বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কারাবাস দীর্ঘায়িত হওয়ায় ফের উদ্বেগ জানিয়েছে জাতিসংঘ।
শুক্রবার (১ জুন) জাতিসংঘ সদর দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে কারাগারে খালেদা জিয়ার প্রতি অমানবিক আচরণ প্রসঙ্গে এক প্রতিক্রিয়ায় জাতিসংঘের অবস্থান তুলে ধরেন মহাসচিবের ডেপুটি মুখপাত্র ফারহান হক।
শুক্রবার সদর দপ্তরে প্রশ্নোত্তর পর্বের শুরুতেই বাংলাদেশী এক সাংবাদিক খালেদা জিয়ার কারাবাস দীর্ঘায়িত হওয়ার প্রসঙ্গ সামনে এনে জাতিসংঘের অবস্থান জানতে চান।
বাংলাদেশী ওই সাংবাদিক বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে অমানবিক অবস্থায় আটক রয়েছেন। কারাগারে যেখানে রাখা হয়েছে সেখানে প্রায়ই বিদ্যুৎ থাকে না। তাকে যে খাবার দেয়া হয় তাও অত্যন্ত নিম্নমানের। যদিও তিনি বিতর্কিত এ মামলাটিতে জামিন পেয়েছিলেন কিন্তু সরকার তাকে মুক্তি দেয়নি। এ বিষয়ে ফারহান হকের বক্তব্য জানতে চান তিনি।
খালেদা জিয়ার ব্যাপারে জাতিসংঘ আগের অবস্থানে রয়েছে জানিয়ে ফারহান হক বলেন, ‘এ বিষয়টিতে আমরা ইতঃমধ্যে আমাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছি। মামলার প্রক্রিয়া নিয়ে অতীতে যে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছি তার বাইরে নতুন কোনো তথ্য আমার কাছে নেই।
আরো পড়ুন…
নেত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী বর্তমানে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলছে: নজরুল
আমাদের নেত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী বর্তমানে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলছে। আবার আন্দোলনের ধরনের পরিবর্তনে নেত্রীর নির্দেশ এলে তাতেও আমরা প্রস্তুত’ বলে মন্তব্য বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ঢাকাস্থ সেনবাগ জাতীয়তাবাদী ফোরামের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভা, ইফতার ও দোয়া মাহফিলে এসব কথা বলেন নজরুল ইসলাম খান।
তিনি বলেন, আমি নিশ্চিত, যেসব নেতাকর্মী আজ আন্দোলন সংগ্রাম করতে গিয়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তিনি আজ সেই সব নেতাদের জন্য চোখের পানি ফেলছেন।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, আজ এমন এক সময়ে আমরা ইফতার করছি যেখানে আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া কারাগারে আবদ্ধ। তিনি রোজা রাখেন। আমরা তো একসঙ্গে অনেক লোক ইফতার করছি। কিন্তু খালেদা জিয়া এই মুহূর্তে কী করছেন? এত বড় একটা কারাগার সেখানে তিনি মাত্র একা বন্দি। তিনি কারাগারে প্রকোষ্ঠে ইফতারের জন্য অপেক্ষা করছেন। ইফতারের আগে ফেলা তাঁর এই চোখের পানি এই সরকারের জন্য দোজখের সৃষ্টি করবে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির এই নীতিনির্ধারক।
বিএনপির এই নেতা বলেন, সরকার খালেদা জিয়ার প্রতি যে আচরণ করছে সে আচরণ মানুষের আচরণ না। অমানুষের আচরণ। দেশের সর্বোচ্চ আদালত থেকে তিনি জামিন পেয়েছেন, যে মামলায় আদালত তাঁকে সাজা দিয়েছেন। কিন্তু সরকার নানা কৌশলে ৭৩ বছর বয়সী এই বয়স্ক মহিলাকে কারাগারে আবদ্ধ করে রেখেছে। এই দিন তো শেষ দিন না। যেসব দৃষ্টান্ত এই সরকার তৈরি করছে এসব দৃষ্টান্তের সব প্রয়োগ করার প্রয়োজন হবে না, যোগ করেন নজরুল।
নজরুল বলেন, নেত্রী বলেছেন, আমরা প্রতিহিংসা রাজনীতি করব না। অবশ্যই করব না। নেত্রীর নির্দেশ আছে। কিন্তু সরকার মানবিক অপরাধ যেভাবে অমানবিকভাবে করছে এর বিচার আল্লাহই করবেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আমরা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছি দাবি করে নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই। আমরা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। আমাদের কোনো যুক্তির বিরুদ্ধে তারা কোনো যুক্তি দিতে চায় না। তারা খালি বলে সংবিধানে যেটা লেখা আছে সেটা। দুনিয়ার কোথাও নাই সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন হবে। কিন্তু এই সরকার সেই আইন করেছে। মানুষ এগুলো শুনে হাসে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সেনবাগ জাতীয়তাবাদী ফোরামের সভাপতি ইউনুস পাটোয়ারী বাচ্চু। সেখানে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদীন ফারুক, সাবেক সাংসদ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, সেনবাগ উপজেলা বিএনপির সভাপতি তামান্না ফারুক থীমা, জিনাফের সভাপতি লায়ন মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন।