গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার বলেছেন, যেই সব প্রশ্ন করতে আমাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সেসব প্রশ্ন শাহবাগে দাড়িয়ে করা যেত। আমি এসে দাঁড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আমাকে গাড়িতে তোলা হয়।
আমার চোখে কালো কাপড় দিয়ে বেঁধে ফেলা হয় এবং হাতে হাতকড়া পরানো হয়। আমাকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয় তা আমি প্রথমে বুঝিনি, পরে সেখান থেকে ফেরার পথে বুঝতে পারলাম কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর রিপোটার্স ইউনিটির সাগর–রুনি মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে সম্মেলনের মাধ্যমে ইমরান এইচ সরকার একথা জানান।
গতকাল বুধবার ইমরান এইচ সরকারকে তুলে নেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে গণজাগরণ মঞ্চ।
এই সময় ইমরান বলেন, কালো কাপড় দিয়ে চোখ–মুখ বেঁধে হাতকড়া পড়িয়ে তাঁকে তুলে নিয়ে র্যাব-৩–এর কার্যালয়ে নেওয়া হয়। এরপর র্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এলে কালো কাপড় ও হাতকড়া খুলে দেওয়া হয়। র্যাবের কর্মকর্তারা তাঁর সঙ্গে আলোচনা করতে চান বলে জানান।
তাঁরা জানতে চান, কিসের জন্য আন্দোলন করছেন? এর উদ্দেশ্য কী? একপর্যায়ে র্যাব কর্মকর্তারা তাঁদের বক্তব্যে মাদকবিরোধী অভিযানের যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করেন। মাদকের বিরুদ্ধে যে অভিযান চলছে, তার যৌক্তিকতা তুলে ধরতে চান।
ইমরান জানান, তিনি র্যাবের কর্মকর্তাদের বলেছেন, মাদকের বিরুদ্ধে যেমন তাঁরা সোচ্চার, তেমনই মাদকবিরোধী অভিযানের নামে যে বিচারবর্হিভূত হত্যাকাণ্ড ঘটছে, তার বিরুদ্ধেও তাঁরা সোচ্চার। এ কথাটি তিনি তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করেন।
গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র বলেন, যে প্রক্রিয়ায় তাঁকে তুলে নেওয়া হয়েছে, সেটি কোনোভাবেই কাম্য নয়। শুধু প্রতিবাদ করার জন্য একটি প্রতিবাদ সভা থেকে কোনো ওয়ারেন্ট ছাড়া সিনেম্যাটিক স্টাইলে তুলে নেওয়ার বিষয়টি প্রত্যাশিত নয়।
সংবাদ সম্মেলনে মানবাধিকারকর্মী খুশি কবীর বলেন, বিচারব্যবস্থাকে পাশ কাটিয়ে নিজের হাতে যেভাবে হত্যা করা হচ্ছে, এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা সব নাগরিকের নৈতিক দায়িত্ব।
তুলে নেওয়ার পর তাঁকে কখন ছাড়া হয়—এমন প্রশ্নের জবাবে ইমরান এইচ সরকার বলেন, তুলে নেওয়ার পর তাঁর বোন ও ভাইয়ের ফোন নম্বর নেন র্যাবের কর্মকর্তারা। তাঁদের ডেকে নেওয়া হয়। এরপর তাঁদের জিম্মায় রাতে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এদিকে ইমরানকে আটক ও নেতা–কর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে আজ বিকেল চারটায় প্রতিবাদ সমাবেশের আয়েজান করেছে গণজাগরণ মঞ্চ।