মেক্সিকোর বিপক্ষে আজ মাঠে নামছে ব্রাজিল

ফুটবল ইতিহাসের সর্বকালের সেরা দল নিঃসন্দেহে বলা যায় পাঁচবারের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন দল ব্রাজিলকে । প্রত্যেকটি বিশ্ব আসরে একঝাক বিশ্বমানের তারকা কিংবা উঠতি তারকা মানের খেলোয়াড় নিয়ে উপস্থিত হয় ব্রাজিল ।

যাদের দুর্দান্ত ক্রীড়া নৈপুণ্যে প্রতিবার শিরোপার অন্যতম দাবীদার হিসেবে বিবেচিত হয় ল্যাতিন আমেরিকার দলটি । রাশিয়া বিশ্বকাপে নিজেদের ষষ্ঠ শিরোপা জয়ের লক্ষ্য নিয়ে ব্রাজিল পা রেখেছে দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের শীর্ষে থেকে। দলের রক্ষণ, মধ্যমাঠ, কিংবা আক্রমণ প্রতিটা ভাগেই রয়েছে নেইমার, কুতিনহো, কস্তা, মার্সেলো, সিলভার মত নির্ভরযোগ্য একগাদা খেলোয়াড়। যারা নিজেদের সেরা দিনে যেকোনো কিছু করার ক্ষমতা রাখেন এবং যেকোনো সময় খেলার যেকোনো চিত্র বদলে দিতে পারেন ।

এবারের বিশ্বকাপে নিজেদের ষষ্ঠ শিরোপা জয়ের লক্ষ্য নিয়ে সেলেকাওরা যে স্বপ্ন দেখছেন তার মূলে রয়েছেন উঠতি তারকা বিস্ময়বালক নেইমার । তার স্কিল, স্পিড, পাসিং একুরেসি, ড্রিবলিং সবকিছুই একেবারে নয়ন জোড়ানো । নেইমার ক্লাব ক্যারিয়ারে পাদপ্রদীপের আলোতে আসেন স্প্যানিশ ক্লাব বার্সেলোনায় খাকাকালীন সময়ে। সেখানে মেসি ও সুয়ারেজের সাথে মিলে করেন “এমএসএন” নামক এক ভয়ঙ্কর ত্রয়ী । বার্সেলোনার হয়ে ২০১৪ থেকে ২০১৭ এই তিন মৌসুমে ১৩৪ ম্যাচে ৭৪ গোল ও ৪৩টি এসিস্টের রেকর্ড রয়েছে নেইমারের । জাতীয় দলের হয়ে ৮৮ ম্যাচে ৫৬টি গোল তার । দুই বিশ্বকাপে খেলা নেইমারের গোল রয়েছে পাঁচটি । চলতি বিশ্বকাপে নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী পুরোপুরি খেলতে পারেননি। আজ পারবেন তো?

নেইমার ছাড়াও সেলেকাও দলে রয়েছে জাদুর কৌটা ফিলিপে কুতিনহো। অনেক কাটখড় পুড়িয়ে বার্সেলোনা ১১২ মিলিয়ন ইউরো দিয়ে এই রত্নকে দলে ভিড়িয়ে যে ভুল করেনি তার প্রমাণ এরই মধ্যে দিয়ে দিয়েছেন কুতিনহো। প্রায় সারা মাঠে সমানভাবে খেলতে পারা কুতিনহো খুবই পরিশ্রমী ও নির্ভরশীল এক খেলোয়াড়। গোল করা ও গোল করানো দুটি কাজই সমান তালে করার পারদর্শীতা রয়েছে তার । ডি বক্সের বাইরে থেকে দুর্দান্ত ও শক্তিশালী শটে গোল করার যোগ্যতা সম্পন্ন কুতিনহো নিজের জাদুকরি ঝলকের কিছুটা এই বিশ্বকাপে দেখিয়েছেন । নেইমারের মত ড্রিবলিং না করলেও তার স্পিড ও পাসিং একুরেসি একেবারে দারুণ ।

এই দুইজনের সাথে ব্রাজিলকে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন ফিরমিনো, দানিলো, পাউলিনহো, জেসুস, ডগলাস কস্তাদের মত তরুণ ও নির্ভরযোগ্য একগাদা খেলোয়াড়। খেলার মাঠে যদি তারা নিজেদের মধ্যে বুঝাপড়াটা একটু ভালোভাবে করতে পারেন তবে সেলেকাওদের হেক্সার স্বপ্ন অবশ্যই পুরণ হবে ।

রাশিয়া বিশ্বকাপে নিজেদের শুরু খুব একটা ভাল হয়নি ব্রাজিলের । নিজেদের প্রথম ম্যাচে সুইজারল্যান্ডের সাথে ১-১ গোলে ড্র করে । দ্বিতীয় ম্যাচে তাদের সামনে চিনের প্রাচিরের মত দাঁড়িয়ে পড়েন কোস্টারিকান গোলকিপার কেইলর নাভাস । তাকে ফাঁকি দিয়ে কোনভাবেই গোল করা সম্ভব হচ্ছিল না । শেষ পর্যন্ত খেলার একেবারে অন্তিম মূহুর্তে কুতিনহো ও নেইমারের গোলে ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে তারা। নিজেদের শেষ ম্যাচে পাউলিনহো ও থিয়াগো সিলভার গোলে অপরাজিত গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে নকআউট পর্বে উঠে ব্রাজিল।

নকআউট পর্বে আজ মুখোমুখি হবে আরেক ল্যাতিন আমেরিকার দেশ মেক্সিকোর। মেক্সিকোর সাথে এখন পর্যন্ত ৪০ সাক্ষাতে ২৩টি জয় এবং ৭টি ড্র পায় ব্রাজিল। যার ফলে ইতিহাস থেকেও কিছুটা অনুপ্রেরণা পাচ্ছে ব্রাজিল ।

লড়রাইয়ে মঞ্চ একেবারে প্রস্তুত। নিজেদের লালিত স্বপ্ন মিশন হেক্সা বাস্তবায়নে আজ কি নায়ক হতে পারবেন নেইমার, কুতিনহো, কস্তা, জেসুসরা । উত্তর জানার জন্য আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে ফুটবল প্রেমীদের ।