জাল ভোটে ব্যালট বক্স পূর্ণ করার অভিযোগ হাস্যকর: এইচ টি ইমাম

ব্যালট বক্স জাল ভোটে পূর্ণ করার অভিযোগকে হাস্যকর মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচ টি ইমাম বলেছেন, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সের মাধ্যমেই ভোট হবে। পোলিং এজেন্টদের ব্যালট বক্স ও ব্যালট পেপার খতিয়ে দেখতে হবে। পোলিং এজেন্টদের দায়িত্ব রয়েছে ব্যালট বক্স ভর্তি কিনা, ব্যালটের পাতা ছেড়া রয়েছে কিনা এটা দেখতে হবে।

এর আগে সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেছিলো ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। শনিবার বিকেলে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মিডিয়া সেন্টারে তিনি এ মন্তব্য করেন।

এইচ টি ইমাম পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, বিএনপি-জামায়াত ও ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্যে ভুয়া ভোট কেন্দ্র, ব্যালট পেপার তৈরি করে ভোটারদের মাঝে ভীতি সৃষ্টির চেষ্টা করবে। দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত ও পলাতক আসামি তারেক রহমান ভিডিও বার্তার মাধ্যমে নাশকতার নির্দেশনা দিয়েছেন। তারেকের বক্তৃতায় শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পরিবেশ বিনষ্টের পরিকল্পনা ও সন্ত্রাস সৃষ্টির নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তিনি সংঘবদ্ধভাবে গেরিলা কায়দায় ভোটকেন্দ্র দখলের হুমকি দিয়েছেন। একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট উৎসবকে তিনি বিনষ্ট করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন।

তিনি বলেন, নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে বিএনপির নেতা মওদুদ আহমেদ ইতোমধ্যেই অভিযোগপত্র লিখে রেখেছে। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে স্বাধীনতায় অর্জিত সংবিধানের আলোকে। নির্বাচন পরিচালনার সমস্ত দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। নির্বাচন কমিশন তার পূর্ণস্বাধীনভাবে কাজ করছে। এখানে সরকারের কোনো ভূমিকা নেই। নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করতে আওয়ামী লীগ সরকার যুগান্তকারী পদক্ষেপ পালন করেছে। এখন আর কমিশন সরকারের মুখাপেক্ষী নয়।

ইমাম বলেন, নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করার জন্যে সংবিধানে যা বলা হয়েছিলো আমাদের সরকার তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছে। এখন সেনাবাহিনী পর্যন্ত তাদের অধীনে। প্রায় ৭ লক্ষের মত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ইসির অধীনে কাজ করছে। প্রায় ৬ লক্ষ আইন-শৃংখলা বাহিনীকে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ দিয়েছে। সুন্দর পরিবেশে নির্বাচন পরিচালনা করায় নির্বাচন কমিশনকে আগাম ধন্যবাদ জানাই।

অন্য সব বারের তুলনায় এবারের নির্বাচনে সহিংসতা অনেক কম হয়েছে দাবি করে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান বলেন, এবারই প্রথম শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হতে যাচ্ছে। অন্যান্য সব নির্বাচনের তুলনায় এবার হতাহতের সংখ্যা অনেক কম। ২০১৮ সালের নির্বাচনে যতটুকু হতাহতের ঘটনা ঘটেছে এর শিকার কেবলমাত্র আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। আইনশৃংখলা বাহিনীর সচেতন তৎপরতায় হতাহতের ঘটনা কমিয়ে আনা সহজ হয়েছে।

নৌকার পক্ষে অভূতপূর্ব গণজোয়ারের পাশাপাশি বিশ্ব গণমাধ্যমগুলোতে আসা প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তৃতীয় বারের মতো আবারো নিরঙ্কুশ বিজয় পাবে আওয়ামী লীগ। তিনি বলেন, আগামী কালের নির্বাচনে শুধু শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয় এটি গোটা বাংলাদেশের এবং এর উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে কাল সারা দেশে শান্তিপূর্ণভাবে এবং অংশগ্রহণমূলক একটি নির্বাচন হবে এবং নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয় পাবে আওয়ামী লীগ ।

নির্বাচন কমিশন বিএনপি-জামায়াত ভাবধারার ৯ টি পর্যবেক্ষক সংস্থার ৬৫৮৫ জনকে সারা দেশে পর্যবেক্ষণের কার্ড দিয়েছে। এরমধ্যে ৪টি সরাসরি বিএনপি-জামায়াত সংশ্লিষ্ট বলেও অভিযোগ করেন। এ ৪ টি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে ডেমোক্রেসি ওয়াচ, যার প্রধান হচ্ছেন শফিক রেহমানে স্ত্রী তালেয়া রেহমান। খান ফাউন্ডেশন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খানের স্ত্রীর। বগুড়ার লাইট হাউস তারেক রহমানের। আর আদিলুর রহমানে প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ মানবাধিকার পরিষদ। এরা সবাই রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত।

এসকল পর্যবেক্ষকগণ পক্ষপাতমুলক প্রতিবেদন তৈরি করে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারেন বলেও আশংকা করেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক উপদেষ্টা।

আওয়ামী লীগের মিডিয়া উপ-কমিটির সদস্য সচিব কাশেম হুমায়ুনে সভাপতিত্বে আরো উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুস সবুর, উপ-দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মারুফা আক্তার পপি, দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাউসার প্রমুখ।