এক মাসের
টানা ছুটির পর সবাই শুধু নিজেদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে ব্যস্ত। ঈদের আনন্দের সঙ্গে বিশ্বকাপ ফুটবল, সব মিলিয়ে জবি ক্যাম্পাস যেন এক অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি
হারুনুর রশিদ
ঈদ মানে হাসি-খুশি, ঈদ মানে শত প্রাণের মিলনমেলা। ঈদের আনন্দকে সবার মধ্যে ভাগাভাগি করে নিতে ক্যাম্পাস ছেড়ে সবাই ছুটে চলে আপন জনের কাছে, নিজ এলাকায়। যেখানে তাদের ছোট থেকে বেড়ে উঠা।
ঈদের দীর্ঘ একমাস ছুটি শেষে প্রাণের ক্যাম্পাস জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় মেতেছে প্রাণের মিলন মেলায়। শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ ফিরেছেন প্রাণের ক্যাম্পাসে। জবির গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো ফিরে পেয়েছে তার আপন প্রাণ যা কয়েকদিন আগে ছিল জনমানব শূন্য। উক্ত স্থানগুলো আবারো জমে উঠেছে গল্প, গান আর দুষ্টু -মিষ্টি আড্ডায়।
জবির শান্ত চত্বরে দেখা মিলল জোবায়ের, জুকাল, তাছলিমা, নিশাদ ও মিনারের। গল্পের এক পর্যায়ে জুকাল বলল, এবার ঈদটা খুব ভালো কেটেছে। বিশেষ করে ঈদের দিন নিজের হাতে রান্না করা পায়েস আর বিরিয়ানি পরিবারের সকলে মিলে মজা করে খেয়েছি। জোবায়ের বলল, এবারের ঈদটা আমার জীবনের সেরা ঈদগুলোর মধ্যে একটা। কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত, বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকতসহ আরো অনেক যায়গায় ঘুরেছি। তবে এত আনন্দের পরেও মনে একটা শূন্যতা ছিল ক্যাম্পাসের সবাইকে খুব মিস করেছি, শুধু চিন্তা করেছি কবে আবার ফিরে আসবো? আবার তোদের সাথে আড্ডা দিবো? এরা সবাই বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থী হলেও আড্ডার সময় সবাই একই। দেখে বোঝাই যায় না তারা বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টে পড়ে।
সন্ধায় লাইটের আলোতে জবি শহীদ মিনার ধারণ করে এক অপরূপ নৈসর্গিক দৃশ্য। এই সৌন্দর্যরূপ শিক্ষার্থীদেরকে মুগ্ধ করে তুলে। শহীদ মিনারের রোলিং এ একদল শিক্ষার্থীকে দেখা গেল গিটার হাতে মনের সুখে অপরাধী গান গাইতে। কেউ গায়ক কেউ দর্শক আবার কেউবা বাদ্যবাদক সব মিলিয়ে যেন একটা ব্যান্ড দল গান পরিবেশন করছে। এই দৃশ্য সকলের মনকেই আকর্ষিত করে।
জবি টিএসসি! এই যেন এক ভালবাসার নাম। টিএসসিতে চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে দিন শুরু করে জবিয়ানরা। ছুটিতে টিএসসি প্রাণণহীন হয়ে পড়ে ছিল। চায়ের কাপের টুং টাং শব্দ, খিচুড়ি, তেহারির পাতিলের ডুং ডাং শব্দ এবং চারদিকের হৈ চৈ প্রমাণ করে টিএসসি আবারো জেমে উঠেছে তার আপর রূপে। টিএসসিতে গিয়ে দেখা মিলল শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী সুমনের। ঈদের অভিজ্ঞতা প্রকাশ করতে গিয়ে সে বলে, ঈদের ছুটির দিনগুলো খুব ভাল কেটেছে স্কুল-কলেজের সকল বন্ধুদের সাথে দেখা হয়েছে, অনেক ঘুরাঘুরি করা হয়েছে। তবে ক্যাম্পাসের সবার কথা খুব মনে পড়েছে মনে হয়েছিল যদি সবাই একসাথে থাকতে পারতাম তাহলে ঈদ পূর্ণতা লাভ করতো।
জবির কাঁঠাল তলায় গিয়েও দেখা গেল একই দৃশ্য। আগের সেই আড্ডা, সেই হৈচৈ, সেই কোলাহলে মেতে আছে কাঁঠাল তলা। কাঁঠাল তলা কলা অনুষদ আর সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সামনে আবস্থিত। সব সময় ছায়া থাকায় এক অন্যরকম ঠান্ডা আবহাওয়া বিরাজ করে এখানে। তাই আড্ডা দেয়া,গল্প গুজব করার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রিয় স্থান হিসেবে বিবেচনা করা হয় জবি কাঁঠালতলাকে।
এ ছাড়াও জবি ক্যান্টিন, রফিক ভবনের নিচ তলা, বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনগুলোর অফিস সবগুলো স্থানই মেতেছে ঈদ আনন্দে। ক্যাম্পাসে ডুকলেই মনে হয় ঈদের আমেজ শেষ হয়েও হলো না শেষ। এক মাসের টানা বিরতির পর সবাই শুধু নিজেদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে ব্যস্ত। ঈদের আনন্দ সাথে বিশ্বকাপ ফুটবল ২০১৮ সব মিলিয়ে জবি ক্যাম্পাস যেন এক অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি।