বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসেতুর নির্মাণকাজ অবশেষে সম্পন্ন হয়েছে। ৫৫ কিলোমিটার (৩৪ মাইল) লম্বা এ সেতু হংকং, ম্যাকাও ও চীনের মূল ভূখণ্ডকে যুক্ত করবে। সর্পিল রোড ক্রসিং এবং পানির নিচের একটি সুড়ঙ্গও এ সেতুর অন্তর্ভুক্ত। সেতুটি নির্মাণে যে ৪,২০,০০০ টন লোহা লেগেছে, তা দিয়ে ৬০টি আইফেল টাওয়ার বানানো যেত।
নয় বছর আগে নির্মাণকাজ শুরুর পর চীন সরকার প্রথমবারের মতো এ মেগাপ্রকল্প সম্বন্ধে গত সপ্তাহে কিছু তথ্য প্রকাশ করলো। এতে জানানো হয়, সেতুটি পার্ল নদীর মোহনা দিয়ে দেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় ঝুহাই শহরের সঙ্গে বিতর্কিত ভূখণ্ড ম্যাকাওকে যুক্ত করবে। সেতুটি উদ্বোধনের দিনক্ষণ এখনো স্থির না-হলেও চীনা কর্মকর্তারা আশা প্রকাশ করেন যে, সেতুটি ১২০ বছর পর্যন্ত ব্যবহার-উপযোগী থাকবে।
সেতুর একাংশ গেছে গেছে পানির নিচ দিয়ে। ছয় দশমিক সাত কিলোমিটার লম্বা এ অংশ নির্মাণের কঠিন কাজটি করতে গিয়ে বহু বিনিদ্র রজনী কাটানোর কথা স্মরণ করে সেতু প্রকল্পের প্ল্যানিং ম্যানেজার কাও সিংলিন বলেন, কাজটি করতে গিয়ে বহু রকম জটিলতা দেখা দেয়। এর ফলে এমন অনেক রাত কেটেছে যে আমি একফোঁটাও ঘুমাতে পারিনি। সবচাইতে চ্যালেঞ্জিং কাজটি ছিল জলনিরোধক প্রযুক্তির সাহায্যে সমুদ্রের তলদেশে ৮০ হাজার টন পাইপকে জোড়া লাগানো।
একাধিক কৃত্রিম দ্বীপ, সংযোগ সড়ক এবং নতুন সীমান্ত পারাপার সুবিধাসহ পুরো প্রকল্পটি বাস্তবায়নে কত অর্থ ব্যয় হয়েছে জানা না-গেলেও অনেকের ধারণা, এতে ব্যয়ের পরিমাণ ১০০ বিলিয়ন ইউয়ান ছাড়িয়ে গেছে। সমালোচকরা বলছেন, এটি আসলে একটি একটি শ্বেত হস্তী। হংকং-এর বিরোধীরা বলছেন আধা স্বায়ত্তশাসিত হংকং-এর ওপর নিয়ন্ত্রণ জোরদার করতেই চীন এ প্রকল্প নিয়েছে। প্রকল্পটি ২০১৭ সালের শেষ দিকে সম্পন্ন হওয়ার কথা থাকলেও বাজেট বৃদ্ধি, দুর্নীতির অভিযোগ, নির্মাণকর্মীদের মৃত্যু ইত্যাদি কারণে তা হয়নি।
এদিকে সেতুটির নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কেননা, ১৯ জন ল্যাবকর্মীর বিরুদ্ধে ভুয়া কংক্রিট রিপোর্ট দেয়ার অভিযোগ উঠেছে, যাদের একজনকে গত ডিসেম্বরে জেলে নেয়া হয়েছে। সূত্র : আরব নিউজ