পারিবারিক সমস্যায় জর্জরিত মাশরাফি


‘মরার উপর খাঁড়ার ঘাঁ’- অ্যান্টিগা টেস্টে চরম ভরাডুবির পর টিম পারফরম্যানসে যারপরনাই অসন্তুষ্ট নতুন কোচ স্টিভ রোডস। পারফরম্যানস প্রত্যাশা অনুযায়ী না হওয়া ও আচরণগত সমস্যার কারণে দেশে ফেরত পাঠানো হচ্ছে পেসার রুবেল হোসেনকে।

সবমিলিয়ে সাকিব বাহিনীর এক ‘হ-য-ব-র-ল’ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজে। এমন সঙ্গিন অবস্থার মধ্যেই ১২ জুলাই শুরু হবে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট। শেষ টেস্টের আগে আরো খারাপ খবর আছে। স্ত্রীর অসুস্থতায় ওয়ানডে সিরিজ নাও খেলতে পারেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা।

স্ত্রী সুমি অসুস্থ প্রায় সপ্তাহদুয়েক ধরেই। প্রচণ্ড জ্বর। জানা গেছে রক্তে এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া ধরা পড়েছে। সেই ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধে ১০টি ইনজেকশন পুশ করার কথা বলেছেন চিকিৎসকরা। রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে রেখে সেই অপারেশন চলছে।

মাশরাফির ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, সাত ইনজেকশন দেয়ার পর স্ত্রীর উল্লেখযোগ্য উন্নতি ঘটলে দশটি ইনজেকশন নাও লাগতে পারে। এরকম অবস্থায় মাশরাফি পাঁচ-ছয়দিন যাবত অনুশীলনেও আসতে পারছেন না। প্রায় সার্বক্ষণিকভাবে অসুস্থ স্ত্রীর পাশেই থাকতে হচ্ছে তাকে। যেহেতু ছেলে-মেয়েরও বয়স খুব কম, তাই তাদেরও সামলাতে হচ্ছে। সবমিলিয়ে পারিবারিক সমস্যায় জর্জরিত মাশরাফি।

এমতাবস্থায় তার পক্ষে কি ওয়ানডে সিরিজে খেলা সম্ভব? মাশরাফি কি আদৌ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে খেলবেন? এই প্রশ্ন এখন ক্রিকেটপাড়ায়। আজ (মঙ্গলবার) রাতে এমন প্রশ্নের মুখোমুখি হয়ে হ্যাঁ-না পরিষ্কার কিছু বলতে পারেননি বাংলাদেশ দলের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু।

তার কথা, ‘ভীষণ চিন্তায় পড়ে গেছি। মাশরাফি ওয়ানডে সিরিজ খেলতে পারবে কিনা তা নিয়ে রয়েছে যথেষ্ঠ সংশয়। তার স্ত্রীর বর্তমান যে অবস্থা তাতে খেলার সম্ভাবনা কম বলেই মনে হচ্ছে। আমি আজ মাশরাফির সাথে এ নিয়ে খোলাখুলি কথা বলেছি। সে তার স্ত্রী অসুস্থতা ও পুরো পরিবারের অবস্থা তুলে ধরেছে। বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর ও মানবিক। একদিকে স্ত্রী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে, অন্যদিকে দুটি ছোট বাচ্চা (এক ছেলে, এক মেয়ে)। দুইদিকেই দেখভাল করতে হচ্ছে মাশরাফিকে। অসুস্থ স্ত্রীর চিকিৎসার ব্যাপারে প্রতিনিয়ত চিকিৎসকদের শলা পরামর্শের পাশাপাশি সন্তানদেরও দেখভাল করতে হচ্ছে। এরকম অবস্থায় তার খেলতে যাওয়ার সম্ভাবনা খুব কম।’

তবে এখনো দেশসেরা পেসার মাশরাফির খেলার ব্যাপারে আশা ছাড়েনি বাংলাদেশ দল। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তার জন্য অপেক্ষা করা হবে বলা জানান প্রধান নির্বাচক নান্নু। তিনি বলেন, ‘আমরা এখনো পুরোপুরি আশা ছাড়িনি। এখনো মাশরাফির যেতে তিনদিন (১৩ তারিখ মধ্যরাতে দেশ ছাড়ার কথা মাশরাফির) বাকি আছে। আমরা ১২ জুলাই পর্যন্ত অপেক্ষা করবো। তার স্ত্রীর অবস্থার অলৌকিক ও অতি নাটকীয় উন্নতি ঘটলেই কেবল মাশরাফি যেতে পারবে। নাহয় আমাদের বিকল্প খুঁজতে হবে। তবে আমরা আরও ৪৮ ঘণ্টা অপেক্ষা করবো। এর মধ্যে যদি তার স্ত্রীর অবস্থা ভালো হয়ে যায় এবং চিকিৎসকরা আশ্বস্ত করে, তবেই কেবল ওয়েস্ট ইন্ডিজ যেতে পারবে মাশরাফি, অন্যথায় নয়।’