নাইজেরিয়াকে ২–১ গোলে হারিয়ে শেষ ষোলতে উঠেছে আর্জেন্টিনা। আর্জেন্টিনা পারবে আগেই জানতেন মেসি।
ঠিক যেন বাছাইপর্বের শেষ ম্যাচটার স্মৃতি ফিরে এল। কত কত কথা। আর্জেন্টিনা শেষ কবে চূড়ান্ত পর্বে উঠতে পারেনি তার রেকর্ড ঘাঁটাঘাঁটি। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে কত উচ্চতায় খেলা, তার ভৌগলিক জ্ঞানও হয়ে গেল সবার। আর্জেন্টিনা–সমর্থকেরা তবু একজনের ওপর বিশ্বাস রেখেছিল। মেসাইয়াহ নামে তাঁকে তারা ডাকে। যে শব্দের মানে ত্রাণকর্তা। বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাওয়ার শঙ্কা নিয়ে ম্যাচের শুরুতে গোল খেয়ে বসা সেই ম্যাচে একজনকে শুরু থেকে আশ্চর্য নির্ভার দেখাচ্ছিল। সাধারণত পুরো দলের চাপের ভারে নুয়ে পড়তে দেখা যায় যাঁকে। সে ম্যাচে হ্যাটট্রিক করে আর্জেন্টিনাকে বাঁচিয়ে দেওয়ার পর মেসি বলেছিলেন, আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপে খেলতে পারবে না, এমন ভাবনা একবারও নাকি আসেনি তাঁর মাথায়। এ তো অভাবিত এক দৃশ্য!
আর্জেন্টিনা দ্বিতীয় রাউন্ডে যেতে পারবে না, এটা অবশ্য অতটা অভাবিত নয়। ২০০২ বিশ্বকাপেই এমনটা দেখা গেছে। এবার তো শঙ্কা ছিল আরও বেশি। আশ্চর্যের বিষয় হলো, আজও শুরু থেকে লিওনেল মেসিকে একদম নির্ভার দেখা গেছে। তাঁরই ফল হিসেবে এল প্রথম গোলটা। এত লম্বা লং বল মেসি যেভাবে ঊরু দিয়ে নামালেন, যেভাবে ফিনিশিং…নির্ভার না থাকলে পারতেন না। পেনাল্টিতে গোলের পর উত্তেজিত হয়ে গিয়েছিলেন। ঝগড়াও করেছেন রেফারির সঙ্গে। একসময় দেখা যাচ্ছিল, মেসির মুখে সেই দুশ্চিন্তার লাল আভা।
তবে ম্যাচের পর আর্জেন্টিনা অধিনায়ক বলেছেন, শেষ পর্যন্ত বিশ্বাস ছিল তাঁর। আর্জেন্টিনা পারবে, ‘আমরা আত্মবিশ্বাসী ছিলাম ম্যাচটা জিততে পারব। যেভাবে জিতেছি তা সত্যিই দুর্দান্ত। এই আনন্দ আমাদের পাওনা ছিল। আমি জানতাম ঈশ্বর আমাদের সঙ্গে আছেন। ঈশ্বর আমাদের বিশ্বকাপ থেকে এভাবে ছিটকে যেতে দেবেন না। আজ মাঠে আমাদের জন্য যাঁরা গলা ফাটিয়েছেন, এত এত কষ্ট করেছেন, যাঁরা আর্জেন্টিনা থেকে সমর্থন দিয়েছেন সব সময়, তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।’
ক্লাব ক্যারিয়ারে সব দুমুঠো ভরে পাওয়া মেসি এরপর বলেছেন আসল কথাটা, ‘জাতীয় দলের এই জার্সিটাই বাকি সব কিছুর আগে।’
মেসি বার্তা দিয়ে রাখলেন, দলের স্বার্থে সবাই এখন এক। কোচ-খেলোয়াড়েরা এবার কাঁধ মিলে তৈরি হবেন পরের পর্বের জন্য। শনিবার ফ্রান্সের বিপক্ষে আর্জেন্টিনার নকআউট পর্বের ম্যাচ। জিতলেই কোয়ার্টার ফাইনালে চলে যাবে গতবারের রানার্স আপরা।