পালিয়ে যাবার ৩৫ বছর পরে খোঁজ মিলল মার্কিন বিমানসেনার

যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনী থেকে ১৯৮৩ সালে পালিয়ে যাওয়া এক ব্যক্তিকে ক্যালিফোর্নিয়াতে খুঁজে পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী।ক্যাপ্টেন উইলিয়াম হাওয়ার্ড হিউজ জুনিয়র, যার ‘টপ-সিক্রেট’ ছাড়পত্র ছিল।, তাকে সর্বশেষ নিউ মেক্সিকোর ১৯টি ভিন্ন জায়গায় নিজের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে সাড়ে ২৮ হাজার ডলার তুলে নিতে দেখা গেছে। এরপর আর তাকে জনসমক্ষে দেখা যায়নি।

এ মাসের শুরুতে পাসপোর্ট জালিয়াতির তদন্ত করতে গিয়ে ব্যারি ও’ব্রেইন নামে এক ব্যক্তিকে কর্মকর্তারা জিজ্ঞাসাবাদ করেন।তথ্যের নানা অসঙ্গতির মধ্যে ঐ ব্যক্তি জানান তার আসল নাম উইলিয়াম হিউজ।এই মূহুর্তে তাকে ক্যালিফোর্নিয়ার ট্রাভিস বিমান ঘাঁটিতে রাখা হয়েছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, মার্কিন বিমান বাহিনী।বাহিনী থেকে পালিয়ে যাওয়ায় এখন তাকে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদন্ড, চাকরিজীবনের যাবতীয় বেতন ফেরত এবং অসম্মানজনকভাবে বিদায় দেয়া হবে বিমান বাহিনী থেকে।

ক্যাপ্টেন হিউজ সম্পর্কে কী জানা যাচ্ছে?
ক্যাপ্টেন হিউজ বিমান বাহিনীর নিউ মেক্সিকোতে অপারেশনাল টেস্ট অ্যান্ড ইভালুয়েশন বিভাগে কাজ করতেন। তার ‘টপ-সিক্রেট’ ছাড়পত্র ছিল।মার্কিন বিমান বাহিনীর তথ্যানুসারে, ন্যাটোর কমান্ড, কন্ট্রোল এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার নজরদারি নিয়ে গোপন পরিকল্পনা এবং বিশ্লেষণ।পালিয়ে যাবার ঠিক আগে তিনি নেদারল্যান্ডসে ন্যাটো কর্মকর্তাদের সঙ্গে কাজ করে কেবল ফিরেছেন।

যেহেতু গোপনীয় তথ্যসমূহ সংগ্রহ এবং সংরক্ষণে তার অনুমতি ছিল, ফলে তিনি পালিয়ে যাওয়ায় তাকে পলাতক ঘোষণা করা হয়।তিনি বিমান বাহিনীর ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকার সাত নম্বরে ছিলেন।অবশ্য কর্মকর্তারা জানেন না তিনি কোথায় ছিলেন তা তার পরিবার জানত কিনা।আর তিনি গোপনীয় তথ্য অন্য কাজে ব্যবহার করেছেন কিনা তাও এখনো জানা যায়নি জানিয়েছে বিমান বাহিনী।

কেন পালিয়ে গিয়েছিলেন ক্যাপ্টেন হিউজ?
ক্যাপ্টেন হিউজের পালিয়ে যাওয়া নিয়ে বেশ কিছু তত্ত্ব চালু আছে।এক, তিনি যখন নিখোঁজ হন, তখন যেহেতু স্নায়ুযুদ্ধ চলছিল, কেউ কেউ বলেছিলেন, তাকে হয়তো সোভিয়েত ইউনিয়নের লোকেরা অপহরণ করে নিয়ে গেছে।
১৯৮৪ সালে বার্তা সংস্থা এপি’র এক সংবাদে বলা হয়েছে, তার পরিবার বিশ্বাস করে তিনি অপহৃত হয়েছেন। সেসময় হিউজ অবিবাহিত ছিলেন, কিন্তু তার তিন বোন ছিল।

এরপর ১৯৮৬ সালে যুক্তরাষ্ট্র এবং ফ্রান্সে কয়েকটি রকেট শিপ দুর্ঘটনার পর লস অ্যাঞ্জেলস টাইমস এর সাংবাদিক টাড যাল্ক লিখেছিলেন, ঐ ব্যর্থতার সঙ্গে ক্যাপ্টেন হিউজের সংযোগ থাকতে পারে।কেননা যে ধরণের বিপর্যয় দেখা দিয়েছিল, সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতেন ক্যাপ্টেন হিউজ।তবে, ক্যাপ্টেন হিউজ তদন্তকারীদের জানিয়েছেন, বিমান বাহিনীতে থাকার সময় তিনি হতাশাগ্রস্ত ছিলেন।

এ কারণে এক সময় তিনি পালিয়ে যান এবং মিথ্যা একটি পরিচয় তৈরি করেন।তারপর থেকে ক্যালিফোর্নিয়াতেই বসবাস করে আসছেন তিনি।