আসন্ন বিশ্বকাপে ফেবারিটদের সামর্থ্য ও দুর্বলতা (পর্ব- ০১)

আগামী ১৪ই জুন থেকে আরম্ভ হতে যাচ্ছে বিশ্বের আপামর জনতার নিকট সবচেয়ে প্রিয় খেলার আসর ফুটবল বিশ্বকাপ ২০১৮। প্রতি বছর ক্রীড়ানুরাগীদের বিনোদনের জন্য বিভিন্ন ফুটবলের আসর অনুষ্ঠিত হলেও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও উপভোগ্য আসর হলো ফুটবল বিশ্বকাপ। যদিও পৃথিবীর অগণিত দর্শক সারা বছর জুড়ে বিভিন্ন দেশের অভ্যন্তরীণ ফুটবল আসর, সেরা দলগুলোর প্রতিযোগিতামূলক আসর চ্যাম্পিয়ন্স লীগ, ইউরোপা লীগ, মহাদেশীয় বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক আসর যেমন- ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ, কোপা অ্যামেরিকা, কনফেডারেশনস কাপ, আফ্রিকান কাপ অফ নেশান্‌স ইত্যাদি উপভোগ করে থাকেন, পৃথিবীর মোট দর্শকদের একটি বড় অংশ শুধুমাত্র ফুটবল বিশ্বকাপই উপভোগ করেন। এ অবস্থায় আসন্ন ফুটবল বিশ্বকাপে বিভিন্ন দেশের সম্ভাবনা, সামর্থ্য, দুর্বলতা ইত্যাদি পর্যায়ক্রমে তুলে ধরা হলঃ

বিগত বেশ কয়েকটি ফুটবল বিশ্বকাপের ফলাফলের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে, সেই সময়ে সেরা/ নামকরা ৫টি দলের একটিই বিশ্বকাপ জয় করেছে (৮৬ সালে আর্জেন্টিনা, ৯০ সালে জার্মানী, ৯৪ সালে ব্রাজিল, ৯৮ সালে ফান্স, ২০০২ সালে ব্রাজিল, ২০০৬ সালে ইতালি, ২০১০ সালে স্পেন ও ২০১৪ সালে জার্মানী)। আরো লক্ষণীয় যে, কোন কোন নামকরা দল বাজে ফর্ম নিয়ে এসেও বিশ্বকাপ জয় করেছে আবার কোন কোন নামকরা দল ফেবারিটের তকমা নিয়ে এসেও চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। কোন কোন ভালো দল বিশেষভাবে দুই-তিন জন খেলোয়াড়ের মেধা, দক্ষতা ও নেতৃত্বে বিশ্বকাপ জিতেছে আবার কোন কোন দল সমন্বিত মেধা ও অত্যুত্তম দলীয় বোঝাপড়ার কারণে বিশ্বকাপ জিতেছে। এসব বিষয়াদি বিবেচনায় নিয়ে ব্রাজিল, জার্মানী, ফান্স, স্পেন এবং আর্জেন্টিনা; এই ৫-টি দলের একটির বিশ্বকাপ জেতার সম্ভাবনা দেখতে এবার প্রবল।

ব্রাজিল

এই দল সবসময়েই বিশ্বকাপ জয়ের জন্য অন্যতম ফেভারিট হিসেবে বিবেচিত হয়। সর্বোচ্চ ৫ বার বিশ্বকাপ জয়ী ব্রাজিল এবার হেক্সা জয়ের মিশনে মাঠে নামবে। ব্রাজিল দলের কথা বলতে গেলেই প্রথমে বলতে হয় তাদের সব খেলোয়াড়ের এর ব্যক্তিগত মেধা ও দক্ষতা এবং সেই সাথে তাদের পায়ে দেখা যায় চোখ ধাঁধানো সেই সব স্কিলের কথা, যা যুগে যুগে বিখ্যাত খেলোয়াড়রা প্রদর্শন করে এসেছেন। প্রতিবারের মতই ব্রাজিল দলের জন্য সাফল্য হবে বিশ্বকাপ জয় এবং এর চেয়ে কম যে কোন অর্জন ব্যর্থতা বলে পরিগনিত হবে।

ব্রাজিলের সামর্থ্যঃ

ব্রাজিল কোচ তিতে অত্যন্ত মেধাবী, যিনি খুব খারাপ পরিস্থিতে ব্রাজিল দলের দায়িত্ব নেয়ার পর হতে ব্রাজিল একটি অপ্রতিরোধ্য দলে পরিণত হয়েছে। তাঁর নেতৃত্বে ব্রাজিল বেশ শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বীতার জন্য বিখ্যাত দক্ষিণ অ্যামেরিকা অঞ্চলের বাছাই পর্বে অতি সহজে প্রথম স্থান অর্জন করেছে (এই বাছাই পর্ব হতে কোপা অ্যামেরিকা চ্যাম্পিয়ন চিলিও বিশ্বকাপের মূল পর্বে উৎরাতে পারেনি)। তিতে খুব ভালো ট্যাকটিশিয়ান, তিনি টীম কম্বিনেশন নিখুঁত রাখেন এবং খেলোয়াড়দের প্রতি পক্ষপাতিত্ব না করে ফর্ম, মেধা ও দক্ষতার ভিত্তিতে দলে সুযোগ দেন।

ব্রাজিল দল অত্যন্ত ভারসাম্যপূর্ণ, এই দলে প্রায় সব খেলোয়াড় মেধাবী, অভিজ্ঞ ও বিখ্যাত। এই দলের কোন বিশেষ দুর্বলতা চোখে পড়ে না। আক্রমণভাগের নেতৃত্ব দেয়ার দায়িত্ব বিশ্বের সেরা তিন ফুটবলারের একজন পিএসজি ক্লাবের নেইমারের হলেও আক্রমণভাগে তিনি অত্যন্ত মেধাবী খেলোয়াড় কুটিনহো (বার্সিলোনা), জেসুস (ম্যানচেস্টার সিটি), ফিরমিনো (লিভারপুল) ও উইলিয়ান (চেলসি)-এর সহায়তা পাবেন। এই আক্রমণভাগের রয়েছে স্কিল ও গতি এবং তাঁরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে গোল করা ও করানোতে সিদ্ধহস্ত।

ব্রাজিলের মধ্যমাঠে আছেন শারীরিক গঠনে সুঠাম ও শক্তিশালী কয়েকজন খেলোয়াড় এবং তাঁরা রক্ষণভাগ ও আক্রমণভাগকে সহায়তা করতে সমানভাবে পারদর্শী। তাদের রয়েছে রিয়েল মাদ্রিদের মধ্যমাঠের নিরাপত্তা দেয়াল খ্যাত ক্যাসেমিরো, বার্সিলোনার মধ্যমাঠের বক্স-টু-বক্স মিডফিল্ডার পাউলিনহো, এছাড়া আরো আছেন ফার্নান্দিনহো ও রেনাটো আগুস্টো, যাহা দুজনেই অনেক অভিজ্ঞ এবং নিজ নিজ ক্লাব ও জাতীয় দলে নির্ভরযোগ্য হিসেবে পরিচিত। ব্রাজিলের রক্ষণভাগের সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ সেনানী হলেন থিয়াগো সিলভা যার খেলায় আছে মেধা, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার সংমিশ্রণ। তাকে রক্ষণে সহায়তা করার জন্য আছেন ইন্টার মিলানের রক্ষণভাগের অভিজ্ঞ খেলোয়াড় মিরান্দা এবং পিএসজি ক্লাবের মেধাবী নবীন ডিফেন্ডার মারকিউনোস। এছাড়া লেফট ব্যাক হিসেবে খেলবেন রিয়েল মাদ্রিদের মার্সেলো, যিনি রক্ষণভাগ হতে উঠে আক্রমণে বিশ্বসেরাদের একজন। বিশ্বকাপের আগ মুহূর্তের ইনজুরিতে দানি আলভেস বাদ পড়ে যাওয়ায় রাইট ব্যাক-এ কে খেলবেন সেটা নিশ্চিত নয়, তবে ম্যানচেস্টার সিটির দানিলো অথবা করিন্থিয়ান্স-এর ফ্যাগনার রাইট ব্যাক হিসেবে রক্ষণভাগকে সহায়তা করবেন।

ব্রাজিলের দুর্বলতাঃ

ব্রাজিলের বর্তমান দলের মূল দুর্বলতা হল লেফট ব্যাক ও রাইট ব্যাক পজিশনে। এই পজিশনে খেলা মার্সেলো কিংবা দানিলো অত্যন্ত আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলেন এবং রক্ষণে খুব বেশী পটু নন। মাত্রাতিরিক্ত আক্রমণাত্মক হওয়ায় তাঁরা অনেক সময় বেশী উপরে উঠে যান এবং তাঁদের ফেলে আসা রক্ষণভাগের ফাঁক গলে, প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়রা বল নিয়ে আক্রমণে এগিয়ে যায় এবং তাঁদের ঠেকাতে সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার নিজের রক্ষণস্থল ত্যাগ করেন, যার ফলে রক্ষনভাগে বড় ধরণের ফাঁক তৈরী হয়। বড় বড় দলগুলো কখনো কখনো ব্রাজিলের রক্ষণভাগের এই দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে গোল করে বসে। ব্রাজিলের জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের গড় উচ্চতা হলো ৫.৯ ফিট, যা গড়পড়তা ইউরোপের দলগুলোর খেলোয়াড়দের গড় উচ্চতার তুলনায় কম (জার্মানীর খেলোয়াড়দের গড় উচ্চতা ৬.১ ফিট)। এ অবস্থায় সেট-পিস এর ক্ষেত্রে এরিয়াল ডুয়েলে ব্রাজিলের সামান্য দুর্বলতা রয়েছে। এছাড়া, ব্রাজিল দলের সেরা খেলোয়াড় নেইমার অনেক দিন চোটের কারণে মাঠের বাইরে থাকায় বিশ্বকাপের সময় তাঁর ফর্ম ও ফিটনেস কেমন থাকবে, সেটা নিয়ে সমর্থকগন অনেক চিন্তিত রয়েছেন কারণ নেইমারের ফর্ম বা ফিটনেস খারাপ হলে ব্রাজিলের বিশ্বকাপ জেতা অনেকটা দুরূহ হয়ে যাবে।

জার্মানী

বিশ্বকাপের ফুটবলের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন জার্মানী সত্যই একটি পরিপুর্ন দল। ফুটবলের সবচেয়ে বড় এই আসরে সব সময় ধাবাহিকভাবে সাফল্য অর্জন করে জার্মানী এই পর্যন্ত ৪ বার বিশ্বকাপ জয় করেছে এবং মোট ১৩ বার সেমি ফাইনাল খেলেছে। জার্মানীর বর্তমান দলটি মেধা ও অভিজ্ঞতায় পরিপূর্ণ এবং সেই সাথে অসামান্য শারীরিক সক্ষমতার অধিকারী জার্মানীর খেলোয়াড়রা নিঃস্বার্থভাবে একে অপরের জন্য খেলে এবং দলগত সাফল্যকে ব্যক্তিগত স্বার্থের উর্ধ্বে রাখে, সে কারণেই বিগত বিশ্বকাপগুলোতে বড় দলগুলোর সাথে জার্মানী ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করেছে। জার্মানীর খেলোয়াড়রা এতই মেধাবী যে, দ্বিতীয় সারির দল নিয়েও তাঁরা সম্প্রতি কনফেডারেশনস কাপে জয়লাভ করেছে। জার্মানী দল এই বিশ্বকাপের জন্য সবার চোখে ফেভারিট এবং তাঁদের পক্ষে পর পর দুইবার বিশ্বকাপ জয় করা অসম্ভব কিছু নয়।

জার্মানীর সামর্থ্যঃ

জার্মান ফুটবলাররা শারীরিক সক্ষমতায় অনেকের চেয়ে এগিয়ে এবং তাঁদের উচ্চতা, গতি ও স্টামিনা অনেক ভালো। জার্মানীর জাতীয় দলের বেশীরভাগ ফুটবলার জার্মানীর বুন্দেসলিগায় খেলেন বিধায় তাঁদের মধ্যে বোঝাপড়া খুবই ভালো এবং মূল একাদশের প্রতিটি পজিশনের জন্য তাঁদের বিশ্বমানের ব্যাকআপ খেলোয়াড় রয়েছে। জার্মান দল অত্যন্ত গোছালো ফুটবল খেলে এবং তাঁদের খেলায় মেধাবী কোচ জোয়াকিম লো এর নির্দেশনার সম্পূর্ণ প্রতিফলন দেখা যায়।

জার্মানীর গোলরক্ষণের দায়িত্বে আছেন বিশ্বসেরা গোলকিপার বায়ার্ন মিউনিখ এর ম্যানুয়াল ন্যয়ার এবং মেধাবী গোলকিপার বার্সিলোনার মার্ক আন্দ্রে-টার-স্টেগেন। সেন্ট্রাল রক্ষণভাগে আছেন বায়ার্ন মিউনিখ এর দুই বিশ্বসেরা ডিফেন্ডার জেরেমী বোয়াটেং এবং ম্যাট হ্যামেলস, যারা দুজনেই প্রায় ৬ ফিট ৪ ইঞ্চি উচ্চতার ও রক্ষণ কাজে সুনিপুণ। রক্ষণভাগের ডান পাশে খেলবেন বিশ্বসেরা নবীন খেলোয়াড় বায়ার্ন মিউনিখ এর যশোয়া কিমিচ। তিনি ইতোমধ্যে তাঁর নৈপুণ্য শৈলী দিয়ে পুরো বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন এবং ক্লাব ও কান্ট্রি লেজেন্ড ফিলিপ লাম-এর অভাব ঘুচিয়ে দিয়েছেন। রক্ষণভাগের বাম পাশে খেলার জন্য দলে জায়গা পেতে পারেন জোনাস হেক্টর, যিনি জার্মান কোচ এর নির্ভরযোগ্য সেনানী হিসেবে ২০১৫ হতে জাতীয় দলে খেলছেন। তবে, তাঁর পরিবর্তে চেলসির এন্টনিয়ো রুডিগারকেও মূল একাদশে সুযোগ দেয়া হতে পারে। এছাড়া, রক্ষণভাগে ব্যাকআপ হিসেবে আরো থাকবেন নবীন খেলোয়াড় সুলা, জিনটার এবং তাহ্‌ ।

মধ্যমাঠে গত বিশ্বকাপের মতই খেলবেন বিখ্যাত পাসমাস্টার রিয়েল মাদ্রিদের স্টার টনি ক্রুজ এবং জুভেন্টাসের মেধাবী বক্স-টু-বক্স মিডফিল্ডার স্যামি খেদিরা। তবে, মিডফিল্ডে অপরজন কে হবেন, তা ভাবনার বিষয় কোচ লো-এর। এখানে জায়গা করে নিতে পারেন ম্যানচেস্টার সিটির গুনডোগান বা পিএসজির মেধাবী উইঙ্গার ড্রেক্সলার। গত বিশ্বকাপের মতই আক্রমনভাগের বাম পাশে খেলবেন আর্সেনালের প্লেমেকার মেসুত ওজিল এবং ডান পাশে খেলবেন বায়ার্ন মিউনিখের বিখ্যাত ফরোয়ার্ড বিশ্বকাপের নায়ক টমাস মুলার।

বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ গোলদাতা মিরোস্লাভ ক্লোসা ইতোমধ্যে অবসর গ্রহণ করায় মূল আক্রমণের দায়িত্ব কার উপর ন্যস্ত হবে তাঁ বলা মুশকিল, কিন্তু সেন্ট্রাল ফরোয়ার্ড পজিশনে খেলার জন্য মারিয়ো গোমেজ এর অভিজ্ঞতার উপর কোচ ভরসা রাখতে পারেন। এছাড়া, জার্মানীর আক্রমণভাগে অবদান রাখার জন্য ওয়ার্ল্ড ক্লাস খেলোয়াড় ডর্টমুণ্ডের মার্কো রয়েস, ম্যানচেস্টার সিটির সানে, বায়ার্ন মিউনিখের সেবাস্টিয়ান রুডি এবং লিপজিগের টিমো ওয়ের্নার উৎসুক হয়ে রইবেন।

জার্মানীর দুর্বলতাঃ

দল হিসেবে জার্মানীর তেমন কোন বিশেষ দুর্বলতা নেই। তবে জার্মানীর প্রধান গোলরক্ষক ম্যানুয়াল ন্যয়ার গত সেপ্টেম্বর মাস হতে পায়ের পাতার ফ্র্যাকচারের কারণে মাঠের বাহিরে এবং তাঁর খেলায় ম্যাচ প্র্যাকটিসের অভাব পরিলক্ষিত হলে তা জার্মান দলের জন্য এটি বড় সমস্যা হয়ে দেখা দিবে। গত বিশ্বকাপে সাফল্যের পর জার্মানীর সাফল্যের অন্যতম কারিগর অভিজ্ঞ খেলোয়াড় ফিলিপ লাম, বাস্তিয়ান শোয়ানস্টাইগার এবং মিরোস্লাভ ক্লোসা অবসর গ্রহণ করেন। গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকজন নবীন মেধাবী খেলোয়াড় জাতীয় দলে খেলার যোগ্যতা অর্জন করলেও তাঁরা কেউ উল্লিখিত খেলোয়াড়গণের মত বড় আসরে লড়াই করার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন নন, যা বড় দলের সাথে খেলার সময় জার্মানীর দুর্বলতা হিসেবে দেখা দিতে পারে। জার্মানীর খেলায় কোন প্ল্যান-বি দেখা যায় না, সেকারণে এ্যটাকিং দলের সাথে ভালো খেললেও জমাট রক্ষণভাগ সম্পন্ন দল (যেমন ইতালি, ফ্রান্স, ইংল্যান্ড ইত্যাদি) এবং পজেশানভিত্তিক দল (যেমন স্পেন, আর্জেন্টিনা ইত্যাদি) এর সাথে খেলার সময় কখনো কখনো জার্মানীর খেলার ধরণের এই অনমনীয়তা দুর্বলতা হিসেবে প্রকাশ পায়।