প্রায় এক দশক পর বিদেশের মাটিতে সিরিজ জয়ের উল্লাস

লক্ষ্য ৩০২ রান। নিজেদের মাটিতে হলেও এই লক্ষ্য বেশ কঠিনই বটে। মাঝে মধ্যে আশা জাগালেও শেষ পর্যন্ত সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে হেরেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ম্যাচে বাংলাদেশ জিতেছে ১৮ রানে। তাই সিরিজও জিতেছে সফরকারী দল, ২-১ ব্যবধানে। তাই প্রায় এক দশক পর বিদেশের মাটিতে সিরিজ জয়ের উল্লাস করেন মাশরাফিরা।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তাদের মাটিতে এর আগে ২০০৯ সালে সিরিজ জিতেছিল বাংলাদেশ। সেবার ক্যারিবীয়দের ওয়ানেডে সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করেছিল সাকিব-তামিমরা।

আজকের জয়ে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে তৃতীয় এবং তাদের মাটিতে দ্বিতীয় সিরিজ জয়ের সাফল্য পায় বাংলাদেশ। এর আগে ২০১২-১৩ মৌসুমের নিজেদের মাটিতে সিরিজ জিতেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। মুশফিকুর রহিমের নেতৃত্বে সেই সিরিজে ৩-২ ব্যবধানে জয় পেয়েছিল লাল-সবুজের দল।

দীর্ঘদিন পর আরেকটি সাফল্য এসেছে তামিম ইকবালের অসাধারণ সেঞ্চুরির ওপর ভর করেই। দারুণ এই সেঞ্চুরি করে বাংলাদেশি ওপেনার করেছেন একটি রেকর্ডও। বিদেশের মাটিতে কোনো দ্বিপাক্ষিক সিরিজে একাধিক সেঞ্চুরি করেছেন।

এ ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিং বেছে নেওয়া বাংলাদেশ গড়েছে চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ, ৩০১ রান। অবশ্য ইনিংসে বাংলাদেশের শুরুটা খুব একটা ভালো হয়নি। গত দুই ম্যাচের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে শুরুতে ফিরে যান ওপেনার এনামুল হক, দলীয় ৩৫ রানের মাথায় ৩১ বলে মাত্র ১০ রান করে ।

অবশ্য এর পরই ব্যাট হাতে দৃঢ়তা দেখান ওপেনার তামিম ইকবাল ও ওয়ানডাউনে নামা সাকিব আল হাসান। দ্বিতীয় উইকেটে এই দুজনের দৃঢ়তায় দল বড় সংগ্রহের পথ দেখে। তারা ৮১ রানের পার্টনারশিপ গড়েই এগিয়ে দেন দলকে।

গত দুই ম্যাচে দারুণ দুটি হাফ সেঞ্চুরি করা সাকিব এদিন অবশ্য খুব বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। তবে তাঁর ৪৪ বলের ৩৭ রানের ইনিংসটিও বেশ কার্যকর ছিল। এরপর মুশফিকুর রহিম (১২) দ্রুত ফিরে গলেও একপাশ আগলে রাখেন তামিম। ক্যারিয়ারের এগারোতম সেঞ্চুরি করেন আউট হন তিনি। এই বাঁহাতি ওপেনার ১২৪ বলে ১০৩ রান করেই আউট হন।

তবে পঞ্চম উইকেট জুটিতে মাহমুদউল্লাহ ও অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা দারুণ দুটি ইনিংস খেলে দলকে বড় সংগ্রহ গড়ে দিতে অন্যতম অবদান রাখেন।

দীর্ঘদিন পর ব্যাট হাতে উজ্জ্বলতা ছড়ান মাশরাফি। তিনি ২৪ বলে ৩৬ রান করেন। তাঁর এই ইনিংসে চারটি চার ও একটি ছক্কার মার ছিল। আর মাহমুদউল্লাহ ৬৭ রান করে ক্যারিয়ারের ১৯তম ফিফটি ঝুলিতে পুরেন।

জবাবে বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ জয়ের একেবারেই কাছাকাছি চলেও গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত ২৮৩ রানে থামে তাদের ইনিংস। জয়ের জন্য শেষ দুই ওভারে ৩৪ রান প্রয়োজন ছিল তাদের। রোভম্যান পাওয়েলের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে স্বাগতিকদের আশাবাদী করে তুলেছিল। তবে ৪৯তম ওভারে নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন পেসার রুবেল হোসেন।

জয়ের জন্য শেষ ওভারে স্বাগতিকদের প্রয়োজন হয় ২৮ রান। মুস্তাফিজুর রহমানের প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকান রোভম্যান পাওয়েল। তবে বাঁহাতি পেসার চাপে ভেঙে পড়েননি। শেষ ৫ বলে দেন মাত্র তিনটি সিঙ্গেলস। তাই জয়ের উল্লাস করে বাংলাদেশ।

পাওয়েল ৪১ বলে ৭৪ রান করেও দলকে জয়ে এনে দিতে পারেননি। এর আগে গেইল ৭৩ এবং হোপ ৬৪ রানের দুটি ইনিংস খেলেন।

মাশরাফি ৬৩ রানে দুই উইকেট পান। এ ছাড়া মিরাজ, মুস্তাফিজ ও রুবেল পান একটি করে উইকেট।