এ এমন কষ্ট, চাইলেই কি ভুলে যাওয়া সম্ভব?


ফাইনালের আগে ইভান রাকিতিচ বলেছিলেন, আমরা মাঠে শুধু ১১ জন খেলব না, মাঠে থাকবে ৪৫ লাখ সমর্থক। আসলে ৪৫ লাখ সমর্থক তো মাঠে থাকা সম্ভব নয়। ক্রোয়েশিয়ার জনসংখ্যাই ৪৫ লাখ। তবে যে দলটি এত অল্প জনসংখ্যার প্রেরণা নিয়েই প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালের মঞ্চে, তাদের পেছনে থাকা বাদ দিয়ে দেশের একজন মানুষও নিশ্চয়ই জরুরী কোনো কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকতে পারেন না!

ক্রোয়েশিয়ার রূপকথার অপেক্ষায় ছিলেন এই ৪৫ লাখ মানুষ। বিশ্বজুড়ে ধরলে হয়তো সংখ্যাটা হিসেব করা কঠিন হবে। শেষপর্যন্ত তাদের সবাইকেই পুড়তে হলো না পাওয়ার বেদনায়। এত কাছে এসেও যে শিরোপাটা ছুঁয়ে দেখা হলো না!

লুঝনিকি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনালে ফ্রান্সের কাছে ৪-২ গোলে হেরে স্বপ্নভঙ্গ ক্রোয়েশিয়ার। পুরো ম্যাচে দাপট দেখিয়ে খেললেও একটা সময় এসে নিশ্চিত পরাজয়ের মুখে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল ক্রোয়াটরা। হার নিশ্চিত দেখে শেষ বাঁশি বাজার আগেই ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছিলেন মাঠে থাকা ১৫ হাজার ক্রোয়াট সমর্থক। বাঁশি বাজার পর সেই কান্না রূপ নেয় বিলাপে।

বাঁশি বাজার পরই মাঠে বসে পড়েন ক্রোয়েশিয়ার খেলোয়াড়রা। চোখে মুখে রাজ্যের হতাশা, চোখে জল। তবে শক্ত ছিলেন কোচ জ্লাতকো দালিচ। যার হাত ধরে এতদূর আসা, সেই কোচ সব আবেগকে বাধ দিয়ে সহানুভূতি জানাচ্ছিলেন শিষ্যদের। একটা সময় তো জটলা বানিয়ে সবাইকে সাহসও দিতে দেখা যায়। হয়তো বলছিলেন-‘তোমরা যা করেছ, তাতেই আমি খুশি।’

ফাইনালে দলকে উৎসাহ দিতে মাঠে উপস্থিত ছিলেন ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট কিতারোভিচ। যিনি পুরো টুর্নামেন্টজুড়েই সাহস জুগিয়েছেন দলকে। হারের পরও দলের খেলোয়াড়দের জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা দিয়েছেন সুন্দরী এই ক্রোয়াট প্রেসিডেন্ট।

তবে এত সমর্থন-সহানুভূূতির মাঝেও হতাশা যেন কাটছিল না মদরিচ-রাকিতিচ-মানজুকিচদের। এ এমন কষ্ট, চাইলেই কি ভুলে যাওয়া সম্ভব?