মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মুহিউদ্দিন ইয়াসিন বলেছেন, দেশের কোনও আইন ভঙ্গ করে থাকলে জাকির নায়েককে গ্রেপ্তার করতে দ্বিধা করবে না তার সরকার। সোমবার মালয়েশিয়ান সংবাদমাধ্যমকে তিনি একথা বলেন।
মালয় মেইলকে মুহিউদ্দিন বলেছেন, ‘আগের সরকার জাকির নায়েককে স্থায়ী বসবাসের অনুমোদন দিয়েছে। তিনি আমাদের দেশে আছে অন্য নাগরিকদের মতো। কোনও ক্ষেত্রে আইন ভঙ্গ করে থাকলে অন্য নাগরিকদের মতোই তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নাগরিক কিম্বা অ-নাগরিক সবাইকেই আইনের আওতায় আসতে হবে।’
জাকির নায়েকের সাম্প্রতিক কিছু বক্তব্য মালয়েশিয়ায় বিতর্ক তুলেছে। দেশটির বিভিন্ন পক্ষের অভিযোগ, জাকিরের এসব বক্তব্য সে দেশের বহু-ধর্ম ও বহু-সংস্কৃতির সহাবস্থানের জন্য হুমকি।
এদিকে জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে তার দেশ ভারতে ‘উগ্রপন্থাকে উস্কে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে ক্ষমতাসীন হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপি। এজন্য মামলাও করা হয়েছে তার বিরুদ্ধে।
তবে মামলাটি তদন্ত করতে গিয়ে জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে অভিযোগের সতত্যা পাওয়া যায়নি বলে গত বছরের মার্চ মাসে জানিয়েছিলো ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা।
অন্যদিকে ভারত সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠেছে, জাকির নায়কের ধর্ম পরিচয়ের কারণে তাকে হেনস্তা করা হচ্ছে।
যদিও দেশটির অধিকাংশ মুসলিমদের পক্ষ থেকেই জাকিরের বিরুদ্ধে কট্টরপন্থা ছড়ানোর অবিযোগ রয়েছে। বলা হয়ে থাকে তিনি সৌদি আর্থিক সহায়তায় বিতর্কিত সালাফি মতাদর্শ প্রচার করে থাকেন।
ভারতে মামলা হওয়ার পর গত বছর জাকির মালয়েশিয়ায় আশ্রয় চাইলে তাকে স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি দেয় নাজিব রাজাকের সরকার।
কিন্তু সেখানেও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠতে শুরু করে। মালয়েশিয়ায় তার বক্তব্যকে অনেকে বিভিন্ন ধর্মের মানুষের মধ্যে দূরত্ব তৈরির কারণ হিসেবে দেখছেন।
এমনকি তার বিরুদ্ধে আরও গুরুতর অভিযোগ রয়েছে, গত মাসে অনুষ্ঠিত মালয়েশিয়ার নির্বাচনের আগে তার আশ্রয়দাতা নাজিবকে আবারও ক্ষমতায় আনার পক্ষে যুক্তি দিয়ে জাকির বলেছিলেন, ‘একজন অমুসলিম সৎ লোকের চেয়ে একজন মুসলিম দুর্নীতিবাজকে ভোট দেওয়া ভালো।’
এদিকে জাকিরকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে বিচারের মুখোমুখি করতে ভারত সরকারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। জাকিরকে গেপ্তার করা হলে ‘তাকে ভারতের কাছে হস্তান্তর করা হবে কিনা’- এমন প্রশ্নের সরাসরি কোনও উত্তর দেননি মালয়েশিয়ান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।