ফুটবল খেলা দেখে- অনেকেই হয়তো জানেন না, সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ছিলেন একজন প্রতিভাবান ফুটবল খেলোয়াড়। তিনি তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ফুটবল দলের অধিনায়কও ছিলেন। দলের হয়ে দেশের সীমানা পেরিয়ে ইরানেও খেলতে গিয়েছিলেন এরশাদ।
সম্প্রতি গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বলেন, লেফটেন্যান্ট পদে থেকেই সেনাবাহিনীর পূর্ব পাকিস্তান ফুটবল দলের অধিনায়ক ছিলাম আমি। সাত থেকে আটবার দল নিয়ে পশ্চিম পাকিস্তানে খেলতে গেছি। তখন পাকিস্তানে যেতে জাহাজে আট থেকে ১০ দিন লেগে যেত। সমুদ্রে প্রচণ্ড ঢেউ হতো, তখন অনেক খেলোয়াড় খেতে পারত না। অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ত, বমি করত। জাহাজে আমরা খেতেই পারতাম না, তাই ভাত খেতে শুঁটকি ও মরিচ নিয়ে যেতাম। জাহাজ থেকে নেমে সবারই অসুস্থতায় ওজন কমে যেত। তাই একটি ম্যাচও জিততে পারিনি পশ্চিম পাকিস্তানিদের সঙ্গে।
‘কিন্তু খেলায় নৈপুণ্য আর নেতৃত্বের কারণে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ফুটবল দলে অধিনায়ক করা হয় আমাকে। পাকিস্তান ফুটবল দল নিয়ে একবার ইরানে গিয়েছিলাম খেলতে, কিন্তু তখন সেনাবাহিনীতেও বৈষম্য ছিল। বাঙালি হওয়ার কারণে ইরানের মাঠে আমাকে সাইড লাইনে বসিয়ে রাখা হয়েছিল।’
এই ফুটবল ঘিরেই প্রথমবার কোনো তরুণী তার প্রেমে পড়েন বলে জানান সাবেক সেনাপ্রধান এরশাদ। পরে তিনি নিজেও সেই প্রেমে জড়িয়ে যান। অবশ্য কলেজ জীবনের সেই প্রেম কাঙ্ক্ষিত পরিণতি পায়নি।
তিনি বলেন, সময়টা ছিল রংপুরে কারমাইকেল কলেজে পড়ার সময়ে। তিনি তখন রংপুরের তুখোড় ফুটবল খেলোয়াড়।
এরশাদ বলেন, তার ফুটবল খেলায় মুগ্ধ হয়ে এক তরুণী তার প্রেমে পড়েন। তিনি নিজেও জড়িয়ে যান সেই প্রেমের বাঁধনে। সেই ভালোবাসার নারীকে বিয়ের প্রস্তাবও দেন। কিন্তু ওই তরুণী এরশাদকে বলেন, ‘তোমার (এরশাদের) উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ আছে। বিয়ে করলে সেটা নষ্ট হবে।’ তিনি বলেন, ‘আসলে তখন বিয়ে করে ফেললে আমি আজকের এরশাদ হতে পারতাম না।’
তবে প্রথম প্রেমের কথা কখনো তিনি ভুলতে পারেননি। সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বলেন, তিনি সে নারীর খোঁজ রাখতেন। বছর পাঁচেক আগে তিনি মারা গেছেন।
দেশের ফুলবল নিয়ে এরশাদ বলেন, আমাদের ফুটবল তো এখন নেই। এখন ক্রিকেট নিয়েই চিন্তাভাবনা চলছে। ফুটবলের জন্য সিনথেটিক টার্ফ নেই আমাদের দেশে। সিনথেটিক টার্ফ মেইনটেইন করা খুব কঠিন। কারণ আমাদের দেশে অনেক বৃষ্টি হয়। কয়েকটি সিনথেটিক টার্ফ তৈরি করা গেলে আমাদের ফুটবল এগিয়ে যাবে।