মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার চলবে: ঐক্যফ্রন্টের ইশতেহার

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রম চলমান রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজেদের ইশতেহার ঘোষণা করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।

বাংলাদেশের জনগণের হৃত মৌলিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে ৭ দফা দাবি এবং ১১ দফা লক্ষ্যকে সামনে রেখে সোমবার দুপুরে এ ইশতেহার ঘোষণা করা হয়।

রাজধানীর হোটেল পূর্বানীতে ইশতেহার ঘোষণা করেন ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা এবং নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।

ইশতেহার ঘোষণাকালে তিনি বলেন, ‘মানবতাবিরোধী অপরাধের চলমান বিচার কার্যক্রম চলমান থাকবে’।

আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর একাত্তুরের মহান মুক্তিযুদ্ধে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার কাজ শুরু করে।

মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় এ পর্যন্ত মোট পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। এর মধ্যে একজন বিএনপি ও চারজন জামায়াতের নেতা।

তারা হলেন- বিএনপির সাবেক স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী, এবং জামায়াতের কামারুজ্জামান, কাদের মোল্লা, মতিউর রহমান নিজামী ও মীর কাসেম আলী।

নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধন হারানোর পর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে জামায়াতে ইসলামীর নেতারা নির্বাচন করছেন। কেউ কেউ আবার স্বতন্ত্র নির্বাচনেও দাঁড়িয়েছেন।

জামায়াতের সঙ্গে সখ্য প্রশ্নে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে সাংবাদিকদের করা প্রশ্নের জবাবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ড. কামাল হোসেন এক পর্যায়ে মেজাজ হারিয়ে ফেলেছিলেন। সাংবাদিকদের ‘খামোশ’ ও ‘চিনে রাখলাম’ হুমকি জামায়াতের সঙ্গে গোপন সখ্য যেন সেদিন আরো ফুটিয়ে তোলে। যদিও সেই ঘটনায় পরে তিনি দু:খ প্রকাশ করেন।

গোপনে যাই হোক, নির্বাচনী ইশহেতারে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বিচারকাজ অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে তারা।

আরো যা আছে ইশতেহারে:

ইশতেহারে বলা হয়েছে, নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার পরিচালনার দায়িত্ব পেলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের কল্যাণে সরকার পরিচালনা করবে। এই পরিচালনার মূলনীতি হবে ঐক্যমত্য, সকলের অন্তর্ভুক্তি এবং যেকোনো রকম প্রতিহিংসা থেকে মুক্ত থাকা।

‘প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ’ সংবিধানের সপ্তম অনুচ্ছেদে বর্ণিত এই নীতির ভিত্তিতে সরকার পরিচালনায় যাবতীয় পদক্ষেপের ভিত্তি হবে রাষ্ট্রের মালিকগণের মালিকানা সুদৃঢ় করা। রাষ্ট্রের এই মালিকানা শুধু নির্বাচনে জেতা দলের মানুষের নয়, এই মালিকানা থাকবে নির্বাচনে পরাজিত দলের নেতা-কর্মী-সমর্থকদেরও। এই রাষ্ট্র পরিচালিত হবে নির্বাচনে পরাজিতদের মতামত এবং অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে।

এতে আরো বলা হয়েছে, এই রাষ্ট্র নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা আছে, নির্বাচনে জিতলে পরবর্তীতে সেটা আমরা জনগণের সামনে নিয়ে আসবো। এই অঙ্গীকারে আমরা শুধু সেই বিষয়গুলোকে স্থান দিয়েছি যেগুলো আগামী ৫ বছরের মধ্যে আমরা সম্পন্ন করব।

ইশতেহার পাঠের সময় মান্না বলেন, এতে ৩৫টি প্রতিশ্রুতি রয়েছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে। সময় স্বল্পতার কারণে সংক্ষিপ্তভাবে উপস্থাপন করা হলো বলেও উল্লেখ করেন মান্না।