বগুড়া বিএনপির সভাপতির কলার চেপে ধরলেন ফখরুল

বগুড়ায় গিয়ে আবার মেজাজ হারালেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। জেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলামের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ার পর তার কলার চেপে ধরেছেন তিনি। পরে অন্য নেতারা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

গত ৩০ ডিসেম্বরের ভোটে বগুড়া-৬ (সদর) আসন থেকে নির্বাচিত হন ফখরুল। আর ভোটের প্রচারে গিয়েও একবার তিনি মেজাজ হারিয়ে দলের নেতাদেরকে বকাঝকা করেছেন। বুধবার দ্বিতীয়বারের মতো একই ধরনের ঘটনা নিয়ে বিব্রত দলের নেতা-কর্মীরাও।

বিএনপি নেতারা জানান, ঠাকুরগাঁও থেকে সড়ক পথে ঢাকায় ফিরছিলেন ফখরুল। দুপুরে বগুড়া শহরতলীতে হোটেল মম ইন- এ যাত্রাবিরতি করেন তিনি। এ সময় তার সঙ্গে মতবিনিময় করতে যান স্থানীয় নেতারা। এর মধ্যে হঠাৎ এমন ঘটনায় হচকচিয়ে যান তারা। কেন এমনটি হলো, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। একাধিক নেতা কেবল ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। তারা জানান সভা শুরুর আগে লিফটে জেলা বিএনপির সভাপতি সাইফুল ইসলামের সঙ্গে মির্জা ফখরুলের বাকবিত-া হতে দেখেন তারা। এক পর্যায়ে সাইফুলের কলার চেপে ধরেন ফখরুল। পরে লিফটে থাকা অন্য নেতারা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন।

সাইফুলের সঙ্গে এর আগেও দুই দফা রাগারাগি করেছেন ফখরুল। গত ২৬ নভেম্বর বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে দলের মনোনয়নের চিঠি বিতরণের সময় বগুড়া বিএনপির সভাপতি সাইফুলকে ধমক দিয়ে তাকে ‘বেয়াদব’ বলে চিৎকার করেন বিএনপি মহাসচিব। সে সময় এটি বেসরকারি টেলিভিশনের লাইভে প্রচার হয়।

বিএনপি বগুড়া-৬ ও ৭ আসনে দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মনোনয়নের চিঠি দিয়েছিল। সাইফুল সেই চিঠি গ্রহণ করেন ফখরুলের কাছ থেকে। আর হাত থেকে চিঠি নিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ ক্ষেপে উঠেন বিএনপি নেতা।

পরে খালেদা জিয়া ওই আসনে প্রার্থী হতে পারেননি। আর ফখরুল ভোটে দাঁড়ান বগুড়া-৬ আসনে। গত ১৫ ডিসেম্বর প্রথমবারের মতো তিনি নির্বাচনী প্রচারে গেলে সেখানেও সাইফুলের দিকে তেড়ে যান তিনি।

বগুড়ার টিটো মিলনায়তনে কর্মি সম্মেলনে সভাপতিত্ব নিয়ে বিএনপির অন্য এক নেতার সঙ্গে গোলযোগ হয়েছিল সাইফুলের। এক পর্যায়ে তার দিকে তেড়ে যান বিএনপি মহাসচিব। সেদিন হাত তুলে তাকে চড় দিতেও উদ্যত হনও তিনি।

দলীয় মহাসচিবের সঙ্গে কী সমস্যা- এ বিষয়ে কথা বলতে চাইছেন না সাইফুল। তিনি ফোন বন্ধ করে রেখেছেন।

মত বিনিময়ে যা বললেন ফখরুল

এই ঘটনার পর মত বিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির মহাসচিব। বলেন, ‘নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। সারাদেশের মানুষের মুখে আর হাসি দেখা যায় না। আওয়ামী লীগ আজ গণ শত্রুতে পরিণত হয়েছে। তারা ত্রিশ ডিসেম্বরের নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনকে গণমানুষের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।’

বিএনপির সংকটকালে নেতা কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বানও জানান দলের মহাসচিব। বলেন, ‘দেশ আজ গভীর সংকটে পরেছে। ভয়াবহ দুর্বৃত্তায়নের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার কারণে এই সংকটের সৃষ্টি হয়েছে।’

বগুড়া সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন চান, সাবেক সভাপতি মাহবুবর রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ, হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু প্রমুখ এ সময় বক্তব্য রাখেন। সভা পরিচালনা করেন সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাফতুন আহম্মেদ খান রুবেল। আর সভাপতিত্ব করেন সাইফুল নিজে। কিন্তু সভার আগে ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে কিছুই বলেননি তিনি।