প্রধানমন্ত্রীর সামনে ছাত্রলীগ নেতাদের চিৎকার চেচামেচি! অতঃপর…

গণভবনে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে আগ্রহীরা গিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সামনে গিয়েই উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করেছেন বলে জানিয়েছেন সেখানে উপস্থিত আওয়ামী লীগ নেতারা। পরে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় থাকা এসএসএফ সদস্যরা তাদেরকে নিবৃত্ত করেন। বুধরাত সন্ধ্যা আটটা থেকে রাত সোয়া ১১টা পর্যন্ত ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশীরা গণভবনে অবস্থান করেন। সেখানে শেখ হাসিনা যেমন কথা বলেন, তেমনি আড়াইশর মতো পদপ্রত্যাশী বক্তব্য রাখেন।

প্রায় দুই মাস পেরিয়ে যাওয়ার পর ৪ মে ছাত্রলীগ নেতাদের তলব করায় তারা আশা করেন নতুন নেতার নাম ঘোষণার। আওয়ামী লীগ নেতারাও জানান, এই মত বিনিময়ে নতুন নেতাদের শেখ হাসিনা অন্যদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেবেন। তবে ছাত্রলীগের সংগঠনিক নেত্রী শেখ হাসিনা জানান, তিনি সব গুটিয়ে এনেছেন, তবে নাম ঘোষণা করতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে।

এর আগে ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশীদের বক্তৃতা পর্বে এক পর্যায়ে পক্ষ-বিপক্ষের সৃষ্টি হয় এবং মাইক কাড়াকাড়ি, হট্টগোল এবং এক পক্ষ আরেক পক্ষের সঙ্গে চিৎকার চেচামেচি করতে থাকে। এ সময় শেখ হাসিনা বিরক্তি প্রকাশ করে বলেন, ছাত্রলীগ নেতাদের আরও সুশৃঙ্খল হতে হবে। উপস্থিত আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতারা জানান, পদ-প্রত্যাশী সোহান সংগঠনের সদ্য বিদায়ী সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসেনকে বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করেন। এ সময় ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সদ্য বিদায়ী সভাপতি মিজান উত্তেজিত হয়ে উঠেন। পরে এসএসএফ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।

এ সময় শেখ হাসিনা জিজ্ঞেস করেন নেতা হিসাবে তাদের কোনো পছন্দের নাম আছে কি না। থাকলে নাম প্রস্তাব করতে বলেন। তখন ছাত্রলীগ নেতা সমস্বরে বলেন, শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে জানান। জবাবে শেখ হাসিনা জানতে চান, ‘আমি যে সিদ্ধান্ত দেব তোমরা মেনে নেবে?’ জবাবে সবাই উচ্চস্বরে জানিয়ে দেন, শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত।

এবার ছাত্রলীগের জাতীয় সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মোট ৩২৩ জন মনোনয়ন ফরম কিনেছিলেন। এত বেশি ফরম তোলায় কিছুটা বিস্মিত শেখ হাসিনা। জানতে চান, এবার পদ-প্রত্যাশী বেশি কেন। ছাত্রলীগ নেতারা বলেন, এবার শেখ হাসিনা কমিটি করবেন জেনে তারা প্রার্থী হয়েছে।

একাধিক পদপ্রত্যাশী বলেন, এতদিন নেতা নির্বাচনে ভোট হলেও তা হয়েছে লোক দেখানো। সেখানে প্রকৃত গণতন্ত্র ছিল না। কিন্তু এবার শেখ হাসিনা কমিটির দায়িত্ব আপনি নিয়েছেন জেনে তারা আনন্দিত। বক্তৃতা পর্বে পদপ্রত্যাশীরা সবাই সংগঠনের জন্য তার নিজের এবং মূল দল আওয়ামী লীগের জন্য পারিবারিক ত্যাগ-তিতীক্ষার কথাও তুলে ধরেন।

এসব বক্তব্য চলাকালে একটি পক্ষ ‘মিথ্যা’, ‘ভিত্তিহীন’ বলে চিৎকার করতে থাকেন। বলেন, ‘আপা, এগুলো আপনি আরও যাচাই-বাছাই করেন।’ বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি সবার ব্যাপারে খোঁজ-খবর নিয়েছি। তবে কমিটি ঘোষণা করতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে।’

‘আমি যে নেতৃত্ব নির্বাচন করব তোমরা সকলে তা মেনে নেবে এবং আগামী নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে।’

সূত্র: ঢাকাটাইমস২৪.কম