হ্যারি কেইন। ইংল্যান্ডের অধিনায়ক। দলটার সফলতার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছেন। সুইডেনকে হারিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করার পর সামারা অ্যারিনার মিক্সডজোনে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে এক সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎকারে বললেন নানান কথা।
বাংলাদেশ প্রতিদিন : দারুণ একটা জয়ের জন্য অভিনন্দন।
হ্যারি কেইন : ধন্যবাদ।
বাংলাদেশ প্রতিদিন : ইংল্যান্ড দল নিয়ে কিছু বলুন। এই দলটার সফল হওয়ার রহস্যটা কী?
হ্যারি কেইন : আমাদের সবচেয়ে ভালো দিক হলো, দলটার সবাই সবাইকে খুব ভালোভাবে বুঝতে পারে। সাইকোলজিক্যাল আন্ডারস্ট্যান্ডিংটা আমাদের মধ্যে দারুণ। একটা দলের ভালো করার জন্য এই বিষয়টা খুব জরুরি। মাঠে আমাদের উপস্থিতিটা দেখুন। নিখুঁত পাসিং দেখুন। ম্যাচের ঠিক কোন সময়টাতে আমাদের কী করতে হবে, এটা সবাই একই সঙ্গে অনুধাবন করতে পারি। তাছাড়া আমাদের দলে দারুণ কিছু ফুটবলার আছে। ইয়াঙ, স্টারলিং, ডিলে আলি, লিনগার্ড, স্টোনসসহ আরও অনেকে। ওদের প্রত্যেকেই নিজেদের স্থানে অন্যতম সেরা। সবার মধ্যেই আছে দারুণ কিছু করার প্রেরণা।
বাংলাদেশ প্রতিদিন : বিশ্বকাপের আগে ইংল্যান্ডকে কেউ ফেবারিট ভাবেনি। অথচ আপনারা সেমিতে…
হ্যারি কেইন : দেখুন, বিশ্বকাপের ফেবারিট হিসেবে খেলতে নামা একটা বিরাট চাপের ব্যাপার। জার্মানির মতো দল এই চাপের কাছেই হেরে গেল। আমাদের কেউ ফেবারিট ভাবেনি, এটা ছিল আমাদের জন্য ভালো দিক। চাপমুক্ত হয়ে খেলতে পেরেছি আমরা।
বাংলাদেশ প্রতিদিন : ইংলিশ সমর্থকদের নিয়ে কিছু বলুন…
হ্যারি কেইন : ইংলিশ সমর্থকরা সব সময়ই দারুণ। তারা আমাদের অন্যতম প্রেরণা। মাঠে এবং মাঠের বাইরে সত্যিই তারা অসাধারণ। আমি তাদেরকে ধন্যবাদ দিতে চাই। এভাবেই আমাদের সমর্থন করবে বলে আশা করি। সবাই মিলেই আমরা ভালো কিছু করতে চাই।
বাংলাদেশ প্রতিদিন : আপনারা এখন সেমিফাইনালে। বিশ্বকাপ শিরোপা জিতবেন বলে বিশ্বাস করেন?
হ্যারি কেইন : বিশ্বকাপ জিতব বলেই তো খেলতে এসেছি। তবে একটা কথা মনে রাখতে হবে সব সময়। এখানে অন্য দলগুলোও কিন্তু বিশ্বকাপ জিততেই এসেছে। তাদের যোগ্যতাকে অস্বীকার করার উপায় নেই। তবে হ্যাঁ, সেমিফাইনালে উঠে আসার পর বিশ্বকাপ জয়ের সুযোগটা আমরা নিতে চাই। যদিও জানি, এখনো সম্ভাবনাটা ফিফটি-ফিফটি। এবারের বিশ্বকাপে দেখুন, কী দারুণ খেলল সবাই। ফেবারিটদের বিদায় করে দিল। বিশ্বকাপটা এবার ওপেন। এখানে কী যে হয়, বলা কঠিন।
বাংলাদেশ প্রতিদিন : আপনারা ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলেন। দল ভিন্ন হলেও সবাই একই লিগে। এটা কী কোনো ভালো দিক বলে মনে করেন?
হ্যারি কেইন : এটা একটা ভালো প্রশ্ন করেছেন। একই লিগে খেলাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার বলে মনে হয়। কারণ, এখানে আমাদের প্রতিনিয়তই দেখা হচ্ছে। একে-অপরের বিপক্ষে খেলতে নামছি। পরস্পরের মধ্যে বুঝা-পড়াটা ভালো হচ্ছে। সারা বছরই বলতে গেলে আমরা একে-অপরের খুব কাছাকাছি থাকছি। এটা খুব বড় বিষয়। মিউচ্যুয়াল আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়ের অন্যতম শর্তই হলো, একে-অপরের কাছাকাছি থাকতে হবে। আমরা সেই সুযোগটা পাচ্ছি।
বাংলাদেশ প্রতিদিন : গ্যারেথ সাউথগেটকে আপনি কিভাবে দেখেন?
হ্যারি কেইন : তিনি অনেকটা পিতার মতো। আমরা ভুল করলে তিনি ধমক দেন। ভালো করলে আদর করেন। ঠিক সময়ে ঠিক পরামর্শটা দিতে পারেন। তার পরিকল্পনার ওপর আমাদের পূর্ণ আস্থা থাকে। নিশ্চিন্তে আমরা সেই পরিকল্পনা ধরে এগিয়ে যাই। দেখুন, তার দেখানো পথ কিন্তু সব সময়ই সঠিক বলে প্রমাণ হয়েছে।
বাংলাদেশ প্রতিদিন : গ্যারি লিনেকারের পর আপনিই বিশ্বকাপে ইংলিশম্যান হিসেবে গোল্ডেন বুট জিততে পারেন…
হ্যারি কেইন : লিনেকার আমাদের ফুটবল ইতিহাসে এক অন্যতম নাম। তিনি ‘লিভিং লিজেন্ড’। তার সঙ্গে আমার তুলনাটা ঠিক চলে না। আর এখনো তো বিশ্বকাপটা শেষ হয়নি। গোল্ডেন বুট জয়ের তালিকায় আরও কয়েকজন আছেন। সুতরাং তুলনা করার প্রশ্নই তো আসে না। তাছাড়া গোল্ডেন বুট নিয়ে ভাবছি না। লক্ষ্য আমার একটাই ইংল্যান্ডকে বিশ্বকাপ উপহার দেওয়া।
বাংলাদেশ প্রতিদিন : ইংল্যান্ড কি বিশ্বকাপ জিতবে?
হ্যারি কেইন : (কিছুক্ষণ ভেবে। মৃদু হেসে) আমি বিশ্বকাপ জয়ের ব্যাপারে খুবই আশাবাদী।
বাংলাদেশ প্রতিদিন : আপনাকে ধন্যবাদ।
হ্যারি কেইন : আপনাকেও ধন্যবাদ।