নতুন যে কৌশলে এবার এগোচ্ছে বিএনপি

একাদশ জাতীয় নির্বাচনে ভরাডুবির পর বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝে নতুন করে হতাশা এবং অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। দলটির নেতাকর্মীরা বলেছেন, সরকার কারচুপি করে একচেটিয়া জয় পেয়েছে। কিন্তু তারপরও বিএনপির এই ফলাফল বিপর্যয় তাদের জন্য বড় আঘাত। আর এই আঘাত কাটিয়ে উঠতে দলটি এখন নতুন কৌশল হাতে নিয়েছে।

বিএনপির একাধিক নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ছাত্রদল, যুবদলসহ অঙ্গ ও সহযোগী বিএনপির সংগঠনগুলোকে এবার ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা করছে দলটি। কাউন্সিলে সরাসরি ভোটের মাধ্যমে এসব সংগঠনের নতুন নেতৃত্ব নির্ধারণ করবে বিএনপি। এছাড়াও ভোটে অনিয়মের অভিযোগ এনে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে প্রার্থীদের মামলার পাশাপাশি আন্দোলন কর্মসূচি নিয়েও মাঠে থাকবে দলটি।

এরই অংশ হিসেবে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করার চিন্তা করছে দলটি। জানুয়ারির শেষদিকে বা ফেব্রুয়ারির শুরুতে এ জনসভার তারিখ নির্ধারণ হতে পারে বলে জানা গেছে। এসব তথ্য জানা গেছে।

দলটির নীতিনির্ধারকদের মতে, বিএনপির সামনে এখন অনেক চ্যালেঞ্জ। বাস্তবতার নিরিখে বিএনপিকে আগামী দিনের পথ চলতে হবে। দল ইতিমধ্যে নির্বাচন ও ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছে। একই সঙ্গে নেতারা নতুন নির্বাচনের দাবিও জানিয়েছেন। এ দাবি নিয়ে জনগণের কাছে যাবে তারা। ভোটের অনিয়ম তদন্তে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছেও যাচ্ছেন নেতারা।

এ বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, দেশের জনপ্রিয় বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি। এই দলটিকে নিশ্চিহ্ন করতে সরকার নানা কৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে। হামলা-মামলা ও গ্রেপ্তারের মাধ্যমে নেতাকর্মীদের চরমভাবে নির্যাতন ও হয়রানি করা হচ্ছে।

সর্বশেষ তামাশা ও প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মনোবল ভেঙে দেয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠার পর অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আবার স্বমহিমায় ঘুরে দাঁড়িয়েছে বিএনপি। তাই সরকার যতই কৌশল গ্রহণ করুক এ দলটিকে ধ্বংস বা নিশ্চিহ্ন করা যাবে না। বৈঠক করেই দলের পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জে. (অব.) মাহবুবুর রহমান জানান, বিএনপির সামনে এখন অনেক চ্যালেঞ্জ। বাস্তবতার নিরিখে বিএনপিকে সামনে পথ চলতে হবে। ভোটে কী হয়েছে তা নিয়ে বিশ্লেষণের কিছু নেই। সবারই বিষয়টি জানা। আমরা এ নির্বাচন ও ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছি। সামনে এখন একমাত্রই লক্ষ্য, সেটা হলো দলকে গোছানো।

২০০৬ সালের অক্টোবরে দায়িত্ব ছাড়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত ক্ষমতার মুখ দেখেনি বিএনপি। এর মধ্যে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জন করে এই দল। তাই ৫ বছর ধরে বিএনপি বিরোধী দলেও নেই। এ অবস্থায় সদ্যসমাপ্ত একাদশ সংসদ নির্বাচনে ফল বিপর্যয়। দলটি ৫টি আসন পেলেও বিজয়ীরা শপথ নেয়া থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল