গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে ৪২৫টি কেন্দ্রের মধ্যে শতাধিক কেন্দ্র থেকে বিএনপির এজেন্টদের বের করে দিয়ে নৌকা মার্কায় সিল মারার অভিযোগ করেছে বিএনপি। ভোটে গোলযোগ ঠেকানোর দায়িত্বে থাকা পুলিশই ভোট দিচ্ছে বলে অভিযোগ দলটির।
মঙ্গলবার সকাল আটটায় গাজীপুরে ভোট শুরুর তিন ঘণ্টারও বেশি সময় পর নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে দলের পক্ষ থেকে প্রতিক্রিয়া জানান বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এ সময় তিনি এসব অভিযোগ করেন।
‘বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে আমাদের এজেন্টদের বের করে দিয়েছে। পুলিশ নিজেরাই নৌকা মার্কায় সিল মারছে, এখন পুলিশ আওয়ামী সন্ত্রাসীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে।’
নির্বাচন কমিশন ছাড়াও আওয়ামী লীগের ‘সন্ত্রাসীরাও’ ব্যালট পেপার ছাপিয়েছে বলেও অভিযোগ রিজভীর। বলেন, ‘মুন্সিপাড়া ন্যাশনাল প্রিন্টিং প্রেসে সারারাত ব্যালট পেপার ছাপিয়ে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা সেগুলো নিয়ে বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে গেছে।’
বিএনপি কোনো আলোচিত ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে সচরাচর সকাল আটটা থেকেই বিএনপি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন রিজভী। তবে রিজভী আজ ঘুমিয়েছেন বেলা করে। সকাল নয়টায় প্রথম ব্রিফিং করার কথা থাকলেও তিনি সাংবাদিকদের সামনে আসেননি।
সকালে টঙ্গীর নিজ কেন্দ্রে ভোট দিয়ে বিএনপির প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার ১০ কেন্দ্র থেকে তার এজেন্ট বের করে দেয়ার অভিযোগ করেছিলেন। এরপর তিনি আর কোনো অভিযোগ করেননি।
তবে রিজভী বলেন, ‘গাজীপুর সিটি নির্বাচন নিয়ে এ পর্যন্ত যে খবর পাচ্ছি তা উদ্বেগজনক। আমরা আগে যে সন্দেহ করেছিলাম গাজীপুরে তারই প্রতিফলন পাচ্ছি। নির্বাচন কমিশন এবার তাদের কথা রাখলেন না। তারা আরব্য উপন্যাসের একচোখা দৈত্যের মতো করছে।’
‘বিএনপির এজেন্টদের কেন্দ্রে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। ঢুকলেও তাদের বের করে দেয়া হচ্ছে। এছাড়া গতকাল থেকে শুরু করে আজ সকাল পর্যন্ত অনেক নেতাকর্মী গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
রিজভী বলেন, ‘স্থানীয় এমপি জাহিদ রাসেলের এলাকায় এজেন্ট ও ভোটারদের ঢুকতে দেয়নি। কালিয়াকৈরৈর কয়েকটি কেন্দ্র থেকে বিএনপি প্রার্থীর এজেন্টদের বের করে দিয়েছে পুলিশ। পরে নিজেরাই সিল মারে। মুন্নু টেক্সটাইল কেন্দ্রে বাইরে ভোটার থাকলেও ভেতরে ফাঁকা।’
‘৮ নং ধানের শীষের এজেন্ট বের করে দেয়া হয়েছে। ওই কেন্দ্রে কাউন্সিলরদের ব্যালট দেয়া হয়, মেয়রের ব্যালটে তারা নিজেরাই সিল মারে।’
’৪১, ৫৫ নং ওয়ার্ড পুবাইলে সব এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে। কাশিমপুরে পুলিশ নির্দেশ দিচ্ছে নৌকায় সিল মারতে।’
নির্বাচন কমিশনের বক্তব্যের সঙ্গে কাজের মিল নেই দাবি করে রিজভী বলেন, ‘মানুষ কার উপর আস্থা রাখবে? এ নির্বাচন কমিশন ভাঙা হাড়ি। ভাঙা হাড়ি কখনও জোড়া লাগে না।’