বৈধতার বেড়াজালে বন্দি কয়েক লাখ বাংলাদেশি। যতই রিহিয়ারিংয়ের শেষ সময় ঘনিয়ে আসছে ততটাই দুঃশ্চিন্তায় পড়ছে মালয়েশিয়ায় অবস্থানকারী প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
জানা গেছে, এক শ্রেণির অসাধু নিয়োগ কর্তাদের কারণে অনেকে চুক্তি অনুযায়ী টাকা জমা দেওয়ার পরও ইমিগ্রেশনে ফিংগার বা মেডিকেল করতে পারছে না। তেমনই মালয়েশিয়ায় বৈধকরণ প্রক্রিয়ার সকল কাজ সম্পন্ন করেও ভিসাসহ পাসপোর্ট হাতে পাচ্ছেন না অসংখ্য প্রবাসী বাংলাদেশি।
ভিসা কর পরিশোধের এক বছর পার হলেও নিয়োগকর্তাদের দুর্নীতি ও টালবাহানার কারণে প্রবাসীদের এই ভোগান্তি চরমে। এমতাবস্থায় তারা আদৌ কি বৈধ হতে পারবে কি না তা নিয়ে দেখা দিয়েছে নানা রকম দুঃশ্চিন্তা। এ জন্য তারা মালয়েশিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
জানা গেছে, মালয়েশিয়ায় কর্মরত অবৈধ বিদেশি কর্মীদের বৈধকরণ প্রকল্পে শেষ পর্যন্ত ৭ লাখ ৭৪ হাজার ৯৪২ জন অবৈধ অধিবাসী বৈধকরণ প্রক্রিয়ায় নিবন্ধিত হয়েছেন। এই নিবন্ধিত অধিবাসীদের মধ্যে কতজন বাংলাদেশি আছে তার সঠিক কোনো তথ্য জানা না গেলেও বেশিরভাগই বাংলাদেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তান শ্রি মহিউদ্দিন ইয়াসিন সাফ জানিয়ে দিয়েছেন ৩০ জুনের পর আর কোনোভাবেই রিহায়ারিং কর্মসূচির সময় বাড়ানো হবে না। এবং বিদেশি কর্মী নিয়োগসহ সব ধরণের সেবা পেতে মালয়েশিয়া অভিবাসন বিভাগের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করতে হবে।
এছাড়া ৩০ জুনের পর অবৈধ অভিবাসীদের আটকের জন্য বিশেষ অভিযান শুরু করবে বলেও জানান তিনি। ২০১৬ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে এই ‘রিহায়ারিং কর্মসূচি’ পরিচালনা করছে দেশটির সরকার। উৎপাদন, নির্মাণখাত, বাগান, কৃষিসেবাসহ কিছু নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে শ্রমিকের চাহিদার প্রয়োজন মেটাতে অবৈধদের জন্য বৈধতার কর্মসূচির ঘোষণা করে মালয়েশিয়া সরকার। ইমিগ্রেশন বিভাগের পরিচালিত কর্মসূচির জন্য সরকার কর্তৃক নিযুক্ত তিনটি এজেন্ট মাই ইজি, ইমান ও বুক্তিমেগাকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়।
২৪ মে পর্যন্ত মোট ৭ লাখ ৪৪ হাজার ৯৪২ জন অবৈধ বিদেশি কর্মী এবং ৮৩ হাজার ৯১ জন নিয়োগকর্তা এই কর্মসূচির অধীনে নিবন্ধিত হয়েছেন বলে জানান মহিউদ্দিন।
এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ কর্মসূচি অথবা ৩ প্লাস ১ প্রোগ্রাম হিসেবে পরিচিত ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে, যে সমস্ত অবৈধ অভিবাসী রিহায়ারিং প্রোগ্রামের মাধ্যমে বৈধ হতে পারবে না তাদের স্বেচ্ছায় দেশে ফিরে যেতে হবে। দেশে আইনের শাসন নিশ্চিত করতে মালয়েশিয়ান সরকার কোন আপোষ করবে না। অবৈধ বিদেশি শ্রমিকদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবেন।