আজ কী ছোবল দিবে সাকিবরা?

তিন ম্যাচের টি-২০ সিরিজ খেলতে এখন দেরাদুনে বাংলাদেশ দল। আজ সিরিজের প্রথম ম্যাচে মাঠে নেমেছে তারা। বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায় ম্যাচটি শুরু হবে। এর আগে হওয়া একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচে হেরেছে সাকিবরা। ৮ উইকেটে হেরেছে তারা। আজকের ম্যাচেও যেন টাইগারদের সেই হাল না হয়। তারা যেন আফগানদের ছোবল দিয়ে কোবরা ডান্স দিতে পারে- এই আশায়ই করছে বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা।

তিন ম্যাচের এই সিরিজে সাকিবদের একমাত্র আতঙ্ক আফগান লেগ স্পিনার রশিদ খান। বর্তমান সময়ের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর স্পিনার তিনি। মাঠে নামলে তিনি যে খালি হাতে ফিরেন না, এটা প্রায় সবারই জানা। সাকিব সেটা আরো ভালো করে জানেন। কারণ সদ্য সমাপ্ত আইপিএলে তার সতীর্থ ছিলেন রশিদ। সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে খেলেছেন তারা দু’জনই। এই জুটি এক সাথে প্রতিপক্ষ শিবিরে তাণ্ডব চালিয়েছেন। সেই সতীর্থই আজ বড় আতঙ্ক বাংলাদেশের জন্য। তার উপর প্রস্তুতি ম্যাচে হেরেছে বাংলাদেশ। কিছুটা চিন্তার ভাজ তো কপালে থাকবেই।

তবে গত মার্চে নিদাহাস টি-২০ সিরিজে নতুন এক বাংলাদেশেরই দেখা মিলেছিল। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২১৪ রান তাড়া করেও জয় ছিনিয়ে এনেছিল বাংলাদেশ। সেই আসরে ভারতের বিপক্ষে ফাইনালে হেরে ট্রফি জেতা হয়নি। তবে সিরিজজুড়ে আলোচনায় ছিল ‘বাংলাদেশী ব্র্যান্ড’।

নিদাহাস ট্রফির পর প্রায় আড়াই মাস বিরতি পড়েছিল টাইগারদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। আজ মাঠে ফিরছে টাইগরারা। ইনজুরির কারণে নিদাহাস ট্রফিতে শুধু ফাইনাল খেলেছিলেন সাকিব। সাকিব আইপিএলে কাটিয়ে এসেছেন দারুণ সময়। তাই একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচে হারলেও আজ অন্য বাংলাদেশকে দেখতে চাইবে সবাই।

দুই দলের সিরিজের আগে শনিবার সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন সাকিব। যেখানে নিদাহাস ট্রফির সেই ‘বাংলাদেশী ব্র্যান্ড’ প্রসঙ্গটা এলো। তবে টাইগার অধিনায়ক বলে দিলেন, ‘ব্র্যান্ড’ জাতীয় কিছু ভাবনাতে নেই তাদের। আমরা চাই ভালো ক্রিকেট খেলতে। ‘ব্র্যান্ড-ট্র্যান্ড তো জানি না, ভালো খেলে জিততে চাই এই চেষ্টা থাকবে। আমরা আমাদের সেরা খেলাটাই খেলতে চাই।’

টাইগার অধিনায়ক আরো বলেন, ‘সবাই যেন ভালো করে সে ধরনের প্রস্তুতি আমরা নিচ্ছি। একজন-দু’জন ভালো করলে আমরা জিতব না এটা আমরাও জানি। যেহেতু ১১ জন খেলবে, তাই ১১ জনের প্রস্তুতিটাই ভালো হওয়া লাগবে। সবাই যদি ভালো খেলতে পারি, নিদাহাস ট্রফিতে যেমন খেলেছি, তাহলে আমাদের বেশির ভাগ ম্যাচ জেতার সম্ভাবনা থাকবে।’

সিরিজের অনেক আগে থেকেই রশিদ খানকে নিয়ে চলছে আলোচনা। এ দিনও প্রশ্নটা হলো। সাকিবের উত্তর, ‘যদি র‌্যাঙ্কিং দেখেন তবে সে অবশ্যই বিশ্বেও সেরা বোলার। তার বর্তমান ফর্ম অবশ্যই আমাদের জন্য ভয়ের কারণ। একই সাথে তাদের অন্য বোলারদের কথাও বলতে হবে। দুই দলই সেরাটা দেবে এই ম্যাচে। আমরা আমাদের সেরাটা দিয়ে চেষ্টা করব ভালো খেলতে। ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং তিন বিভাগেই।’

বাংলাদেশ দল : সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ (সহ-অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, লিটন কুমার দাস, মুশফিকুর রহিম, সাব্বির রহমান, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, আরিফুল হক, মেহেদী হাসান মিরাজ, নাজমুল ইসলাম অপু, আবুল হাসান রাজু, আবু হায়দার রনি, রুবেল হোসেন ও আবু জায়েদ চৌধুরী রাহী।

আফগানিস্তান দল : আসগর স্টানিকজাই (অধিনায়ক), নজিব তারাকাই, উসমান গনি, মোহাম্মদ শাহজাদ, মুজিব-উর রহমান, নাজিবুল্লাহ জাদরান, সামিউল্লাহ শেনওয়ারি, শাফিকুল্লাহ, দারউইশ রসুলি, মোহাম্মদ নবী, রশিদ খান, গুলবাদিন নাইব, করিম জানাত, শারাফুদ্দিন আশরাফ, শাপুর জাদরান ও আফতাব আলম।

উল্লেখ্য, তিন ম্যাচের সিরিজের বাকি দুটি টি-২০ হবে ৫ ও ৭ জুন।

আরো পড়ুন : নিজেদেরে চাঙ্গা রাখতে সাকিবদের কাণ্ড

আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে তিন ম্যাচ টি-২০ সিরিজ খেলতে এখন ভারতের দেরাদুনে বাংলাদেশ দল। সিরিজ শুরুর আগে একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে নামে তারা। কিন্তু বৃষ্টির বাগড়ায় ড্রেসিংরুমে বসে থাকতে হয় তাদের। তখনই মজার কাণ্ড করে তারা। বৃষ্টিমুখর দিনে ড্রেসিং রুমেই গানের আসর বসায় সাকিবরা। সম্প্রতিক সময়ের জনপ্রিয় একটি গানে সুর মিলিয়েছেন প্রায় সবাই। আর তালে তালে নেচেছেনও।

চমৎকার এই ভিডিওটি সাকিব আল হাসানের ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা হয়েছে।

এই ভিডিওয় দেখা যাচ্ছে, দলের ক্রিকেটারদের প্রায় সবাই অংশ নিয়েছে এই সম্মিলিত গানে। সবাই যার যার আসনে বসে থাকলেও ব্যাট হাতে দাঁড়িয়ে থেকে সঙ্গীত পরিচালকের ভূমিকায় ছিলেন আবু হায়দার রনি। বাকিরা বসে বসে তাল মিলিয়েছেন। বিশেষ করে দলের তরুণ ক্রিকেটাররা অংশ নিয়েছেন এতে। সাথে ছিলেন সাকিব আল হাসানও।

গান গাওয়ার সময় খুবই উৎসাহীর ভূমিকায় আরিফুল ইসলাম এবং নাজমুল অপু। কোবরা ডান্সের এই আবিস্কারক তো ব্যাট নিয়ে তালে তালে নেচেছেনও।

আবু জায়েদ রাহীকেও তাল মেলাতে দেখা গেছে।

গানের তালে তালে কণ্ঠ মিলিয়েছেন আবুল হাসান রাজু, লিটন দাস, সৌম্য সরকার, মেহেদী হাসান মিরাজ, রুবেল হোসেন এবং মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। রুবেল হোসেনও তার নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে গানের ভিডিওটি শেয়ার করেছেন।

আরো পড়ুন : নিজেকে প্রস্তুত রাখছেন মুমিনুল

এখন আর ওয়ানডে কিংবা টি-২০ নিয়ে ভাবেন না। তকমাটা যে লেগে গেছে সাদা পোশাকের। মেনেও নিয়েছেন। হ্যাঁ, মুুমিনুলের কথাই বলা হচ্ছে। বাংলাদেশের টি-২০ দল যখন দেরাদুনে প্রস্তুতি নিচ্ছেন সিরিজ খেলার। তখন মুমিনুল অনুীশলনে ব্যস্ত মিরপুরে। সামনেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর। তাই মুমিনুল নিজেকে প্রস্তুত রাখছেন। যদিও বা টেস্টে ডাক পড়ে। তখন তো নিজেকে উপস্থাপন করতে হবে দেশের জন্য।

জাতীয় দলে একমাত্র টেস্টেই মুমিনুলের ঠিকানা। বাংলাদেশের আর সব শীর্ষ ক্রিকেটারের চেয়ে নিজেকে তৈরি রাখার চ্যালেঞ্জটাও অনেক কঠিন মুমিনুলের জন্য। গত জানুয়ারি ফেব্রুয়ারিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম টেস্টে করেছিলেন জোড়া সেঞ্চুরি। টেস্ট সিরিজ শেষে খেলেছেন ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ ও বিসিএলে। এখন ঘরোয়া ক্রিকেটও নেই যে নিজেকে জাহির করবেন। তাই বলে তো উইলোতে ধুলো জমতে দেয়া যাবে না। যে কারণে অনুশীলনে ঘাম ঝরাতে তার কখনওই আপত্তি নেই। গতকাল সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মুমিনুল বললেন, নিজেকে প্রস্তুত রাখছেন মনে রোমাঞ্চ নিয়ে। ‘রোমাঞ্চিত অবশ্যই। ভালো খেলার তাগিদ আছে। দলের জন্য কিছু করার তাগিদ আছে।’

নিজের বিশ্বাসের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বললেন, ‘প্রতিটি ম্যাচে চেষ্টা করি দলের জন্য অবদান রাখতে। সেটা ৫০ শতাংশ হোক বা ৭০ শতাংশ কিংবা ৮০ শতাংশ। চেষ্টা করি অবদানের হার বাড়ানোর। সে চেষ্টাই থাকবে।’ নিজের পাশাপাশি মুমিনুল আত্মবিশ্বাসী দল নিয়েও। ওয়েস্ট ইন্ডিজে টেস্ট সিরিজে এগিয়ে রাখছেন বাংলাদেশকেই। ‘টেস্টে আমার কাছে মনে হয় আমরা একটু এগিয়ে আছি। আমাদের যারা আছেন, পাঁচ-ছয়জন সিনিয়র আছেন, অনেক দিন থেকে খেলছেন। অনেক ভালো পারফরম করছেন। ওদের তুলনায় আমরা অনেক ভালো।’

সেই বিকেএসপিএর দিনগুলো থেকেই মুমিনুলের ব্যাটিং নিয়ে কাজ করছেন মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের টেকনিক্যাল দিক থেকে শুরু করে মনস্তাত্ত্বিকসহ সব দিকই জানেন খুব ভালো করে। বরাবরের মতোই প্রস্তুতি পর্বে মুমিনুলের বড় ভরসা মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। দেশের অন্যতম সেরা এ কোচ মুমিনুলের ‘মেন্টর।’ এখনো যেকোনো ক্রিকেটীয় প্রয়োজনে মুমিনুল সবার আগে ছোটেন তার কাছে। জাতীয় দলে স্থায়ী ব্যাটিং কোচ নেই বেশ কিছু দিন থেকে।

তবে সালাউদ্দিন আছেন বলেই নিশ্চিন্ত মুমিনুল, ‘আপনারা তো জানেন, আমার কোনো সমস্যা হলে আমি সালাউদ্দিন স্যারের কাছে যাই। উনি সমাধান করে দেন। উনি আমাকে ছোটবেলা থেকে দেখছেন, ছোটখাটো সমস্যা দেখলেই বুঝতে পারেন। সুতরাং ব্যাটিং কোচ থাকল কি থাকল না সেটিতে আমার তেমন কোনো সমস্যা হয় না।’