বিএনপির সিনিয়র তিন নেতা শফিক রেহমান, মাহামুদুর রহমান এবং ফরহাদ মাজহার নিখোঁজ!

তাদের বলা হতো বিএনপির থিংক ট্যাংক। বেগম জিয়ার পরামর্শক এবং বিশ্বস্ত। এরা বেগম জিয়ার বক্তব্য লিখে দিতেন। বিএনপির অনেক নেতারাও এদের ভয় পেতেন। এদের মধ্যে তিনজন হলেন শফিক রেহমান, মাহামুদুর রহমান এবং ফরহাদ মাজহার। গত কয়েকমাস ধরে এরা নিখোঁজ। না, নিখোঁজ মানে এরা কেউই ইলিয়াস আলীর মতো নিখোঁজ নন। এরা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে নিখোঁজ। বিএনপির নেতৃবৃন্দ এদের খবর রাখেন না। তাঁরাও বিএনপির কোনো অনুষ্ঠানে যান না। সরকারের বিরুদ্ধে একদা সোচ্চার কণ্ঠস্বরগুলো এখন নীরব।

এই তিনজনের মধ্যে অন্যতম আলোচিত শফিক রেহমান। শফিক রেহমান পেশায় চার্টার্ড অ্যাকাউনটেন্ড হলেও সাপ্তাহিক যায়যায় দিনের মাধ্যমে আলোচিত হন। ২০০০ সাল থেকে তিনি বেগম জিয়ার বক্তৃতা লেখক হিসেবেই পরিচিতি পান। ওয়ান ইলেভেনের সময়ও তিনি বেগম জিয়ার পক্ষে ছিলেন। নয়া দিগন্তে কলাম লিখতেন। ২০০৮ এর নির্বাচনে বিএনপির বিপর্যয়ের পর তিনি বেগম জিয়ার আরও ঘনিষ্ঠ হন। জি-৯ নামে তিনি বিএনপি সমর্থক এক থিংক ট্যাংক গ্রুপ তৈরি করেন। ২০১৬’র এপ্রিলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে হত্যার পরিকল্পনার অভিযোগে শফিক রেহমান গ্রেপ্তার হন। সেপ্টেম্বরে তিনি জামিনে মুক্তি পান। এরপর তিনি গর্তে ঢুকে যান। বেগম জিয়া গ্রেপ্তার হবার আগ পর্যন্ত মাঝে মধ্যে বেগম জিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করতেন। কিন্ত এখন সবকিছু থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন। বিএনপির লোকজনও তাঁর খোঁজখবর নেয় না।

আমার দেশের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহামুদুর রহমান। ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এলে তাঁর দৌড়ঝাঁপ সবার নজরে আসে। প্রথমে তিনি বিনিয়োগ বোর্ডের নির্বাহী চেয়ারম্যান এবং পরবর্তীতে জ্বালানি উপদেষ্টা হন। ওয়ান-ইলেভেনের সময় মাহামুদুর রহমান ছিলেন সোচ্চার কণ্ঠস্বর। ২০০৮ সালের পর সিরামিক ব্যবসায়ী হয়ে ওঠেন কলাম লেখক। এরপর মাহামুদুর রহমান সাইবার ক্রাইম,আদালত অবমাননা ইত্যাদি মামলায় গ্রেপ্তার হন। ২০১৩ এর এপ্রিলে গ্রেপ্তার। এরপর দীর্ঘ কারাবাসের পর মুক্তি পান মাহামুদুর রহমান। এরপর থেকেই তিনি যেন চুপসানো বেলুন। আমার দেশের অনলাইন চলে। তবে, মাহামুদুর যেন সবকিছু থেকে দূরে। স্বেচ্ছা নির্বাসনে।

ফরহাদ মাজহার ‘বিভিন্ন সময়ে নীতি ও আদর্শ বদল করা এক পতিত বুদ্ধিজীবী। কট্টর বাম থেকে তাঁর কট্টর ডান বনে যাওয়া যেমন গবেষণার বিষয়, তেমনি গত বছরের জুলাই মাসে ‘অন্তর্ধান’ এবং খুলনায় তাঁকে পাওয়াটাও এক বিস্ময়। গোয়েন্দা সংস্থা নিশ্চিত এর পেছনে ছিল একদা কবি ফরহাদ মজহারের উগ্র নারী প্রেম। তবে, এনিয়ে জলঘোলা করতে দেননি প্রখর চতুর এই বুদ্ধিজীবী। এখন তিনি সফেদ চাদরে ঢেকে দিয়েছেন তাঁর সব পাপ এবং তাঁর জবান। তিনিও এখন বেগম জিয়ার পক্ষে কলম ধরেন না। বিএনপির জন্য তাঁর নেই কোন আহাজারিও। ফরহাদ মজহার এখন বিএনপি কেন্দ্রিক কোন সুশীল গোলটেবিলে বসে ‘জিহাদে’র ডাকও দেন না’

বিএনপি প্রেমিক এই তিনজন কি করছেন, সে খবর বিএনপির কারো কাছে নেই। বিএনপির পক্ষ থেকে এদের সন্ধান চেয়ে একটি নিখোঁজ বিজ্ঞপ্তি দিতেই পারে।

সুত্র: ভোরের পাতা