সত্য মাইতির জন্ম থেকেই অন্ধ৷ পরিবারে চরম অভাব অনটন৷ দিনমজুর বাবা জিতেন মাইতি অনেক কষ্ট করে ছেলের পড়াশোনার খরচ চালিয়েছেন৷ বর্তমানে ভারতের নাড়াজোল রাজ কলেজ থেকে ৫৪ শতাংশ নম্বর নিয়ে বাংলা অনার্সে উর্ত্তীণ হয়েছেন সত্য। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতকোত্তর করতে চান তিনি৷ কিন্তু প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে আর্থিক অনটন৷ বিষয়টি জানতে পেরে জন্মান্ধ এই যুবকের পাশে দাঁড়িয়েছেন ঘাটালের সাংসদ-অভিনেতা দেব।
দেবের প্রতিনিধি অলোক আচার্য জানান, জন্মান্ধ হয়েও সত্য যেভাবে কঠিন বাস্তবের সঙ্গে লড়াই করে সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে তাতে ওকে স্যালুট জানাতেই হয়৷ টাকার অভাবে এমন একজন মেধাবীর পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাবে তা মেনে নেয়া যায় না৷ তাই বিষয়টি জানতে পারার পরই আমরা ওর পড়াশোনাসহ যাবতীয় দায়ভার গ্রহণ করেছি৷’
সত্য জানান, ‘অভাবের তাড়নায় অনেকের কাছেই ছুটে গিয়েছি৷ কিন্তু খুব একটা সাহায্য পাইনি৷ বরং বহু ক্ষেত্রে আমি অন্ধ বলে আমাকে তাচ্ছিল্য করা হয়েছে৷ শুনেছিলাম, অলোকবাবু কাউকে খালি হাতে ফেরান না৷ তাই নিজেই ফ্লোডিং স্টিক নিয়ে বাসে করে কেশপুর থেকে রাধামোহনপুরে অলোকবাবুর বাড়িতে চলে যায়৷ উনি আমরা জীবন বৃত্তান্ত শোনার পর আর্থিক সাহায্য করেছেন এবং আগামীদিনে আমার পড়াশোনা সহ যাবতীয় দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন৷’
টেলিফোনে সাংসদ দীপক অধিকারী ওরফে দেবও বলেন, ‘অলোকবাবু সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছেন৷ প্রত্যেক জনপ্রতিনিধির উচিৎ এভাবে মানুষের পাশে দাঁড়ানো৷’
পশ্চিম মেদিনীপুরের ধলহারা গ্রাম পঞ্চায়েতের নরসিংহপুরে বাড়ি সত্যর৷ তার বাবা জিতেনবাবুর মাত্র ৮ কাঠা জমি রয়েছে। সংসার টানতে নিজের জমিতে চাষের পাশাপাশি দিনমজুরিও করেন তিনি৷ সত্যর মা অলোকাদেবী গৃহবধূ৷ সত্য বলেন, ‘আমি জন্মানোর পর চিকিৎসক থেকে শুরু করে মা, বাবা প্রথমে বুঝতে পারেননি যে আমার দৃষ্টিশক্তি নেই৷ বেশ কিছুদিন পর তারা বুঝতে পারেন আমি জন্মান্ধ৷’