মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন দুপুর ২টায় রাজধানীর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র হাতে পান যশোর-৫ (মণিরামপুর) আসনের প্রার্থী অ্যাডভোকেট শহীদ ইকবাল। তবে জমা দেওয়ার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সাড়ে ৩শ’ কিলোমিটার দূরের জেলা শহর যশোরে আসা একেবারেই অসম্ভব। আবার ওই সময়ে এই রুটে চলাচলকারী কোনো প্লেনের শিডিউলও নেই।
ফলে বাধ্য হয়েই মনোনয়নপত্র পৌঁছাতে প্রায় দেড় লাখ টাকায় ভাড়া করা হয় একটি হেলিকপ্টার। আর এতে করে প্রার্থীর কাছের লোকজন উড়ে এসে নির্ধারিত সময়ের ঘণ্টাখানেক আগেই মনোনয়নপত্রটি জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দেওয়া হয়।
যদিও জোটের সঙ্গে আসন ভাগাভাগির ‘গ্যাঁড়াকলে’ পড়ে কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওই আসনে অ্যাডভোকেট শহীদ ইকবালের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সম্ভাবনা একেবারে নেই বললেই চলে। তবুও হেলিকপ্টার ভাড়া করে মনোনয়নপত্র নিয়ে এসে নেতাকর্মীদের মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছেন শহীদ ইকবাল। প্রথমে জানাজানি না হলেও বুধবার (২৮ নভেম্বর) রাতে হেলিকপ্টারের আরোহী কৃষিবিদ আলমগীর এবং অ্যাডভোকেট রকি এ সংক্রান্ত ছবি নিজেদের ফেসবুকে আপলোড করলে তা আর গোপন থাকে না।
এ প্রসঙ্গে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা বলেন, উপজেলা বিএনপির সভাপতি শহীদ ইকবাল বিএনপির একজন পরীক্ষিত সৈনিক। তিনি সারাজীবন এ দলের জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে বহুবার হামলা-মামলার শিকার হয়েছেন। ফলে দলের মনোনয়নপত্র তার বড় প্রাপ্তি।
আর একজন প্রকৃত রাজনৈতিক নেতার কাছে দলীয় মনোনয়ন পবিত্র আমানত, সেজন্যই এ প্রচেষ্টা। তবে কেন্দ্রের প্রতি দাবি জানিয়ে কর্মীরা বলেন, ‘শহীদ ইকবালকে প্রার্থী হিসেবে পেলে প্রাণ ফিরে পাবেন নির্যাতিত নেতাকর্মীরা, লড়াই করেই জিতবে ধানের শীষ’।
বিএনপির নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, যশোর জেলার ছয়টি আসনে জোটের অন্যতম শরিক দল জামায়াতের সঙ্গে আসন ভাগাভাগির জটিলতায় মনোনয়ন ঘোষণা দিতে অনেকটা বিলম্ব হয়। সর্বশেষ জোটকে ছেড়ে দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া আসনসহ অন্য আসনেও কৌশলগত কারণে দুই থেকে তিনজন করে প্রার্থীকে মনোনয়নপত্র দিয়েছে বিএনপি।
তার মধ্যেই যশোর-৫ (মণিরামপুর) আসনে জোটের অন্তর্ভুক্ত জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সভাপতি মুফতি মো. ওয়াক্কাস-কে ছেড়ে দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে জানিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার হয়েছে। এছাড়াও এ বিষয়টি জেলা-উপজেলার সব নেতারাও অবগত আছেন।
তবে ক্ষোভ থাকলেও কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার প্রস্তুতি থেকেই মনোনয়ন কিনেছেন নেতারা।