মাশরাফি পাঁচ প্রশ্নের জবাব দিলেন

স্পোর্টস ডেস্কঃ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ হেরে যাওয়ায় পর বিশ্ব ক্রিকেটে যথেস্ট লজ্জা পেয়েছিল বাংলাদেশ। তিন ম্যাচে ওডিআই সিরিজে বাংলাদেশ প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে ৪৮ রানে জয়ের আলোচনার তীরটা উল্টো পথে হাটা ধরে। সিরিজ ২য় ম্যএচ জয় হাতের নাগালে থাকার পরও ৩ রানে হারের কারণে আবারো সমালোচিত হতে হয় মাশরাফিদের। যাইহোক, টাইগারদের পক্ষে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জয়ের ফলে বিশ্ব ক্রিকেটে এখন আলোচনা নতুন মোড় নিয়েছে। ৩০২ রানের টার্গেটে ৫০ ওভারে উইন্ডিকে ২৮৩/৬ আটকে দিয়ে ১৮ রানে ম্যাচ জিতে নেয় মাশরাফিরা। ইএসপিএন ক্রিকইনফো বাংলাদেশের পরবর্তী মিশন হিসেবে ২০১৯ বিশ্ব কাপ আসরকে টার্গেট করে দলের চ্যালেঞ্জিং পাঁচটি প্রশ্ন উত্থাপন করেছে। যার জবাব দিয়েছেন অধিনায়ক মাশরাফি।

প্রশ্নঃ তামিম ইকবালের সাথে কে ওপেন করবে?

মাশরাফি ঃ এ বছর সাত ওয়ানডেতে ৮৮ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছেন এনামুল হক। ওয়ানডে সিরিজ জুড়ে তাকে বেছে নেয়া, এনামুলকে যথেষ্ট আস্থা প্রদান করতে হবে। কিন্তু তিনি তিনটি ইনিংসে মাত্র ৩৩ রান করেছেন। ইমরুল কায়েস, সৌম্য সরকার ও লিটন দাশ ২০১৬ ও ২০১৭ সালে দৃঢ়ভাবে অবস্থান গ্রহণে ব্যর্থ হওয়ার পর নির্বাচকরা এই বছর এনামুলকে বেছে নিলেন। মোহাম্মদ মিঠুন একবার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আসন্ন টুয়েন্টি ২০ সিরিজের খেলায় তাদের পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে নির্বাচকরা সৌম্য বা লিটন ফিরতে পারেন।

প্রশ্নঃ ফিনিশারের ভূমিকা কে খেলবে?

মাশরাফি ঃ মাহমুদউল্লাহ শেষ ওভারে বিশেষ করে শেষ পাঁচ ওভারে ভূমিকা রাখে। ওয়ানডে সিরিজের সময় তার স্ট্রাইক রেট ছিল ২১৪.২৯। এই সিরিজে বাংলাদেশের কোনও সাফল্য ছাড়া মাহমুদুল্লাহর পরে সাব্বির রহমান ও মোসাদ্দেক হোসেনকে ব্যাটিং করেছে। সাব্বিরের ফর্ম আউট হওয়া, এবং তার শেষ ১৪ ইনিংসে একটি উল্লেখযোগ্য স্কোর করা হয়নি, যখন মোসাদ্দেক একটি ঐতিহ্যগত মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান, যিনি জানেন শেষ ওভার গুলোতে কিভাবে রান খুঁজে বের করতে হয়। তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচে আমাকে মাঠে নামতে হয়েছিল, ৩৯ তম ওভারের প্রথম বলেই শুরু করি আমি। মাহমুদুল্লাহর শেষ ম্যাচে দারুণ খেলেছেন। তবে সাব্বিরকে অবশ্যই একটি ব্রেক দেয়া প্রয়োজন। তাই বাংলাদেশ দলের বড় চ্যালেঞ্জের সামনে দাঁড়াতে হতে পাওে ২০১৯ বিশ্বকাপে। মুস্তাফিজুর রহমান ও মেহেদী হাসান দুই জনেই যথেস্ট প্রতিভাবান বোলার।

প্রশ্নঃ শেষ ওভার বোলিং করতে সক্ষম বোলারদের কোন দোষ আছে?

মাশরাফি ঃ গত তিন বছরে মুস্তাফিজুর রহমান শেষ পাঁচ ওভারের ওডিআই ইনিংসে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রক্ষণাত্মক বোলার (সর্বনিম্ন ১০০ বল) করেছেন। রশিদ খান প্রতি ওভার প্রতি ৬.০০ এবং মুস্তাফিজুর মাত্র ৬.০৮ এ পিছনে আছেন। তিনি বাংলাদেশের একটি প্রধান সম্পদ, বাংলাদেশ তার দক্ষতার উপর নির্ভরশীল।

ওয়ানডে সিরিজের শেষ ওভারে রুবেল হোসেন ১০.৪০ ওভারে ১০.৪০ রান করেছেন ( গত দুই বছরে ৭.৮৯), মুস্তাফিজুরের ৪.৬৬ ওভারে বিপরীতে রুবেলের পাথর্ক্য থাকলেও তিনি কার্যকরী বোলার। শেষ ওভার গুলোতে মুস্তাফিজ ও রুবেল বিশ্বকাপে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে বলেই মনে করি।

প্রশ্নঃ মেহেদী কি দলের জন্য দীর্ঘমেয়াদী নতুন বল বোলার?

মাশরাফি ঃ যথেষ্ট উইকেট না পেলেও মেহেদি হাসান ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশের সেরা বোলার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। তিনি ক্রমাগত স্টাম্পকে তার গতি এবং সূক্ষ্ম দৈর্ঘ্যের পরিবর্তনের সাথে আক্রমণ করেছেন। তিনি এশিয়া কাপ এবং জিম্বাবুয়ে এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে হোম ওয়ানডে সিরিজে এই ভূমিকা পালন করলে আগামী দিনে মেহেদী দলের স্থায়ী আসনে চলে আসবেন। যা তার জন্য বিশ্বকাপ অংশগ্রহন নিশ্চিয়তা দেবে বলেই মনে করি।

প্রশ্নঃ বাংলাদেশ দলের ঘাটতি কী?

মাশরাফিঃ ২০১৯ সালের বিশ্বকাপ পর্যন্ত দল গড়ে তুলতে টানা ১০ মাসে বাংলাদেশে প্রচুর ক্রিকেট রয়েছে। কয়েকটি বিভাগে আমাদের উন্নত করতে হবে। টেস্টে একটি ভাল গতিময় দল তৈরি ছাড়াও ওয়ানডে ওপেনার এবং অন্তত দুটি আক্রমণাত্মক মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান দরকার আমাদের। কোনও টেস্ট বা ওয়ানডে ম্যাচে শান্তকে পরীক্ষা করা হয়নি, এবং এখন আয়ারল্যান্ডের বাংলাদেশ এ দলের সাথে যোগ দেবেন। ওপেনিং জুটি আর মিডল অর্ডারে আক্রমনের বিষয়টি সহ আমাদের দলের তেমন কোন সমস্যা নেই।