনপি-আওয়ামীলীগের বিকল্প তৈরি করা।’

পার্থর জোট ত্যাগের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বনী ইসরাইল লিখেছেন ‘মিঃ পার্থ সাহেব আপনাকে আমার বেশ ভাল লাগে। ভাল লাগার কারন আপনি খুব সুন্দর ভাবে জাতির সমস্যার কথা গুলো তুলে ধরতে পারেন। আপনাকে ২০ দলিও জোটের হরতাল অবরোধ এ কখনও রাজপথে দেখিনি তবে ২০ দলিয় মিটিংয়ে আপনাকে দেখতে পেতাম। ২০ দলিও জোট ব্যার্থ হলে এই দায় আপনারো আছে অস্বীকার করতে পারবেন না। তাহলে ২০ জোটের দুঃসময়ে কেনো জোট ছাড়ার ঘোষণা?’

নাসিরুদ্দিন বাপ্পি নামের একজন লিখেছেন, ‘বিএনপির মতো মেরুদণ্ডহিন দলের সাথে থাকলে যেকোন দল ই বিলুপ্ত হয়ে যাবে। এদের নেতৃত্বের প্রচুর ঘাটতি আছে। সময় উপযোগী সিদ্ধান্ত,আরো আগে নিলে আরো ভালো হতো। শুভ কামনা পার্থ সাহেব। আশা করবো বাংলাদেশের রাজনীতিতে শক্তভাবে আগমন ঘটাইবেন’।

কাওছার আহাম্মেদ লিখেছেন,‘আমি মনে করি বিএনপি এইসব একনেতার একদলের জোটকে বিলুপ্ত করে একা চললে ভালো করবে! এই পার্থ সাহেবকে টকসো আর জনসভায় গরম বক্তব্য ছাড়া কোথাও দেখা যায় না! আসলে উনি শেখ পরিবারের সদস্য হিসেবে বিএনপি জোটে বেমানান! কেউ না পারে উনাকে বিশ্বাস করতে না পারে উনি!’

মো. জুয়েল রানা লিখেছেন, ‘বিজেপি বলতে শুধু আন্দালিব রহমান পার্থকেই চিনি এর বাইরে উনার দল বা দলের কোনো নেতাকেই তো চিনলাম না এখনো..। এটা ঠিক যে উনি একজন ভাল রাজনীতিবিদ তবে এরকম দুই একটা রাজনীতিবিদ বিএনপি ছেড়ে চলে গেলেও বিএনপির কিছু যায়ে আসে না!’

মো. সুমন লিখেছেন, ‘এই মুহূর্তে না ছেড়ে অন্তত দেশনেত্রীর মুক্তি পর্যন্ত থাকতে পারতেন দেশনেত্রীকে এভাবে ফেলে রেখে যাওয়াতে আপনার জোটে থেকে সারাজীবনের অর্জন অনেকটা কালেমা লেপন পড়লো..।’