রাশিয়াকে কাঁদিয়ে সেমিতে ক্রোয়েশিয়া

টানটান উত্তেজনাকর ম্যাচে টাইব্রেকারে রাশিয়াকে কাঁদিয়ে সেমিফাইনালে উঠেছে ক্রোয়েশিয়া।

গতকাল শনিবার রাতে সোচির ফিশৎ স্টেডিয়ামে ক্রোয়েশিয়ার আক্রমণ আর রাশিয়ার প্রতিআক্রমণে ম্যাচের শুরু থেকেই ছড়ায় রোমাঞ্চ। শেষ ষোলোতে দুই দলের নায়ক দুই গোলরক্ষককেই থাকতে হয় ব্যস্ত।

নির্ধারিত সময়ের খেলা ১-১ সমতায় শেষ হওয়ার পর ক্রোয়েশিয়া এগিয়ে যায় অতিরিক্ত সময়ের প্রথম ১৫ মিনিটের খেলায়। ১০১তম মিনিটে লুকা মদ্রিচের কর্নার থেকে উড়ে আসা বল ডোমাগজ ভিদা হেড করলে বল জালে জড়িয়ে যায়। রাশিয়া ব্যবধান ২-২ করে ১১৫তম মিনিটে। অ্যালান জাগোয়েভের সেটপিচ থেকে লাফিয়ে হেড করে বল জালে জড়িয়ে দেন মারিও ফিগুয়েরা ফার্নান্দেজ!

ম্যাচের ৩১তম মিনিটে দেনিস চেরিশেভ যে শট নিলেন তা চেয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করার ছিল না দেনিস সুবাসিচের। মাঝ মাঠ থেকে আর্তেম জুবাকে বল বাড়িয়ে সামনে এগোন চেরিশেভ, বল ফেরত পেয়ে ডি-বক্সের বাইরে থেকে উঁচু শটে ওপরের বাঁ কোণা দিয়ে জালে জড়ান। বিশ্বকাপে নিজের চতুর্থ গোলে উচ্ছ্বাসে মাতান গ্যালারি।

জবাব দিতে বেশি দেরি করেনি ক্রোয়েশিয়া। ৩৯তম মিনিটে বাঁ দিক থেকে মারিও মানজুকিচের দারুণ ক্রসে হেডে বল জালে পাঠান আন্দ্রেই ক্রামারিচ।

বিরতির পর লুকা মদ্রিচের পায়ে সূচনা হওয়া একের পর এক আক্রমণ রুখে যায় রাশিয়া। পক্ষে আসে ভাগ্যও। ৫৯তম মিনিটে ডি-বক্সের জটলায় বল পেয়ে ইভান পেরিসিচের নেওয়া নিচু শট গোলরক্ষক ইগর আকিনফিভকে ফাঁকি দিলেও পোস্টের ভেতরের অংশে লেগে ফিরে।

দ্বিতীয়ার্ধে রক্ষণাত্মক খেলে পাল্টা আক্রমণে জোর দেওয়া রাশিয়া প্রথম ভালো সুযোগটা পায় ৭২তম মিনিটে। বদলি হিসেবে নামা ফেদর স্মোলভের হেড ক্রসবারের উপর দিয়ে যায়।

শেষ পর্যন্ত ম্যাচটা অতিরিক্ত সময়ে নেওয়ার লক্ষ্য পূরণ হয় স্বাগতিকদের। তবে শেষ রক্ষা হয়নি; অতিরিক্ত সময়ের দশম মিনিটে কর্নারে দোমাগোই ভিদার লাফিয়ে ওঠা হেডে বল কয়েকজন ডিফেন্ডার আর আকিনফিভকে এড়িয়ে জড়ায় জালে।

অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধে রাশিয়াকে রোখা যায়নি। ১১৫তম মিনিটে ফ্রি-কিক থেকে লাফিয়ে হেডে সমতা ফেরান মারিও ফের্নান্দেস। ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে।

টাইব্রেকার:
প্রথম শটে রাশিয়ার হয়ে গোল করতে ব্যর্থ হন স্মোলভ। ক্রোয়েশিয়ার প্রথম শট নেন মার্সেলো ব্রোজোভিচ। তিনি গোল পান, ব্যবধান ১-০।
রাশিয়ার দ্বিতীয় শট নিতে আসেন অ্যালান জাগোয়েভ। তিনি গোল পান। ক্রোয়েশিয়ার দ্বিতীয় শট নেন মাতেও কোভাচিচ। তিনি গোল পেতে ব্যর্থ হন, ব্যবধান ১-১।
রাশিয়ার তৃতীয় শটে গোল পেতে ব্যর্থ হন মারিও ফিগুয়েরা ফার্নান্দেজ। ক্রোয়েশিয়া তৃতীয় শটে গোল পায়, ব্যবধান ২-১।
রাশিয়া চতুর্থ শটে গোল পায়। ক্রোয়েশিয়াও চতুর্থ শটে গোল পায়, ব্যবধান ৩-২।
রাশিয়া শেষ শটে গোল পায়। ক্রোয়েশিয়ার রাকিটিচ শেষ শটে জালের দেখা পেয়ে দলকে ৪-৩ ব্যবধানের জয় এনে দেন।