১৯৩০ সালে বসেছিল ফুটবল বিশ্বকাপের প্রথম আসর। বয়স ৮৮ বছর পূর্ণ হতে যাচ্ছে। আসর হয়েছে ২০টি। তারপরও প্রতিবারই কোন না কোন প্রথমের সাক্ষী হয় ফুটবল বিশ্ব। এবারও তেমনই এক প্রথমের সাক্ষী হবে বিশ্বকাপ। রাশিয়ায় একদিন পর শুরু হতে যাওয়া বিশ্বকাপে প্রথমবারের মত রেফারির দায়িত্ব পালন করবেন একজন নারী। তিনি ব্রাজিলের ফার্নান্দা কলম্বো উইলিয়ানা।
২০১৭ সালে অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপে প্রথমবারের মত সুইজারল্যান্ডের নারী এসথার স্টাউব্লি রেফারির দায়িত্ব পালন করেছেন। তবে সিনিয়র পর্যায়ের বিশ্বকাপে রেফারির দায়িত্ব পালন করা প্রথম নারী হতে যাচ্ছেন ২৫ বছর বয়সী উইলিয়ানাই।
‘বিউটি উইথ ব্রেইনস’ বা ‘বুদ্ধিমতী সুন্দরী’ বলতে যা বোঝায় উইলিয়ানা ঠিক তাই। ব্রাজিলের ইউনিভার্সিটি অব সান্তা কাতারিনায় শারীরিক শিক্ষায় স্নাতক শেষ করেছেন। মাঠের বাইরে মডেলিংও করেন। এছাড়া লাইন্সম্যান হিসেবে দীর্ঘদিন ব্রাজিলের প্রথম বিভাগের ফুটবলে দায়িত্ব পালন করেছেন। উইলিয়ানা জানিয়েছেন রেফারি হিসেবে এতদূর পথ আসাটা সহজ ছিল না, ‘এখানে আসাটা খুবই কঠিন ছিল। আমি সবসময়ই ফুটবল ভালোবেসেছি। শারীরিক শিক্ষার কোর্স করার সময় খুব একটা ভাল খেলতাম না। তাই আমাকে যখন রেফারিংয়ের কোর্সের কথা বলা হল, খুব খুশি হয়েছিলাম।’
উইলিয়ানা আলোচনায় আসেন ২০১৪ সালে ব্রাজিলের ক্লাব ক্রুজেইরো এবং আতলেতিকো মিনেইরোর ম্যাচে একটি ভুল অফসাইডের সিদ্ধান্ত দিয়ে। ক্রুজেইরো ২-১ গোলে হারার পর ক্লাবটির ম্যানেজার বলেছিলেন, তার রেফারিং বাদ দিয়ে পুরুষদের ম্যাগাজিনে ছবির জন্য নগ্ন হওয়া উচিত। ব্রাজিলের ফুটবল ফেডারেশন উইলিয়ানাকে দুই সপ্তাহের জন্য বরখাস্ত করে এবং মানোন্নয়নের জন্য কোর্স করায়। ক্যারিয়ার জুড়েই এমন লিঙ্গ বৈষম্যমূলক ও যৌন সংবেদনশীল মন্তব্যের শিকার হয়েছেন উইলিয়ানা। তবে নিজের কঠোর পরিশ্রম দিয়ে ঠিকই সবাইকে বাধ্য করেন তার প্রশংসা করতে।
উইলিয়ানাও বলেছেন নিজের যোগ্যতার বলেই তিনি এসেছেন বিশ্বকাপে এত বড় দায়িত্ব নিয়ে, ‘আমার সবসময়ই পড়াশোনা করতে হয়েছে, প্রস্তুতি নিতে হয়েছে। যদি এগুলো ভাল না হত তবে এখানে আসতে পারতাম না। কারণ আমরা সবাই পেশাদার।’
সূত্র : গোল ডট কম।