পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের একাদশ সাধারণ নির্বাচনের আংশিক ভোট গণনায় এগিয়ে রয়েছে সাবেক ক্রিকেট তারকা ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। সরকারিভাবে ফল ঘোষণা করা না হলেও তিনিই পাকিস্তানের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন। ১৯৯২ সালে দলকে নেতৃত্ব দিয়ে বিশ্বকাপ জিতিয়েছিলেন ইমরান। এবার পুরো দেশের নেতৃত্ব দেওয়ার অপেক্ষায় তিনি।
তবে ক্রিকেটের মাঠে দল পরিচালনা এবং দেশ চালানো কখনোই এক ব্যাপার নয় বলে ইমরানকে স্মরণ করে দিয়েছেন ভারতের সাবেক তারকা ক্রিকেটার আজহার উদ্দিন।
ইমরান খানকে অভিনন্দন জানিয়ে একসময়ের মাঠের প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের সাবেক তারকা ক্রিকেটার মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন বলেছেন, ‘আমি অভিনন্দন জানাচ্ছি তাকে। পাশাপাশি, অনুজ ক্রিকেটার এবং রাজনীতিবিদ হিসেবে একটা কথা মাথায় রাখার পরামর্শ দেব। একটা ক্রিকেট দলের ক্যাপ্টেন্সি করা আর দেশকে নেতৃত্ব দেওয়া কিন্তু এক নয়। ইমরান নিজে ক্রিকেট জীবনে খুব ভালো ক্যাপ্টেন তো ছিলেন। দারুণ বোলারও ছিলেন। বিশেষ করে তার ইনডিপারগুলো খেলতে ব্যাটসম্যানেরা সব চেয়ে সমস্যায় পড়ত। প্রধানমন্ত্রী ইমরানের দিকে কিন্তু এ রকম অনেক মারাত্মক ডেলিভারি ধেয়ে আসবে। সেগুলোকে কী ভাবে উনি সামলান, সেটাই ঠিক করে দেবে তার ভাগ্য।’
আজহারউদ্দিন আরও বলেন, ‘আমি রাজনীতির মাঠের নেতা ইমরানের কথা বলতে পারব না। কারণ, ওই দিকটা আমি দেখিনি। মাঠে দাঁড়িয়ে প্রতিপক্ষ ক্যাপ্টেন হিসেবে তাকে দেখেছি। খুবই স্পোর্টিং ছিলেন। ইমরান আপসহীন প্রতিদ্বন্দ্বী হলেও কখনও সৌজন্য হারাননি। ভাল ইনিংস খেললে আমাকে অনেক বারই মাঠের মধ্যে অভিনন্দন জানিয়েছেন। শুধু আমাকে নয়, অনেক বারই দেখেছি ভারতের ক্রিকেটার সেঞ্চুরি করলে বা মাইলস্টোন পৌঁছলে ইমরান হাততালি দিয়েছেন বা এসে হাত মিলিয়ে গিয়েছেন।’
‘আমাদের সময়কার খুব জনপ্রিয় তারকা ছিলেন ইমরান। ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেটে স্মরণীয় এক চরিত্র। বিশ্ব ক্রিকেটে তার কথার ওজনও ছিল অনেক। তাই তার প্রশংসা পেলে তরুণ ক্রিকেটারদের ক্যারিয়ারে নতুন দিগন্ত খুলে যেত। প্রতিপক্ষ দলের হলেও তরুণদের প্রশংসা করা থেকে কখনও পিছিয়ে থাকেননি।
১৯৯২ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আমি ইমরানকে পিটিয়ে রান করেছিলাম। তার পরে কিন্তু কটাক্ষ বা স্লেজিং করতে দেখিনি তাকে। বরং প্রশংসাই করেছিলেন।’
আজাহার উদ্দিন আরও বলেন, ‘পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ইমরানকে পরিচালনা করবে কিনা, সেই সব তর্কে এত দূরে বসে মন্তব্য করা কঠিন। তবে একটা কথা বলব, ক্রিকেট মাঠে দাঁড়িয়ে ইমরান তার নিজের সিদ্ধান্ত নিতেন। কারও সাহস হতো না মাঝখানে আসার। প্রধানমন্ত্রী ইমরান নিজের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন কিনা, তা দেখার অপেক্ষায় থাকলাম। যদি পারেন, তবে পাকিস্তানের মানুষ ক্রিকেটের মতোই রাজনীতিতে দারুণ একজন ক্যাপ্টেন পাবে।’