যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভালোবাসায় সিক্ত হলেন প্রবাসী কবি গীতিকার, সুরকার ও বীর মুক্তিযোদ্ধা নিখিল কুমার রায়। রোববার সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের একটি মিলনায়তনে প্রায় ২০টি সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে কবি নিখিল কুমার রায়কে সংবর্ধনা দেয়া হয়।
এ সময় প্রবাসীদের ভালোবাসা পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি। প্রবাসী নাট্যকার, লেখক ও সংগঠক খান শওকতের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত বাংলাদেশের প্রখ্যাত চিত্র পরিচালক কাজী হায়াত এবং বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন যথাক্রমে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠশিল্পী রথীন্দ্রনাথ রায় ও শহীদ হাসান।
এছাড়া সঙ্গীতজ্ঞ মুত্তালিব বিশ্বাস, প্রবীণ সাংবাদিক ও গীতিকার জীবন চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল খান আনসারী, ওয়ার্ল্ড চিল্ড্রেন অর্গানাইজেশন কচিকণ্ঠের চেয়ারম্যান হেমায়েত হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা নূর এ আজম বাবু, বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মশিউর রহমান ও কলামিস্ট প্রদীপ মালাকার বক্তব্য রাখেন।
সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কলামিস্ট সিতাংশু গুহ, কলামিস্ট ড. টমাস দুলু রায়, সাহিত্য একাডেমির পরিচালক মোশাররফ হোসেন, স্বদেশ ফোরামের সভাপতি অবিনাশ আচার্য্য, মানবাধিকার কমিশনের প্রধান জনার্ধন চৌধুরী, শিল্পকলা একাডেমির সভাপতি মনিকা রায়, তারার আলোর সভাপতি মিনা ইসলাম, গাঙচিল সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদের উপদেষ্টা মো. আকতার হোসেন, হিউম্যান নেটওয়ার্কের মো. লিয়াকত আলী, বাংলাদেশ সোসাইটির কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলী প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন, জীবদ্দশায় বাংলাদেশের কবি সাহিত্যিকরা মূল্যায়িত হন না, সংবর্ধনা পান না, তাদেরকে মূল্যায়ন করা হয় মৃত্যুর পর। এটা কাম্য নয়। কবি নিখিল কুমার রায়কে জীবদ্দশায় মূল্যায়ন করার জন্য গুণীজন সংবর্ধনা পরিষদ যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তা প্রশংসার দাবি রাখে।
বক্তারা আরও বলেন, আমরা অনেকেই অনেক কাজ করে থাকি, আমাদের মৃত্যুর পর অনেক কিছুই হারিয়ে যাবে, তবে লেখনী রয়ে যাবে। বিশেষ করে গান বেঁচে থাকবে বহুকাল। কবিতা-গল্প বা উপন্যাস এসব যতদিন বেঁচে থাকবে মানুষের মনে তার চেয়ে গান বেঁচে থাকবে অনেকদিন। শরৎ চন্দ্র, বিমল মিত্র, মীর মোশাররফ হোসেন এরা কি বেঁচে আছেন। গান না লিখলে রবীন্দ্রনাথ বা নজরুলও হারিয়ে যেতেন। কবি নিখিল কুমার রায়ের লেখা গান নিয়ে কিছু কাজ করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন অনেকেই। আগামী ২১ শের বইমেলায় কবি নিখিল কুমার রায়ের লেখা গান নিয়ে একটা বই প্রকাশ করারও ঘোষণা দেন বক্তারা।
জন্মভূমি পত্রিকার সম্পাদক রতন তালুকদার, জনতার কণ্ঠ পত্রিকার সম্পাদক সামশুল আলম, সাংবাদিক সাবেদ সাথী, বঙ্গবন্ধু থিয়েটারের ডা. নার্গিস রহমান, মুন্সিগঞ্জ বিক্রমপুর সমিতির মো. শাহাদাত হোসেন, গাঙচিল থিয়েটারের মৌসুমী রহমান, চারুকণ্ঠের ফারজিন রাকিবা এবং বাংলাদেশ মন্দিরের প্রধান পুরোহিত শাস্ত্রজ্ঞ শংকর পারিয়াল ও রুনা পারিয়াল এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
ওয়ার্ল্ড চিল্ড্রেন অর্গানাইজেশন কচিকণ্ঠের চেয়ারম্যান হেমায়েত হোসেন কবি নিখিল কুমার রায়ের পরপর ৫টি বই প্রকাশের প্রতিশ্রুতি দেন।
অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন কণ্ঠশিল্পী কৌশলী ইমা ও মনিকা দাস। কবিতা আবৃত্তি করেন এলিজা বাহার। তবলায় সংযোগ করেন ঋত্বিক পারিয়াল।
অনুষ্ঠানে ২০টি সংগঠনের পক্ষ থেকে কবি নিখিল কুমার রায় এর হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন প্রধান অতিথি কাজী হায়াত। প্রত্যেক সংগঠনের পক্ষ থেকে কবিকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। বঙ্গবন্ধু থিয়েটারের পক্ষ থেকে কবিকে বিশেষ সম্মাননা প্রোক্লেমেশান প্রদান করা হয়।
কবি নিখিল কুমার রায়ের সংবর্ধনায় অংশ নেয়া সংগঠনগুলো হলো যথাক্রমে- বঙ্গবন্ধু থিয়েটার, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল, যুক্তরাষ্ট্র, মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদ, যুক্তরাষ্ট্র, গাঙচিল সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদ, স্বদেশ ফোরাম, শিল্পকলা একাডেমি, প্রজন্ম ‘৭১, যুক্তরাষ্ট্র, সৌখিন নাট্যগোষ্ঠী যুক্তরাষ্ট্র, চারুকণ্ঠ, গোপালগঞ্জ ফাউন্ডেশন অব নর্থ আমেরিকা, গোলাপগঞ্জ সমিতি, হিউম্যান নেটওয়ার্ক কর্পোরেশন, প্রবাসী ফাউন্ডেশন ইউএসএ, এশিয়ান আমেরিকান ফ্রেন্ডসশিপ সোসাইটি, বাংলাদেশ কমিউনিটি অব আপস্টেট নিউইয়র্ক, বাংলাদেশ ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন ইউএসএ, তারার আলো উইমেনস সোসাইটি ইউএসএ, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন ইউএসএ, ইন্ক গাঙচিল থিয়েটার এবং ওয়ার্ল্ড চিল্ড্রেন অর্গানাইজেশন কচিকণ্ঠের আসর।