কলকাতায় পায়েল রায় (৩২) নামে এক গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এসময় লাশের পাশে একটি সুইসাইড নোটও পাওয়া গেছে।
পায়েলের পরিবারের দাবি ভাসুরের অশালীন আচরণের চেষ্টা ও স্বামী নির্যাতন চালিয়ে তাকে হত্যা করেছে। বৃহস্পতিবার রাতে ওই নারীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত পায়েল নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু রোডের বাসিন্দা। খবর আনন্দবাজারের।
পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে গৃহবধূ নির্যাতন (৪৯৮) এবং আত্মহত্যায় প্ররোচণার (৩০৬) ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে মৃতার স্বামী ও ভাসুরকে।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই রাতে পায়েলকে গুরুতর অবস্থায় বিজয়গড় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পরে পায়েলের মায়ের অভিযোগ, জানালে পুলিশ রাতেই মৃতার স্বামী মৃগাঙ্ক রায়কে আটক করে।
পরে শুক্রবার সকালে তাকে ও তার ভাই মৃদুল রায়কে গ্রেফতার করে আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাদের ৮ জুন পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রেখেছেন। নিহতের পরিবার জানায়, ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে মৃগাঙ্কের সঙ্গে সম্বন্ধ করে বিয়ে হয় পায়েলের। সেই সময়ে মৃগাঙ্ক সল্টলেকের একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়াতেন। মৃগাঙ্কের পরিবার বলতে এক দাদা মৃদুল এবং মা রিনা রায়।
পায়েলের পরিবারের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই শ্বশুরবাড়ির অত্যাচার শুরু হয়। মানসিক অত্যাচারের পাশাপাশি শারীরিক অত্যাচারও চালানো হত পায়েলের ওপর। বছরখানেকের মধ্যে সম্পর্ক এমন জায়গায় পৌঁছায় যে, সে সময়ে বেশ কয়েকবার থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন পায়েল।
অভিযোগে আরও জানান যায়, পায়েলের অবিবাহিত ভাসুর তার সঙ্গে অশালীন আচরণের চেষ্টা করেছিলেন। নিজেকে বাঁচাতে গিয়ে পায়েল ভাসুরকে মারধর করেন।
ওই আবাসনের কেয়ারটেকার জানিয়েছেন, দুবছর হল রায় পরিবার দোতলার একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া এসেছে। কিন্তু মৃগাঙ্কের বিয়ের পর থেকেই ওই ফ্ল্যাটের ভিতরে চিৎকার- চেঁচামেচি হত। ঝগড়া, মারামারি এমন পর্যায়ে গিয়েছিল যে, আবাসনের অন্যদের অসুবিধা হত। পরে ফ্ল্যাটের মালিক সব জেনে রায় পরিবারকে বাড়ি ছাড়তেও বলেছিলেন।
তবে বৃহস্পতিবার রাতে কী হয়েছিল, তা তারা জানতে পারেননি। রাতে পায়েলকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময়ে তারা ঘটনাটি জানতে পারেন। কেয়ারটেকার বলেন, স্বামী মৃগাঙ্কে তাকে জানান, বৌদি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পরে পুলিশ এলে জানতে পারি, বৌদি আত্মহত্যা করেছেন!
পায়েলের শাশুড়ি রিনা রায়ের দাবি, ঘটনার সময়ে তিনি ছাড়া আর কেউ ছিলেন না। তিনিই পায়েলের ঘরে ঢুকে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে নামিয়ে আনেন এবং ছোট ছেলেকে খবর দেন। তবে খুনের অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেছেন। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের দেহের ময়না-তদন্তের পরেই মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে।