দুর্দান্ত নেইমার, অপরাজিত ব্রাজিল

হতে পারে প্রস্তুতি ম্যাচ। কিন্তু, অস্ট্রিয়াকে মোটেই হালকাভাবে নেননি ব্রাজিল কোচ তিতে। একদিকে প্রস্তুতি পর্বে অপরাজিত থেকে মূল পর্বে যাওয়ার সুযোগ। অন্যদিকে এই অস্ট্রিয়াই জার্মানিকে মাটি ধরিয়েছিল। তাই শেষ প্রস্তুতি ম্যাচকে সিরিয়াসলিই নিয়েছিলেন নেইমাররা। তারই ফসল পেল সাম্বার দেশ। অস্ট্রিয়াকে হারিয়ে অপরাজিত থেকে বিশ্বকাপ অভিযানের দিকে পা বাড়াল তারা।

বিশ্বকাপের আর পাঁচটা দিন বাকি। এক সপ্তাহ পরেই মূল পর্বের ম্যাচ, তাই সম্ভাব্য সেরা একাদশকেই মাঠে নামিয়েছিলেন তিতে। শেষবারের মতো দলের খামতিগুলো দেখে নিতে চাইছিলেন। নেইমার, জেসুসদের একবার বাজিয়েও নিতে চাইছিলেন। সেই লক্ষ্যে অনেকটাই সফল কোচ। নেইমারের চোট নিয়ে একটা খটকা ছিল। প্রস্তুতি ম্যাচে তিনি মাঠে নাববেন কি না, সে নিয়ে খানিক সংশয়ও ছিল। তবে ট্রেনিংয়ে নেইমারের ফিটনেসের দিকে নজর ছিল। রোববার ম্যাচের শুরু থেকেই মাঠে নামেন ব্রাজিল অধিনায়ক। ১৮ মিনিটে তার সুবাদেই ব্রাজিলের সামনে সুযোগ চলে আসে। তবে নেইমারের গোলমুখী শট থেকে ফসল তুলতে ব্যর্থ হয় ব্রাজিল। এরপরই খেলার ছন্দ ধরে নেয় অস্ট্রিয়া। বিপক্ষের বক্সে আক্রমণে বেশ কয়েকবার আক্রমণও করেন আলাবারা। তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। বরং ৩৮ মিনিটে প্রতি-আক্রমণে গোল তুলে নেন গ্যাব্রিয়েল জেসুস। মার্সেলোর বাড়ানো বলে বাঁদিক থেকে জেসুসের ফিনিশ অস্ট্রিয়ার জালে জড়িয়ে যায়। প্রথমার্ধে এগিয়ে যায় ব্রাজিল। যদিও নেইমাররা যে নিজস্ব ছন্দে ছিল এই পর্বে তা বলা যায় না। তবে গোলের পর থেকেই সাম্বা ছন্দ ধীরে ধীরে দানা বাঁধে। ম্যাচ যখন মিনিট চল্লিশ গড়িয়েছে তখন স্ট্র্যাটেজি বদলানোর চেষ্টা করে অস্ট্রিয়া। কিন্তু প্রথমার্ধে আর কাজের কাজ কিছু হয়নি।

অস্ট্রিয়ার আক্রমণ আঁচ করেই দ্বিতীয়ার্ধে রক্ষণ অনেক জমাটি করে নেন টিটে। ঘর গুছিয়েই বেশ কয়েকটি পরিবর্তন করেন তিনি। ব্রাজিল সমর্থকরা যে গোল দেখার আশায় বসেছিলেন তা মেলে দ্বিতীয়ার্ধেই। এবং ম্যাজিক দেখান সেই নেইমার। ৬৩ মিনিটে রীতিমতো পায়ের ভেলকিতে অস্ট্রিয়া রক্ষণকে কাবু করে জালে বল জড়ান তিনি। ব্রাজিলের জার্সি গায়ে মোট ৫৫টি গোল করে রোমারিওকে ছুঁয়ে ফেললেন ব্রাজিলের পোস্টার বয়।

৬৫ মিনিটে আবার সুযোগ পেয়ে যায় ব্রাজিল। কিন্তু গোলে বল রাখতে ব্যর্থ হন পাওলিনহো। তবে ৬৯ মিনিটে জালে বল জড়াতে কোনো রকম ভুল করেননি ফিলিপ কুটিনহো।

ব্যবধান হয়তো আরো বাড়তে পারত। তবে, বিশ্বকাপ শুরুর আগে শেষ প্রস্তুতি ম্যাচে ৩-০ ফলাফলে সন্তুষ্টই হবেন কোচ তিতে। যে পারফর্ম্যান্স সাম্বার ছেলেরা দেখাল, বিশ্বকাপের মূলপর্বে তা বাড়তি আত্মবিশ্বাস জোগাবে নেইমারদের।

আরো পড়ুন :
কোয়ার্টার ফাইনালে উঠলে দলকে উৎসাহ দিতে রাশিয়া যাবেন ফ্রান্স প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোন

আসন্ন বিশ্বকাপ ফুটবলে ফ্রান্স কোয়ার্টারফাইনালে উঠলে দলকে উৎসাহ দিয়ে রাশিয়ায় যাবেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোন। আজ প্রচারিত হওয়া নিজ দেশের একটি টেলিভিশনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ম্যাক্রোন বলেন, ‘দল বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠলে তাদের সমর্থন দিতে আমি রাশিয়া যাব।

১৫ জুলাই বিশ্বকাপ ফাইনালের আগে ম্যানেজার দিদিয়ের দেশ্যমের মতোই ফ্রান্স ড্রেসিংরুমের নিজেকে ভাবছেন ম্যাকরন।
ম্যাকরন বলেন, ‘প্রথমে আমি দেশমের সাথে কথা বলবো এবং আমি তিনটি কঠিন শব্দ নিয়ে কথা বলবো, ঐক্যতা-প্রচেষ্টা ও আত্মবিশ্বাস।’ গত মঙ্গলবার প্যারিসে ফ্রান্সের অনুশীলন ক্যাম্পেও খেলোয়াড়দের সাথে দেখা করার সময় এমন শব্দগুচ্ছ ব্যবহার করেছিলেন তিনি।
ম্যাকরন আর বলেন, ‘দলের উপর আমার আস্থা আছে। আমি বুঝতে পারি তারা সফল হতে চায় এবং কাপ আনতে চায়। আমরা শুধুমাত্র অংশ নিতে যাচ্ছি না। আমরা জিততে যাচ্ছি।’

ফ্রান্সের প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ১৯৯৮ সাল বিশ্বকাপের আগে ক্লারেফনটেইনে ফরাসি স্কোয়াড পরিদর্শন করেছিলেন জ্যাক শিরাক। এমনকি ফাইনালে জয়ের পর ফ্রান্সের ড্রেসিংরুমেও যোগদান করেছিলেন তিনি।