সৌদিতে প্রাণ গেল মামা-ভাগ্নের, এলাকায় শোকের মাতাম

সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার দুই যুবক নিহত হয়েছেন। নিহতরা হচ্ছেন উপজেলার চরলরেন্স এলাকার মৃত বদর আলমের ছেলে আরিফ হোসেন (২৭) ও তার আপন ভাগ্নে উপজেলার চরজগবন্ধু এলাকার হারুনুর রশিদের ছেলে মো. রুবলে (২৪)।
বুধবার (৪ জুলাই) ভোরে দেশটির জেদ্দা শহরে সংঘটিত এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় তারা মারা যান।

নিহত আরিফের ভগ্নিপতি মো. নুরনবী জানান, বুধবার ভোরে আরিফ ও রুবেলসহ ১৬ বাংলাদেশি কর্মী মিনিবাসে করে কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে তাদের বহনকারী বাসটির চাকা ফেটে গেলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কে আচড়ে পড়ে। এতে আরিফসহ পাঁচ বাংলাদেশি ঘটনাস্থলেই মারা যান। আহত হন রুবেলসহ আরও ১১ জন। পরে তাদেরকে উদ্ধার করে জেদ্দার বাদশাহ ফাহাদ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার সকালে রুবেলের মৃত্যু হয়।

রুবেলের সৌদি প্রবাসী চাচা লোকমান হোসেন মুঠোফোনে তাদেরকে আরিফ ও রুবেলের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন বলে নুরনবী।
বৃহস্পতিবার দুপুরে নিহত আরিফ ও রুবেলের বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, স্বজনদের কান্না আর আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠছে এলাকার পরিবেশ। প্রাণ প্রিয় স্বামীকে হারিয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন আরিফের স্ত্রী বনজা আক্তার (২৫)। মায়ের সঙ্গে বিলাপ করছেন তার দুই সন্তান মো. রাব্বি (৬) ও জান্নাত বেগম (৪)। অপরদিকে, আদরের সন্তান রুবেলকে হারিয়ে পাগল প্রায় মা রমিছা বেগম। ভাই হারানোর শোকে মুহ্যমান বোন মর্জিনা বেগম, ফাতেমা বেগম ও ছোট ভাই রোনাদ উদ্দিন।

এ সময় তাদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় তিন বছর আগে কর্মসংস্থানের উদ্দেশ্যে আরিফ সৌদি আরব যান। বোনের সংসারের অভাব ঘুচাতে চার মাস আগে নিজের কাছে নিয়ে যান ভাগিনা রুবেলকে। মামা-ভাগ্নে দু’জন একই কোম্পানিতে চাকুরি করতেন। চলতি বছরের শেষে ছুটি নিয়ে দেশে আসার কথা ছিলো আরিফের।

এখন নিহতদের স্বজনদের একটাই দাবি, যতদ্রুত সম্ভব সরকারি অর্থায়নে তাদের মরদেহ যেন দেশে আনার ব্যবস্থা করা হয়।