অবশেষে শপথ নেবেন মির্জা ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিতে পারেন বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তার ধারণা, নির্বাচনী এলাকার জনগণের চাপে শেষ পর্যন্ত মির্জা ফখরুল শপথ নেবেন।

মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর ধানমণ্ডির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘মির্জা ফখরুল তার এলাকায় (বগুড়া-৭) যেখানে তিনি নির্বাচিত হয়েছেন, তাদের চাপের মুখে কতকাল দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারবেন সেটিও তো ভেবে দেখতে হবে। আমার তো মনে হয় তিনিও সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নেবেন। আর স্ট্রাটেজিক (কৌশলগত) কারণে পরে শপথ নেয়ার সিদ্ধান্ত বদলাতে পারে বিএনপি।’

প্রসঙ্গত, একাদশ নির্বাচনে ভোট ডাকাতির অভিযোগ তুলে ফল প্রত্যাখ্যান করা বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট শপথ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অন্য সবাই শপথ নিলেও বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের ৮ নির্বাচিত সদস্য এখনও শপথ নেননি। তবে ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচিত গণফোরাম নেতা সুলতান মনসুর ভোট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

বিএনপি উপজেলা নির্বাচনে দলীয়ভাবে অংশ না নেয়ার ঘোষণা দিলেও ভেতরে ভেতরে প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘বিএনপি উপজেলা নির্বাচনে স্বতন্ত্রভাবে দলীয় প্রার্থী দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।’

উপজেলা নির্বাচনের দলীয় মনোনয়ন প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা যাচাই-বাছাই করে মনোনয়ন দেব। এখানে শুধু তৃণমূল থেকে তিনজনের নাম চেয়েছি। এক থেকে তিনজনের বেশি নয়। আবার একজন বা দুজন বা তিনজনের নামও কেউ দিতে পারেন।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মনোনয়নের বিষয়ে এখানে আমরা দেখব যে, সংশ্লিষ্ট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষর রয়েছে কিনা। সেই সঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিতসভা করে প্রার্থী বাছাই করা হয়েছে কিনা, সেটিও দেখা হবে। যদি কোথাও নিয়মের ব্যত্যয় ঘটে, সেখানে আমরা জরিপের প্রতিবেদন অনুসরণ করব। কাজেই মনোনয়ন দেয়ার ক্ষেত্রে সব কিছু পরখ করে দেখা হবে।’

পোড় খাওয়ারাই মনোনয়ন পাবেন এমনটি জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা যখন সরকারে ছিলাম না, তখন জেলা-উপজেলা পর্যায়ে আওয়ামী লীগের অনেকেই ক্ষমতাসীন দলের জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তারাই (ত্যাগীরা) তো আওয়ামী লীগকে ধরে রেখেছে। সুতরাং তাদের মনোনয়ন চাইতে কোনো দোষ নেই।’

একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপির নেতাকর্মীদের আওয়ামী লীগ টাকা খাইয়েছে, এমন অভিযোগের বিষয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আমাদের প্রার্থীদেরই টাকা দিতে পারি না। বিএনপিকে টাকা দেব কোন দুঃখে।’

৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনে গণজাগরণ ঘটেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘সারা দেশে গণজাগরণ হয়েছে। বেশিরভাগ আসনে আমরা বিপুল ভোটে জয়লাভ করতে যাচ্ছি। সে অবস্থায় আমরা অন্যকে কেন ঘুষ দিতে যাব? এর কোনো দরকার আছে? এটি অপ্রয়োজনীয়।’

ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচিত মৌলভীবাজার-২ আসনের সংসদ সদস্য সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আওয়ামী লীগে ফিরছেন কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তিনি (সুলতান মনসুর) আওয়ামী লীগে ফিরছেন কিনা এটি তার নিজের সিদ্ধান্তের বিষয়।

এটি তার নিজস্ব চিন্তা-ধারণা, এটি নিয়ে তার সঙ্গে আমার কোনো কথা হয়নি। আর এ ধরনের (আওয়ামী লীগে ফেরা) কোনো প্রস্তাব আমি দিতে যাব কেন? তারও বিবেক আছে- রাজনীতি করে। কাজেই সে তার বিবেক থেকে এ সিদ্ধান্ত নিতে পারে। আমরা কেন তাকে ইনফ্লুয়েন্স (প্রভাবিত) করব।’—বিডি-জার্নাল