তবে কি আরেকজন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত হতে যাচ্ছেন সুলতান মনসুর

সব জল্পনা-কল্পনা শেষ করে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষ হয়েছে। বিএনপির নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্ট তাদের ভুল রাজনীতির চরম মাশুল দিয়েছে। বাঙালি জাতি তাদের ঐতিহাসিক রায়ে এটাই বলতে চেয়েছে এদেশে যুদ্ধাপরাধী, জঙ্গি, সন্ত্রাসী ও তাদের পৃষ্ঠপোষকদের স্থান নেই। যারাই তা করতে যাবে তাদেরই এমন পরিণতি হবে। মহাপ্রলয়ে ভেসে যাবে খড়কুটোর মতো।

আর ৩০শে ডিসেম্বরের এই প্রলয়ের মধ্যে থেকেও একজন কোন রকমে বেঁচে গিয়েছেন, তিনি সুলতান মনসুর। শুধুমাত্র রাজনীতিতে টিকে থাকার জন্য সকল ধরনের নীতি আদর্শ নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করেও শুধুমাত্র ব্যক্তিগত ইমেজ ও আওয়ামী লীগের নিজস্ব প্রার্থী না থাকার কারনে জয়ী হতে পেরেছেন। এই বিজয়ের কৃতিত্ব তিনি পেতেই পারেন।

কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এ বিজয় তিনি ধরে রাখতে পারবেন কি? নাকি বিএনপির মত আবারও হঠকারী রাজনীতির গড্ডলিকা প্রবাহে গা ভাসাবেন? সিদ্ধান্তটি উনান। বিএনপি বলছে শপথ নেবে না। কামাল হোসেন বলেছেন বিষয়টা বিবেচনাধীন। বিএনপির মতো ঐক্যফ্রন্টের পরাজিত নেতারাও চাইবেনা নির্বাচিত সাংসদরা শপথ নিন। এক পর্যায়ে কামাল হোসেনও হয়তো তাদের সুরে তাল মেলাবেন। স্রোতের বিপরীতে যেতে চাইবেন না। অথবা হতাশার কারনে রাজনীতি থেকে অবসরও নিতে পারেন। তাতে তার ক্ষতির চেয়ে লাভই হবে। অবসরের কারন হবে বয়সের অজুহাত।

সুতরাং সিদ্ধান্তটি সুলতান মনসুরকে একাই নিতে হবে।যদি তাঁর সিদ্ধান্ত ইতিবাচক হয় অর্থাৎ শপথ ও সংসদে যোগদেন তাহলে শুধু রাজনীতিতে টিকেই থাকবেন না, আরেকজন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত হয়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে। বিষয়টা ব্যাখ্যা করেই বলি।

স্বাধীনতা উত্তর সংসদে একমাত্র বিরোধীদলীয় সাংসদ ছিলেন সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। সেই সুযোগটি তিনি কাজেও লাগিয়েছিলেন। সংসদে তার সরব উপস্থিতি তাঁকে সমগ্র বিশ্বে একজন জাঁদরেল পার্লামেন্টারিয়ান রূপে প্রতিষ্ঠিত করেছে। বর্তমান সংসদে বিএনপির অনুপস্থিতি বা স্বল্প সংখ্যক সদস্য থাকার কারনে এবং জাতীয় পার্টি মহাজোটের অংশ হওয়ায় সুলতান মনসুর বিরোধীদলের সদস্য হিসেবে সরব ভূমিকা রেখে আরেকজন সেনগুপ্ত রূপে আবির্ভুত হতে পাররেন। তবে তা নির্ভর করবে তাঁর নিজস্ব সিদ্ধান্তের ওপর। তবে তাঁর ভোটাররা নিশ্চয় তাঁকে একজন সফল রাজনীতিবিদ ও সাংসদ হিসেবে দেখতে চাইবে।

সূত্র: পিবিডি