হঠাৎ চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিতে মির্জা ফখরুলকে যে দিলো নির্দেশ তারেক রহমানে

বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পুনর্গঠন দ্রুত শেষ করে দলকে অর্থবহ আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত করতে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে নির্দেশ দিয়েছেন দলের লন্ডন প্রবাসী ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। একই সঙ্গে চূড়ান্ত আন্দোলন ঘোষণার পর একযোগে রাজপথে নামার প্রস্তুতি নিতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।এ বিষয়ে জানতে মির্জা ফখরুলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, নেতার নির্দেশনা নিয়ে এসেছি। সময় হলেই তার বাস্তবায়ন দেখতে পাবেন। এর বেশি তিনি খোলাসা করেননি।

গত ১০ জুন বিএনপি মহাসচিব দলের যুক্তরাজ্য শাখা আয়োজিত ইফতারে অংশ নিতে লন্ডন যান। সেই ইফতারে প্রধান অতিথি ছিলেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ওই অনুষ্ঠানে বক্তব্যে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, দলের এখন খারাপ অবস্থা চলছে। এই অবস্থায় ভেঙে পড়া যাবে না। হতাশার কোনো কারণ নেই। রাতের পরেই হবে নতুন সূর্যোদয়। এ প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি কবিতার অংশবিশেষ পাঠ করেন মির্জা ফখরুল। ‘যদিও সন্ধ্যা আসিছে মন্দ মন্থরে, সব সংগীত গেছে ইঙ্গিতে থামিয়া… তবু বিহঙ্গ, ওরে বিহঙ্গ মোর, এখনি, অন্ধ, বন্ধ কোরো না পাখা।’

মির্জা ফখরুল যুক্তরাজ্যে থাকাবস্থায় দলের স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু ও দলের সহ-আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির ভারত সফর করেন। সেখানে ভারতের কয়েকটি থিঙ্কট্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেন তারা। পরে ভারত সফররত নেতারা ভারতের বুদ্ধিজীবীদের মতামত যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত তারেক রহমানকে অবহিত করেন। এ সময় মির্জা ফখরুলও সেখানে ছিলেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যুক্তরাজ্য বিএনপির এক নেতা বলেন, যুক্তরাজ্যে পৌঁছানোর পর মহাসচিব ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে দুই দফা বৈঠক করেন। বৈঠকে তারা সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং এ অবস্থায় করণীয় কী তা নির্ধারণের বিষয়ে মতবিনিময় করেন। দেশে ফিরে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে নির্দেশনা বাস্তবায়ন করবেন মহাসচিব।

যুক্তরাজ্য বিএনপির ওই নেতা বলেন, দলের কারাবন্দি চেয়ারপারসনের মুক্তির দাবিতে শুরু হবে আন্দোলন। আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় আসবে নির্দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে চূড়ান্ত আন্দোলন। ওই নেতার ভাষায়, আগামী আন্দোলনের স্থায়িত্ব হবে সংক্ষিপ্ত এবং কার্যকরী। ঈদুল ফিতর উৎসবের পর শুরু হবে আন্দোলনের মাঠ গরমের ‘ওয়ার্ম আপ’ কর্মসূচি। এর আগে গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় হেরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর থেকে ধাপে ধাপে আন্দোলন করে আসছে বিএনপি।

তিনি বলেন, বৈঠকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও মহাসচিব এক বিষয়ে একমত হয়েছেন যে, আইনগতভাবে চেয়ারপারসনকে মুক্ত করা সম্ভব হবে না। আইনের মারপ্যাঁচে সরকার তার মুক্তি বিলম্ব করার কৌশল নেবে। তাই খালেদা জিয়ার মুক্তির একমাত্র পথ গণআন্দোলন। আলোচনার একপর্যায়ে উঠে আসে ষাটের দশকে তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীন আইয়ুব সরকারের করা আগরতলা যড়যন্ত্র মামলায় ফাঁসানোর বিরুদ্ধে দলীয় নেতাকর্মীদের কার্যকর রাজপথের আন্দোলন। যার ফলে শেখ মুজিবের মুক্তি নিশ্চিত হয়। ঠিক একইভাবে বিএনপি কারাগার থেকে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আনবে।শীর্ষ খবর/আ আ