পাকিস্তানে বোমায় রক্তাক্ত নির্বাচনী সভা, নিহত ১৩২

আগামী ২৫ জুলাইয়ের পার্লামেন্ট নির্বাচনের আগে রক্তাক্ত হলো পাকিস্তান। একইদিনে নির্বাচনী জনসভায় দু’টি পৃথক বোমা হামলায় অন্তত ১৩২জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে দুই শতাধিক। নিহতদের মধ্যে একজন প্রার্থীও রয়েছেন। একটি হামলা হয় বেলুচিস্তানের কোয়েটায় এবং অপরটি হয় আফগান সীমান্তের কাছে বান্নুতে। গতকাল শুক্রবার হামলা দু’টি চালানো হয়। খবর ডন ও বিবিসি’র

গতকাল কোয়েটার মাস্তুং জেলায় চালানো হামলার দায়িত্ব স্বীকার করেছে আইএস। গতকাল নিজস্ব মিডিয়া আমাক নিউজ এজেন্সির মাধ্যমে জঙ্গি গোষ্ঠীটি দায়িত্ব স্বীকার করে। এতে ১২৮ জন নিহত হয়েছে। নির্বাচনী জনসভায় প্রায় হাজারখানেক মানুষ জড়ো হয়েছিল। ওই র্যালিতেই পরপর দু’টি জোরালো বিস্ফোরণ ঘটে। বেলুচিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আগা উমর বানগুলজাই হতাহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বেলুচিস্তানের সিভিল ডিফেন্স ডিরেক্টর আসলাম তারিন জানান, বিস্ফোরণ ঘটানোর জন্য ১০ কেজি বিস্ফোরক এবং বল বিয়ারিং ব্যবহার করা হয়েছে। প্রদেশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জনসভার ভেতরেই এক ব্যক্তি নিজের শরীরে বাধা বোমার বিস্ফোরণ ঘটান।

মাস্তুংয়ে গতকালের হামলায় যতো মানুষের প্রাণহানি হয়েছে, পাকিস্তানে গত এক বছরেরও বেশি সময়েও একক কোন হামলায় এতো ব্যাপক সংখ্যক মানুষের হতাহত হওয়ার ঘটনা ঘটেনি। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন বেলুচিস্তান প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনের প্রার্থী সিরাজ রাইসানি। তিনি বেলুচিস্তান আওয়ামী পার্টির একজন প্রার্থী ছিলেন। বেলুচিস্তানের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী নবাব আসলাম রাইসানি তার ভাই। দুই ভাই একই আসন (পিবি-৩৫) থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আসলাম রাইসানি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে লড়াই করছেন। অন্যদিকে গতকাল সকালেই আফগান সীমান্তের কাছে খাইবার পাখতুনখাওয়ার বান্নুতে মুত্তাহিদা মজলিস-এ-আমাল (এমএমএ) এর নির্বাচনী জনসভায় বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এমএমএ প্রার্থী আকরাম খান দুরানি অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান। তবে ওই বিস্ফোরণে ৪ জন নিহত হয়।

সর্বশেষ এই হামলার ঘটনা পাকিস্তানে একেবারেই অপ্রত্যাশিত ছিল। সোনাবাহিনী একদিকে যেমন দাবি করছে যে তারা জঙ্গিদের তাড়িয়ে দিয়েছে, তেমনি এরকম একটি হামলার ব্যাপারে কারো কাছ থেকে কোন হুমকিও ছিল না। এর আগে ২০১৩ সালের নির্বাচনের আগে জঙ্গিরা আগাম হুমকি দিয়েছিল। ফলে তখন কিছু কিছু রাজনৈতিক দল খুব কমই প্রচারণা চালিয়েছিল। ওই দলগুলোই আবার আক্রমণের লক্ষ্য হয়ে উঠেছে বলে মনে করা হচ্ছে। আর আক্রমণকারীদের উদ্দেশ্য হচ্ছে, এসব দল যাতে নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে না পারে। এই হামলার পর নির্বাচনের আগে নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি হতে পারে।