আজ গোল্ডেন বুটের জন্য কেইন-লুকাকুর লড়াই

আজই নির্ধারিত হতে পারে গোল্ডেন বুট পাচ্ছেন কে? হ্যারি কেইন ৬ গোল করে সোনার জুতা নিজের করে নিয়েছেন অনেকটা। ৪ গোল করে তাঁর পেছনে রোমেলু লুকাকু। জোড়া গোলে কেইনের পাশে বসে জুতা জোড়ায় ভাগ বসানোর দাবিদারও এই বেলজিয়ান। ফাইনালে একটি হ্যাটট্রিকে আন্তোয়ান গ্রিয়েজমান বা কিলিয়ান এমবাপ্পে বদলে দিতে পারেন অঙ্ক। তবে ২০০২ সালের পর থেকে বিশ্বকাপে ৬ গোলের বেশি করতে পারেননি কেউ। ফেভারিট তাই কেইনই।

কেইনের ইংল্যান্ড ও লুকাকুর বেলজিয়াম ছিল একই গ্রুপে। ইংল্যান্ড ২-১ গোলে তিউনিসিয়াকে হারিয়ে শুরু করে বিশ্বকাপ। দুটি গোলই কেইনের। এরপর পানামাকে গোলবন্যায় ভাসানো। ৬-১ গোলের জয়ে হ্যাটট্রিক কেইনের। দুই ম্যাচে ৫ গোল! জাস্ট ফন্টেইনের এক বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ১৩ গোলের রেকর্ড ভাঙবেন কি না, আলোচনা শুরু হয়ে যায় ব্রিটিশ মিডিয়ায়। সেটা হয়নি।

বেলজিয়ামের বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে বিশ্রামে কেইন। নক আউটে ফিরে গোল আবারও। কলম্বিয়ার বিপক্ষে ১-১ সমতার ম্যাচে পেনাল্টি থেকে ইংল্যান্ডের একমাত্র গোলটি তাঁর। কোয়ার্টার ফাইনাল আর সেমিফাইনালে নিষ্প্রভ ইংলিশ অধিনায়ক। আটকে আছেন তাই ৬ গোলে। কেইনের প্রেরণা হতে পারেন জাস্ট ফন্টেইন। ১৯৫৮ বিশ্বকাপ তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে পশ্চিম জার্মানির বিপক্ষে ৪ গোল করেছিলেন এই ফরাসি। কেইন কি পারবেন আরো একটি হ্যাটট্রিক করতে।

লুকাকুর বিশ্বকাপও শুরু জোড়া গোলে। পানামার বিপক্ষে ৩-০ গোলে জেতা ম্যাচে লক্ষ্য ভেদ করেন দুইবার। বিরতির আগে গোল পায়নি দুই দল। তবে ৬৯ ও ৭৫ মিনিটে দুইবার বল জালে জড়ান লুকাকু। তিউনিসিয়ার জালেও বল পাঠান দুইবার। এরপর কোচ তাঁকে তুলে না নিলে গোল বাড়তে পারত আরো। এমন দুরন্ত শুরুর পরও নক আউটে গোলহীন লুকাকু। তবে ব্রাজিলের বিপক্ষে ছিলেন দ্বিতীয় গোলের কারিগর। লুকাকুর অসাধারণ পাস পেয়েই ডি-বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া বুলেট শটে গোল কেভিন দে ব্রুইনের। এরপর বলেছিলেন, ‘গোল করা হোক বা গোল করানো হোক, দলকে সাহায্য করতে চাই আমি।’

সেমিফাইনালে সেটাও পারেননি লুকাকু। ফ্রান্সের বিপক্ষে ছিলেন বোতলবন্দি। ফরাসিদের রক্ষণদুর্গ ভাঙতে পারেননি লুকাকু। ইংলিশ সাবেক ফুটবলার রিও ফার্ডিনান্ড বিবিসিতে একহাতই নিয়েছিলেন তাঁকে, ‘লুকাকুকে নিশ্চল লেগেছে। মনে হচ্ছিল চেলসির পুরনো দিন ফিরে এসেছে ওর। নড়াচড়া করতে পারছে না।’ ব্যর্থতাটা আজ নিশ্চয়ই কাটাতে চাইবেন বেলজিয়ামের হয়ে সর্বোচ্চ গোল করা এই তারকা।

হ্যারি কেইনকে নিয়ে গুঞ্জন আছে, সেমিফাইনালে হয়তো ফিট ছিলেন না শতভাগ। এ নিয়ে অবশ্য বিতর্ক বাড়াতে চাননি ইংলিশ অধিনায়ক। সেমিফাইনালে হারটা পোড়ালেও ২০২২ বিশ্বকাপ নিয়ে ভাবতে শুরু করেছেন তিনি, ‘সবাইকে বলেছি স্বপ্ন দেখা বন্ধ না করতে। তাহলে আরো একটা বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল খেলতে অপেক্ষা করতে হবে ২০ বছর।

এই দলের সামর্থ্য আছে আরো ভালো করার।’ এবার ফাইনাল অভিযান ব্যর্থ হলেও অন্তত গোল্ডেন বুট জিতে দেশে ফেরা সম্ভব কেইনের। ২০০২ বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ৮ গোল করে সোনার জুতো জিতেছিলেন ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি রোনালদো। এর পর থেকে ৬ গোলের বেশি করতে পারেননি কেউ। কেইন পারবেন কি গোল বাড়িয়ে নিয়ে সোনার জুতা নিশ্চিত করতে?